বার্তা: দার্জিলিঙে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
বুধবার বার্তা দিলেন, ‘কাঞ্চনজঙ্ঘাকে হাসতে দিন’। বললেন, ‘‘যা চাইছেন, তা-ই দেব। শুধু শান্তি বজায় রাখতে হবে।’’ এক দিন পরে পাহাড়ের বিভিন্ন দলের প্রতিনিধি, জিটিএ নেতৃত্ব এবং ১৫টি উন্নয়ন পর্ষদ বা বোর্ডকে নিয়ে বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী যেন কল্পতরু। মার্চে পাহাড়ে শিল্প সম্মেলন করার কথা ঘোষণা করলেন। একই সঙ্গে জানালেন, জিএলপি-র মধ্যে থেকে বাছাই করে সিভিক ভলান্টিয়ারে নিয়োগ করা হবে। এই সব ঘোষণায় পাহাড়ে কট্টরপন্থীদের প্রতি চোরাস্রোত কমবে কিনা, তা নিয়ে এর মধ্যেই আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
জিটিএ যখন গঠিত হয়, আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব দেওয়া হয়নি বিমল গুরুঙ্গদের। ফলে পুলিশ ছিল না তাঁদের হাতে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশবাহিনীর মতো করে গোর্খাল্যান্ড পার্সোনেল বা জিএলপি গঠন করেন গুরুঙ্গ। এটা মূলত তরুণদের বাহিনী। এ বারের আন্দোলন চলার সময়ে গুরুঙ্গ যখন লুকিয়ে পাহাড়-জঙ্গলে ঘুরছিলেন, তাঁর পাহারায় ছিল জিএলপি-দের একটি গোষ্ঠী। এখনও পাহাড়ে কট্টরপন্থীদের মধ্যে বেশির ভাগই জিএলপি-র সদস্য। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘জিএলপি-র মধ্যে থেকেও আমরা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করব। যাঁদের বিরুদ্ধে তেমন গুরুতর অভিযোগ নেই, তাঁদের বাছাই করে নিয়োগ হবে।’’
এক দিকে যেমন আগামী মাসে দার্জিলিঙে শিল্প সম্মেলন করার কথা বলে পাহাড়ে উন্নয়ন ও বিনিয়োগের ব্যবস্থা করতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী, অন্য দিকে তেমনই সিভিক ভলান্টিয়ারে নিয়োগের মাধ্যমে জিএলপি-তেও ভাঙন ধরাতে চাইলেন তিনি। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে যদি জিএলপি-র তরুণরা সিভিক ভলান্টিয়ার হতে শুরু করেন, তা হলে গুরুঙ্গ ঘনিষ্ঠ কট্টরপন্থীদের শক্তি কমবে বলেই মনে করছেন পাহাড়বাসীদের একাংশ।
এর পাশাপাশি সব কিছু ভুলে শান্তি ফেরানোর ডাকও দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, ‘‘যা হয়ে গিয়েছে তা এখন অতীত। আসুন অতীত ভুলে সকলে মিলে শান্তি বজায় রেখে পাহাড়ের উন্নয়নে গতি আনতে সামিল হই।’’ যদিও এ বারের আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি পরিবারগুলি এই ডাকে কতটা সাড়া দেবে, তা স্পষ্ট নয়। কারণ, পুলিশের বিরুদ্ধে ক’দিন আগেও তাদের ভূরি ভূরি অভিযোগ ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর এ বারে সফরে তার কতটা মিটল, তা বুঝতে সময় লাগবে বলেই মনে করছে বিনয় তামাঙ্গের ঘনিষ্ঠমহল।
পাছে পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায়, তাই কট্টরপন্থীরাও এখন আন্দোলনে গতি বাড়ানোর বার্তা দিয়েছেন। গুরুঙ্গের শিবিরের পক্ষে গোর্খাল্যান্ড সংযুক্ত সংঘর্ষ সমিতি জানিয়েছে, আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে তারা শান্তিপূর্ণ রিলে রেস শুরু করবে। পাহাড় পরিক্রমার পরে সেই দৌড়ের প্রতিনিধিরা দিল্লিতে গিয়ে ১১ মার্চ ব্যাটন তুলে দেবেন সমিতির দিল্লির নেতাদের হাতে। সূত্রের খবর, সেখানে হাজির থাকতে পারেন বিমল গুরুঙ্গও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy