Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মেয়েদের সঙ্গে নাচে মায়েরাও

লাঠি খেলা, ব্রতচারীর পাশাপাশি নাচের তালে তালে শাড়ি কখনও হয়ে যাচ্ছে ময়ূর, কখনও প্রজাপতি। তবে স্কুল চত্বরে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় মেয়েদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যোগ দিয়েছেন মায়েরাও।

নৃত্যসঙ্গী: কর্মশালায় মা-মেয়েরা পা মেলালেন নাচের তালে। নিজস্ব চিত্র

নৃত্যসঙ্গী: কর্মশালায় মা-মেয়েরা পা মেলালেন নাচের তালে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৭ ০২:১৩
Share: Save:

লাঠি খেলা, ব্রতচারীর পাশাপাশি নাচের তালে তালে শাড়ি কখনও হয়ে যাচ্ছে ময়ূর, কখনও প্রজাপতি। তবে স্কুল চত্বরে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় মেয়েদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যোগ দিয়েছেন মায়েরাও। তাঁদের মিলিত উদ্যোগে দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের চেঁচাই প্রাথমিক স্কুল প্রাঙ্গণে চলছে শারীর শিক্ষার এক বিরাট পাঠশালা।

গত পাঁচ দিন ধরে ওই স্কুলে পড়ুয়া-অভিভাবিকাদের এক ছাতার তলায় নিয়ে এসে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের সারা বাংলা শিশু সংস্থা। ৮ জনের ওই প্রশিক্ষণ দলে জাতীয় জিমন্যাস্টিক এবং ক্যারাটে চাম্পিয়ান উজ্জ্বল মণ্ডল এবং নারুগোপাল কামিল্লাও রয়েছেন। তাদের হাত ধরে খুদে পড়ুয়াও গানের তালে নেচে উঠছে শারীরশিক্ষায়, যোগব্যায়াম ও জিমন্যাস্টিকে। আজ, রবিবার প্রশিক্ষণের শেষ দিনে বিশেষ অনুষ্ঠানও হবে।

সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা, সকলের ‘মামা’ বলে পরিচিত মহম্মদ মুসা হক জানান, তাঁদের সংস্থা সরকার স্বীকৃত। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে ডাক পেয়ে স্কুলে গিয়ে শিবির করেন তাঁরা। নিখরচায় শারীরশিক্ষা ও সমাজসংস্কৃতিমূলক সচেতনতায় পড়ুয়া ও অভিভাবকদের শিক্ষিত করে তুলতে দীর্ঘ দিন ধরে তাঁরা কাজ করছেন।

স্কুল এবং ক্লাবগুলিতে নিয়মিত ব্রতচারী, স্কাউটগাইডের প্রশিক্ষণের চর্চা বর্তমানে লুপ্তপ্রায়। কিন্তু এই শিশু সংস্থার মাধ্যমে হাতেকলমে তালিমের সুযোগের খবর পেয়ে বসে থাকেননি শিশুমিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত তপন পূর্বচক্রের চেঁচাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পবিত্র মোহান্ত। তিনি বলেন, ‘‘দ্বিধা কাটিয়ে প্রশিক্ষণে পড়ুয়াদের সঙ্গে মায়েরাও সামিল হয়েছেন। ফলে বোঝাই যাচ্ছে আদিবাসী অধ্যুষিত এই এলাকায় ইতিমধ্যেই ব্যাপক সাড়া মিলেছে।’’

চেঁচাই-সহ পাশের ভবানীপুর, মণিপুর প্রাথমিক স্কুলের শতাধিক খুদে পড়ুয়ার সঙ্গে তাল মেলাতে দ্রুত সংসার সামলে রোজ বিকেল ৩টেয় স্কুল প্রাঙ্গণে উপস্থিত হচ্ছেন মায়েরা। ললিতা বান্ডো, কালিদাসী ওঁরাও, তিলি টিগ্গারা তাঁদের দশম শ্রেণির পড়ুয়া মেয়ে লতিকা, সুদীপা, পূর্ণিমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ব্রতচারী শিখছেন। মেয়েদের হাত ধরে নাচের তালে শাড়ি দিয়ে কখনও তাঁরা তৈরি করে ফেলছেন প্রজাপ্রতি। পর ক্ষণেই ময়ূরের মতো পেখম মেলে বা অশোকস্তম্ভ তৈরি করে উচ্ছ্বসিত কালীদাসী, পুষ্পদেবীরা। বললেন, ‘‘প্রথমে লজ্জা-সঙ্কোচ হচ্ছিল। পবিত্র মাস্টারের উদ্যোগে সব কেটে যায়।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE