ছ’বছর পর হারিয়ে যাওয়া মাকে ফিরে পেল ছেলে। কোচবিহারের সাহেবগঞ্জ থানার পুলিশের উদ্যোগে বুধবার ওই মহিলাকে ছেলের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
চল্লিশোর্ধ্ব সরলা দে সরকারের বাড়ি জলপাইগুড়ির বেলাকোবা এলাকায়। বুধবার সাহেবগঞ্জ থানার নটকোবাড়ি চৌপথি এলাকায় ওই মহিলাকে একা ঘোরাঘুরি করতে দেখেন বাসিন্দারা। বিষয়টি জানতে পেরে তাঁকে উদ্ধারের উদ্যোগ নেন সাহেবগঞ্জ থানার ওসি দীপোজ্জ্বল ভৌমিক।
পুলিশ জানিয়েছে, রাতেই মহিলাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এক আত্মীয়ের নাম বললেও পুরো পরিচয় বা ঠিকানা ঠিকভাবে বলতে পারছিলেন না। পুলিশ কর্মীরা অবশ্য হাল না ছেড়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যায়। শেষপর্যন্ত বেলাকোবা এলাকায় তাঁর বাড়ি বলে জানাতে পারেন ওই মহিলা। ওই তথ্যের ভিত্তিতেই জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। ওই মহিলার দেওয়া বিবরণের সঙ্গে মিল থাকায় পুলিশ ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন মহিলার পরিবারের লোকেরা।
বৃহস্পতিবার সরলাদেবীর পরিবারের লোকজন সাহেবগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করেন। তাঁদের পরিচয় খতিয়ে দেখে ছেলের হাতে মহিলাকে তুলে দেওয়া হয়। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলনাথ পান্ডে বলেন, “মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যেটুকু তথ্য পাওয়া গিয়েছিল সে সব খতিয়ে দেখে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরেই পরিজনদের হাতে তাঁকে তুলে দেওয়া হয়।”
মহিলার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বামী পরিত্যক্তা সরলাদেবী ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকতেন। মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। মাঝেমধ্যেই আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যেতেন। এক দেড়মাস বাদে ফিরেও আসতেন। ছেলে মনোজ যখন নবম শ্রেণির পড়ুয়া সে সময় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি। মনোজ বলেন, “আমি এখন স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়ছি। এতগুলি বছর বাদে মাকে পেয়ে দারুণ লাগছে। এমন একটা দিন সত্যিই জীবনে আসবে ভাবিনি।” মহিলার দাদা শরৎ দাস বলেন, “আমরা তো ভেবেছিলাম বোন আর বেঁচেই নেই। অনেক খোঁজ করে হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। এ ভাবে ওকে পেয়ে খুব আনন্দ হচ্ছে।”
কিন্তু কেন এ ভাবে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন? কেমন লাগছে পরিজনদের পেয়ে? সব প্রশ্নেই নির্লিপ্ত সরলা দেবী। শরৎবাবু বলেন, ‘‘বোন মানসিক অবসাদের শিকার। ঠিকভাবে তাই কথা বলার অবস্থায় নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy