মিলেমিশে: মায়েদের উৎসাহে গমগম করছে স্কুল। নিজস্ব চিত্র
সাগরি মণ্ডল, আশা সিংহ, সুমিত্রা মণ্ডলরা পুরাতন মালদহের কাদিরপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের ছেলেমেয়েরা সকলেই কাদিরপুর কিরণময়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়া। স্কুলে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া কেমন চলছে, তাঁরা ঠিকঠাক পড়ছে কি না বা স্কুলে কোনও সমস্যা রয়েছে কি না তা জানতে কস্মিনকালেও মায়েরা হাজির হন না স্কুলে। দিন আনি দিন খাই পরিবারের ছেলেমেয়েরা নিজেরাই বাড়ি থেকে স্কুলে আসে, আবার লেখাপড়া করে বাড়ি ফিরে যায়। এমনটাই চলছিল। তবে বুধবার একেবারে উল্টো ছবি ধরা পড়ল সেই স্কুলে। যে মায়েরা কোনও দিনই স্কুলমুখী হন না তাঁদের ভিড়েই এ দিন একেবারে গমগম করছে গোটা স্কুল।
কিন্তু কারণটা কী?
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে অভিভাবকেরা এ বার নিজেরা বসে আলোচনা করে পরিকল্পনা তৈরি করবেন। যে অনুয়ায়ী পরবর্তী কালে কাজ হবে। এ জন্য অভিভাবকেরা স্কুলে এসে গত কয়েক বছরে স্কুল বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকে কত টাকা পেয়েছে, সেই টাকায় কী কী কাজ হয়েছে তা দেখবে। সমস্ত দিক বিবেচনা করে তৈরি করা পরিকল্পনা তাঁরা জমা দেবেন প্রধান শিক্ষককে। প্রধান শিক্ষক তা পাঠাবেন সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পের জেলা দফতরে। মিশন ও ইউনিসেফ তা নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।
মিশনের জেলা পরিকল্পনা সংযোজক অঞ্জন মিশ্র বলেন, ‘‘জেলায় চলতি বছরে এমন ৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবকেরা এই প্রকল্পে স্কুলের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিজেরাই রচনা করবে। স্থানীয় মানুষ ও অভিভাবকদের যোগদানের মাধ্যমে সেই উন্নয়ন পরিকল্পনা রচনা হওয়ায় সেই কাজ যখন হবে তখন তাঁদের একটা দায়বদ্ধতাও বর্তাবে। এটা স্কুলের সার্বিক শিক্ষার মানোন্নয়ন সহায়ক হবে।’’ কাদিরপুর কিরণময়ী প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক তনয় মিশ্র বলেন, ‘‘আমরা অভিভাবক সভা ডেকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। যে অভিভাবকেরা বিশেষ করে মায়েরা যাঁরা কোনও দিন স্কুলে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ব্যাপারে খোঁজ নিতে আসেন না তাঁরাও যে এ দিন এ ভাবে স্বতস্ফূর্ত ভাবে স্কুলে এসে উন্নয়ন পরিকল্পনা রচনা করবেন তা ভাবতেই পারিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy