Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পাহাড়-সমতলে উষ্ণতার ডাক

রবিবার উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চে পাহাড়ের এক ঝাঁক নেতাকে সমতলের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বসিয়ে সেই শীতলতা কাটানোর চেষ্টা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৪০
Share: Save:

কয়েক মাস আগেও পাহাড়-সমতলের মধ্যে খানিকটা যেন অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। দার্জিলিং-শিলিগুড়ি-ডুয়ার্সের জনজীবনের মধ্যে থাকা দীর্ঘ দিনের সম্পর্কে কিছুটা যেন চিড় ধরেছিল। কিন্তু, রবিবার উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চে পাহাড়ের এক ঝাঁক নেতাকে সমতলের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বসিয়ে সেই শীতলতা কাটানোর চেষ্টা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক সময় বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপাদেরও মঞ্চে ডেকে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘পাহাড়ে শান্তি ফিরেছে। জিটিএ কাজ করছে। আমরা জিটিএ-কে সব রকম সাহায্য করছি। শান্তি থাকলেই পর্যটকে ভরে যাবে পাহাড়।’’ শুধু তাই নয়, অনুষ্ঠানের পরে পাহাড়ের নানা বোর্ডের চেয়ারম্যান, জিএনএলএফ প্রধান মন ঘিসিঙ্গ, পাহাড়ের ব্যবসায়ী মহলের প্রতিনিধি জে এডওয়ার্ডদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেছেন। জিটিএ-র কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান বিনয়ের সঙ্গেও একান্তে খানিক ক্ষণ কথা বলেছেন তিনি।

ওই মঞ্চেই রাজ্যের বিভিন্ন মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গিয়েছে পাহাড়ের নেতা ও উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানদের। খোলা মঞ্চে পাহাড়ের নেতা-জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমতলের নেতাদের সহাস্য আলিঙ্গন এবং মৃদু আলাপচারিতার দৃশ্য গুমোট পরিস্থিতিটাকে অনেকটা সহজ করতে সাহায্য করবে বলে মনে করেন এডওয়ার্ড-সহ অনেকেই। বিনয়-অনীতদেরও বক্তব্য, ‘‘নানা বিষয়ে মতের অমিল থাকতে পারে। তা বলে পাহাড়-সমতলের মধ্যে শত্রুতার পরিবেশ কখনও কাম্য নয়।’’

সাত মাস আগে জুনের গোড়ায় বিমল গুরুঙ্গের অনির্দিষ্টকালের বন্‌ধের ডাকেই পাহাড়ে আগুন জ্বলে ওঠে। সমতলেও এর প্রভাব পড়ে। পাহাড়-সমতলের মধ্যে সম্পর্কের ভিত কিছুটা নড়বড়ে হয়ে যায়। বিনয়-অনীতকে জিটিএ-র কেয়ারটেকার বোর্ডে বসানোর পরে মুখ্যমন্ত্রী সেই সম্পর্ক মেরামতিতে জোর দেন। পাহাড়ে জিটিএ-কে যে স্বাধীনভাবেই রাজ্য কাজ করতে দিতে চায়, সেই বার্তা দিতে প্রচুর টাকা বরাদ্দ করেন।

শিলিগুড়িতে একদা মোর্চা নেতাদের গাড়ি দেখলেই বিক্ষোভের হুমকি, হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। সেই শিলিগুড়িতেই মোর্চার আলোচনাপন্থী নেতা ও পাহাড়ের নানা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সরকারি মঞ্চে বসিয়ে সম্মান জ্ঞাপন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কমার্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান দেবব্রত মিত্র টিভিতে সে দৃশ্য দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়-সমতলের সম্পর্কের মধ্যে হালকা বরফ জমছিল। উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চ দেখে মনে হল, তা ধীরে ধীরে গলছে। এটা দুই এলাকার জনজীবনের পক্ষেই ভাল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee North Bengal GTA leaders Minister
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE