আরাম: বারান্দায় বিশ্রাম নিচ্ছে বাঁদরটি। নিজস্ব চিত্র
শহরের উত্তর কলেজপাড়া এলাকার একটি বাড়ির বারান্দায় আয়েশ করে ঘুমোচ্ছে একটি বাঁদর। মঙ্গলবার তা দেখেই পিলে চমকে উঠেছিল পড়শিদের। কিন্তু হেলদোল নেই বাড়ির মালিক অলোকা সরকারের।
এ দিন অলোকাদেবীর ঠাকুরঘর থেকে কলা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে তাঁরই বারান্দায় বসেছিল বাঁদরটি। প্রথমটা বেশ হকচকিয়ে গেলেও পরে সাহস করে সেটিকে খেতেও দেন তিনি। তাঁর দেওয়া মুড়ি, লাড্ডু, কেক খেয়ে বারান্দায় একটি বালিশ পেয়ে কিছুক্ষণ আরামও করে বাঁদরটি। কিছুক্ষণ পরে পালিয়েও যায়। আপাত শান্ত বাঁদরটির বিরুদ্ধেই কিন্তু জমেছে অভিযোগের পাহাড়। রায়গঞ্জ শহরের বাসিন্দাদের দাবি, সপ্তাহখানেক ধরে শহরের নানা জায়গায় তাণ্ডব চালাচ্ছে বাঁদরটি।
কখনও ঠাকুরঘরে ঢুকে ফল নিয়ে ধাঁ। কখনও আবার রান্নাঘরে ঢুকে খুঁজছে রান্না করা খাবার। লণ্ডভণ্ড করছে বাসনপত্র। মাঝেমধ্যে শিশুদের দিকেও তেড়ে যেতে দেখা যাচ্ছে সেই বাঁদরটিকে।
অভিযোগ, রায়গঞ্জের উকিলপাড়া, মিলনপাড়া, মোহনবাটী, কলেজপাড়া, বীরনগর, দেবীনগর, কসবা, রাসবিহারী মার্কেট, দেবীনগর, হাইরোড সহ শহরের বিভিন্ন পাড়া দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সেটি। মাঝেমধ্যেই বাসিন্দাদের ছোঁড়া ইটের টুকরো, পাথরের আঘাতে বাঁদরটি জখম হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
গোটা ঘটনায় উদ্বিগ্ন শহরের বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংগঠন। বাসিন্দাদের হামলায় সেটির মৃত্যুর আশঙ্কাও করেছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই তাঁরা বন দফতরের কাছে বাঁদরটিকে আটক করে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। রায়গঞ্জের বিভাগীয় বনাধিকারিক দ্বিপর্ণ দত্তের দাবি, স্থানীয় স্তরে বাঁদর ধরার পরিকাঠামো তাঁদের নেই। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। গত জানুয়ারিতে রায়গঞ্জে চিতাবাঘের হামলায় ১২ জন জখম হন। সেটি কোথা থেকে শহরে এসেছিল, সেই রহস্যের এখনও কিনারা করতে পারেনি বন দফতর। বছর না ঘুরতেই ফের বাঁদরের তান্ডবে দিশেহারা দফতরের কর্তারা। এই ক্ষেত্রেও বাঁদরটি কোথা থেকে এসেছে, তা নিয়েও বন দফতরের কাছে কোনও ব্যাখ্যা নেই।
পশুপ্রেমী গৌতম তান্তিয়া ও ভীমনারায়ণ মিত্রের দাবি, ‘‘বাঁদরটিকে বাঁচাতে বন দফতরের উচিত অবিলম্বে সেটিকে ঘুমপাড়ানি ইঞ্জেকশন দিয়ে আটক করে ডুয়ার্সের কোনও জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy