সিটের নীচে নেংটি ইঁদুরের দাপাদাপি। উপরে জানলার ফাঁক দিয়ে ঢুকছে কনকনে ঠান্ডা হওয়া। সারা রাত ঠকঠক করে কাঁপতে কাঁপতে গৌড় এক্সপ্রেসে জেগে কাটালেন ক্যানিংয়ের জয়ন্ত বিশ্বাস।
পেশায় ব্যবসায়ী জয়ন্তবাবুর গন্তব্য ছিল বালুরঘাট। শনিবার শিয়ালদহ থেকে গৌড় এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন। এস থ্রি কামরার ২৬ নম্বর সিট ছিল। আর এক ব্যবসায়ী বাংলাদেশের বাসিন্দা মাহবুর রহমান ও তাঁর এক আত্মীয়র ওই কামরাতেই ৩৭ ও ৪১ নম্বর আসনে ছিলেন। তাঁরাও পাশের জানালা টেনে নীচ অবধি লাগানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। নীচে অল্প ফাঁক থেকেই যায়। শেষে খবরের কাগজ দিয়ে জানালার ফাঁক বন্ধ করার শেষ চেষ্টা করেন। লাভ হয়নি। গৌড় এক্সপ্রেসের অধিকাংশ কামরার জানলাগুলো প্রায় অকেজো। দোসর হিসাবে আতঙ্ক নিয়ে হাজির নেংটি ইঁদুরের দল।
সারা রাতের দুর্ভোগের পর রবিবার সকালে মালদহ স্টেশনে নেমেও গৌড়ের যাত্রীরা নিস্তার পাননি। ঝাড়খন্ড দিশম পার্টির বন্ধ ও অবরোধের জেরে মালদহ স্টেশনের পর আর গৌড় লিঙ্ক বালুরঘাটে যায়নি। বিভিন্ন জায়গায় অবরোধের জেরে স্টেশনের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ভাড়ার ছোট গাড়িও যেতে চায়নি। দুপুর আড়াইটে নাগাদ সড়ক অবরোধ উঠলে এনবিএসটিসির বাসে চেপে বহু গৌড়ের যাত্রীকে বালুরঘাট ফিরতে হয়।
ওই ট্রেনে কলকাতা থেকে স্ত্রী ও শিশুকন্যাকে নিয়ে বালুরঘাটে ফিরছিলেন শহরের সুভাষ কর্নার এলাকার বাসিন্দা শুভ্র রায়।
তাঁর কথায়, শিয়ালদহ থেকে রাত সোয়া ১০টায় ট্রেন ছাড়ার কিছু ক্ষণের মধ্যে কামরার ভিতর শুরু হলো নেংটির দাপাদাপি। তাঁর কথায়, ‘‘সিটের নীচে ব্যাগ জুতো রেখেছিলাম। সেগুলো কেটে না দেয় সেই ভয়ও ছিল। কিন্তু কী আর করব। তারপরে ঘুমোতে যাবো, জানলার ফাঁক দিয়ে বরফের মতো ঠান্ডা হাওয়া বিঁধতে শুরু করল।’’ টুপি মোজা জ্যাকেট পরেও শীতকে কাবু করতে পারেননি। সারারাত খুব কষ্ট পেয়েছে তাঁদের বাচ্চা মেয়েও।
ট্রেনের টিটিই কামারাগুলোর বেহাল দশা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের ডিআরএম চন্দ্রপ্রকাশ গুপ্তকে ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে রেলের এক অফিসার জানিয়েছেন, গৌড় এক্সপ্রেস ট্রেনটির জানলা ও আসন মেরামতির জন্য অনেক আগেই সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। উপর থেকে এখনও কোনও সাড়া মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy