Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

নাবালিকার মৃত্যুতে রহস্য

মৃত ওই নাবালিকার নাম সাবিনা বেগম (১৪)৷ সে পূর্ব মল্লিকপাড়া হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল৷ সাকোয়াঝোরা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঙ্কুরবাজার এলাকার রহিদুল ইসলাম নামের এক যুবক তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিত বলে অভিযোগ।

বিষ খেয়ে আত্মহত্যা নাবালিকার৷—প্রতীকী চিত্র।

বিষ খেয়ে আত্মহত্যা নাবালিকার৷—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৭ ০২:২৭
Share: Save:

দু’দিন আগেই চোদ্দো বছরের এক নাবালিকার বিয়ের চেষ্টা রুখে দিয়েছিল প্রশাসন৷ তার ঠিক এক দিনের মধ্যেই সেই নাবালিকার মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। ধূপগুড়ির সাকোয়াঝোরা-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ গোঁসাইয়েরহাটের বাসিন্দা ছিল ওই নাবালিকা৷ প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে ওই নাবালিকা৷ কিন্তু তার মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।

মৃত ওই নাবালিকার নাম সাবিনা বেগম (১৪)৷ সে পূর্ব মল্লিকপাড়া হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল৷ সাকোয়াঝোরা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঙ্কুরবাজার এলাকার রহিদুল ইসলাম নামের এক যুবক তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিত বলে অভিযোগ। শনিবার সন্ধ্যায় সাবিনার সঙ্গে বিয়ের আয়োজন হয়েছিল রহিদুলের। খবর পেয়ে সিডিপিও-র নির্দেশে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিরা সেখানে ছুটে যান৷ তাঁরা বুঝিয়ে বলায় সাবিনাকে দক্ষিণ গোঁসাইহাটের বাড়িতে দিয়ে আসেন রহিদুলের পরিবার৷ রবিবার সকালে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয় সাবিনা।

ধূপগুড়ির সিডিপিও সন্দীপ দে বলেন, ‘‘ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক৷ শনিবার রাতে স্থানীয় বাসিন্দারা সাকোয়াঝোরাতে নাবালিকার বিয়ের চেষ্টা হচ্ছে বলে খবর দিয়েছিলেন৷ সেই অনুযায়ী, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিদের ওই বাড়িতে পাঠিয়েছিলাম৷ তারা গিয়ে বোঝানোয় ছেলের বাড়ির লোকেরাই ওই রাতে মেয়েকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়৷ তারপরও যে কেন মেয়েটি বিষ খেলো সেটাই বুঝতে পারছি না৷’’

যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিরা ছেলের বাড়িতে গিয়েছিলেন তার কর্মী আব্দুল লতিফ বলেন, ‘‘মেয়েটি গৃহশিক্ষকের কাছে যাওয়ার নাম করে রহিদুলের সঙ্গে তার বাড়িতে চলে গিয়েছিল৷ বাড়ির লোক রহিদুলের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে দিয়ে দেবে বলে ঠিকও করে ফেলেছিল৷’’ তাঁরা গিয়ে জানতে পারেন, মেয়েটির বয়স ১৪ বছর৷ ছেলের বয়েসও ২১-এর নীচে৷ তাই তাদের বোঝানো হয়।

পুলিশের একাংশের ধারণা, ফিরে আসার পর সাবিনার বাড়ির লোকেরা হয়তো তাকে বকাঝকা করেছেন৷ সে জন্যই সে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে৷ যদিও এমনটা মানতে চাননি তার বাড়ির লোকেরা৷ তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, রহিদুল সব সময় সাবিনাকে উত্যক্ত করতো৷ শনিবার রহিদুল জোর করে সাবিনাকে তার বাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়েছিল৷ রাতে বাড়ি আসার পর সোমবার ফের উত্যক্ত করে৷ তাই সে অপমানে আত্মহত্যা করে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে রহিদুলের পরিবার।

জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত চলছে৷ নাবালিকার বিয়ের চেষ্টার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE