উদাসীন: গরম পড়তেই ডেঙ্গির আশঙ্কা উত্তরে। তবুও ইংরেজবাজারের বেহাল নিকাশি নিয়ে হেলদোল নেই প্রশাসনের। নিজস্ব চিত্র
ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক স্কুল ছাত্রের। অজানা জ্বর, ডেঙ্গি থাবা বসিয়েছিল প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই। তার পরেও নিকাশি নালা, জঞ্জাল সাফাইয়ের ছবি বদলায়নি মালদহের ইংরেজবাজার শহরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে। অভিযোগ, ওয়ার্ডের একাংশে এখনও নিকাশি নালা কাঁচা রয়েছে। নোংরা আবর্জনা, কচুরিপানায় মজে গিয়েছে পুকুরগুলোও। ফলে নর্দমা দিয়ে গড়ায় না জল। আর সেই নিকাশি নালার জল মশার আঁতুর ঘর হয়ে উঠেছে বলে দাবি ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের।
বাসিন্দাদের দাবি, মশার উপদ্রবে সন্ধের পরেই জানলা-দরজা বন্ধ করে বসে থাকতে হচ্ছে। ফলে গরম পড়তেই ফের ডেঙ্গির আতঙ্কে কাঁপছেন ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। যদিও এ বারে ডেঙ্গি মোকাবিলায় শুরু থেকেই তাঁরা তৎপর বলে দাবি ইংরেজবাজার পুরসভার পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষের। তিনি বলেন, ‘‘নিয়মিত প্রতিটি ওয়ার্ডে সমীক্ষা করা হচ্ছে। এ ছাড়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতন করার কাজ চলছে।’’ শুধু তাই নয়, নিয়মিত মশা মারার কীটনাশক তেল স্প্রে, কামান দাগা, ব্লিচিং ছড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রেল লাইনের ধারে রয়েছে ইংরেজবাজার পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ড। ওই ওয়ার্ডে পাঁচ হাজার ভোটার রয়েছে। আর হাজার দশেক পরিবারের বসবাস ওয়ার্ডটি। গত বছর ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছিল ইংরেজবাজার শহরে। শহর জুড়ে বহু রোগী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার মধ্যে অন্যতম ছিল ২৪ নম্বর ওয়ার্ড। এলাকার এক স্কুল ছাত্র ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। এলাকার প্রায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিল। ঘরে ঘরে ছিল অজানা জ্বরের রোগী। সেই সময় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য পুরসভার তরফ থেকে নিয়ম করে মশা মারার কীটনাশক স্প্রে করা হত। এ ছাড়া কামান দাগা, ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হতো। এলাকার নিকাশি নালা, জঞ্জাল সাফাইও নিয়মিত ছিল।
তবে এখন সেই তৎপরতা উধাও হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। ওই এলাকায় রয়েছে একটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র। সেই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মাত্র দশ মিটার দূরেই ঘনবসতি। সেখানে গিয়ে দেখা গেল নিকাশি নালার বেহাল চিত্র। পাকাই হয়নি নিকাশি। সেই সঙ্গে আবর্জনা জমে নালা সঙ্কীর্ণ হয়ে গিয়েছে। ফলে এলাকার নিকাশি দিয়ে নোংরা জল গড়ায় না বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা বলেন, ‘‘বাড়ির সামনে নিকাশি নালা রয়েছে। তবে জল গড়ায় না। শুখা মরসুমেই নিকাশির জল উপচে গেটের সামনে চলে আসে।’’ জল জমে থেকে মশা উপদ্রব বাড়ছে বলে জানান তিনি। আর এক মহিলা বলেন, ‘‘সন্ধের পরে ঘরের মধ্যে মশা মারার কয়েল ব্যবহার করতে হয়। তা না হলে মশার কামড় খেয়ে মরতে হবে।’’ সিপিএম নেতা মনোরঞ্জন সিকদার বলেন, ‘‘পুরসভা ন্যূনতম পরিষেবা দিতে ব্যর্থ। তাই ডেঙ্গির ভয়ে কাঁপছেন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy