Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ডেঙ্গিতে ফের মৃত্যু

শহরের বিভিন্ন নার্সিংহোমে কোথাও ৩০ জন, কোথাও ২০ জন জ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন। এঁদের অনেকেরই ডেঙ্গির উপসর্গ রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। প্রতিদিনই ডেঙ্গি সন্দেহে নতুন রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমগুলোতে।

হাল: শহরে ডেঙ্গি ভয়াল আকার নিলেও জঞ্জাল জমছেই। শুক্রবার শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

হাল: শহরে ডেঙ্গি ভয়াল আকার নিলেও জঞ্জাল জমছেই। শুক্রবার শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৪
Share: Save:

ফের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হল শিলিগুড়িতে। শুক্রবার সেবক রোডের একটি নার্সিংহোমে তাঁর মৃত্যু হয়। নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর নাম কানাইলাল নন্দী (৭৫)। বাড়ি ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের চিলড্রেন পার্ক এলাকায়। ওই ওয়ার্ডেই বাড়ি পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের।

এ পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে শিলিগুড়িতে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ছ’জনই পুর এলাকার বাসিন্দা। অপর জন মাটিগাড়ার ফাঁসিদেওয়া মোড়ের। ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। এ দিন পর্যন্ত ৩১৫ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য। বেসরকারি হিসেবে সংখ্যাটা এক হাজারেরও বেশি বলে দাবি। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে জ্বরের রোগীদের ভিড় বাড়ছেই। পরিস্থিতি সামাল দিতে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ৮ জন নার্স এবং দু’জন ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ানকে আনা হয়েছে।

শহরের বিভিন্ন নার্সিংহোমে কোথাও ৩০ জন, কোথাও ২০ জন জ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন। এঁদের অনেকেরই ডেঙ্গির উপসর্গ রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। প্রতিদিনই ডেঙ্গি সন্দেহে নতুন রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমগুলোতে। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষ বা ক্ষমতাসীন বাম কাউন্সিলররা তার খোঁজ করছেন না বলে অভিযোগ।

কানাইবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। সেই সঙ্গে স্মৃতি বিভ্রম হতে থাকলে তাঁকে নার্সিংহোমে ভর্তি করান পরিবারের লোকরা। তখনও প্লেটলেট দেড় লক্ষের উপরে ছিল। দুই দিন পর থেকেই প্লেটলেট আচমকা দ্রুত কমতে থাকে। প্লেটলেট ৬ হাজারে নেমে গেলে তাঁকে ১৫ ইউনিট প্লেটলেট দিতে হয়। তার পরেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, ম্যাক এলাইজা পরীক্ষায় তাঁর শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে।

নার্সিংহোমের চিকিৎসক সৌম্য ঘোষ বলেন, ‘‘ওই রোগী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ছিলেন। সেই সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই শ্বাসকষ্টের অসুখে ভুগছিলেন। সে কারণে পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে।’’

শহরের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে এ দিন পুরসভায় দিনভর অবস্থান বিক্ষোভ করেন বিরোধীরা। বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার, কৃষ্ণ পাল, নান্টু পাল-সহ দলে অন্যান্য কাউন্সিলর এবং নেতারা অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হন। অভিযোগ, শহরে বিভিন্ন জায়গায় জল জমে রয়েছে। তা পরিষ্কার হচ্ছে না। হাসমিচক লাগোয়া একটি নির্মীয়মাণ বহুতলে জমে থাকা জল মশার আঁতুর ঘরে পরিণত হয়েছে। অথচ পুর কর্তৃপক্ষের হেলদোল নেই। মেয়রের কার্টুন এঁকে ডেঙ্গির জন্য তাঁকে দায়ী করে কৃষ্ণবাবু, রঞ্জনবাবুরা বলেন, ‘‘মেয়র অপদার্থ। ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় নিয়ে তিনি পদত্যাগ করুন।’’

এ দিন মেয়র অবশ্য শহরে ছিলেন না। বিধানসভার শিল্প বিষয়ক কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে তিনি বৃহস্পতিবারই কলকাতায় গিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Dengue শিলিগুড়ি Garbage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE