প্রতীকী ছবি।
খোদ পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠল৷ জলপাইগুড়ির পুরতন পাণ্ডাপাড়া এলাকায় গত ৩০ নভেম্বর ঘটনাটি ঘটলেও কোতোয়ালি থানার পুলিশ অভিযোগ নেয়নি বলে অভিযোগ৷ তবে শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি মহিলা থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই গৃহবধূ৷ যদিও তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানতে চাননি অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিক৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকের নাম অসীম সাহা৷ জলপাইগুড়ি পুরাতন পান্ডাপাড়ার বাসিন্দা অসীমবাবু পুলিশের এএসআই পদে কর্মরত৷ বর্তমানে পুলিশ লাইনে রিজার্ভ ফোর্সে রয়েছেন তিনি৷ ২০০৮সালে মোহিত নগরের বাসিন্দা অনুরাধা সাহা মোহান্তর সঙ্গে তার বিয়ে হয়৷
অনুরাধাদেবীর অভিযোগ, বিয়ের প্রথম একবছর তিনি ভালই ছিলেন৷ কিন্তু তারপর থেকেই অসীমবাবু তাঁর সঙ্গে ঝগড়া শুরু করেন৷ কোনও কারণ ছাড়াই তাঁকে মারধরও করতেন৷
জানা গিয়েছে, অসীমবাবু ও অনুরাধাদেবীর নয় বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে৷ অনুরাধাদেবীর অভিযোগ, ‘‘মেয়ের দিকে তাকিয়েই আমি স্বামীর সব অত্যাচার সহ্য করে আসছিলাম৷ কিন্তু গত ৩০নভেম্বর দুপুরে আমার স্বামী ফের ঝগরা শুরু করে৷ আমায় মারধোর করার পাশাপাশি কাচের গ্লাসও ছুড়ে মারে৷ তারপরই পুড়িয়ে মারতে আমার গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে দেন৷’’
অনুরাধাদেবী পুলিশকে জানিয়েছেন, গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে স্বামী পাশের ঘর থেকে দেশলাই আনতে যেতেই তিনি কোনও মতে বাড়ি থেকে দোড়ে পালিয়ে টোটো ধরে কোতোয়ালি থানায় চলে যান৷ কিন্তু অনুরাধাদেবীর অভিযোগ, তার পেছন পেছন সেখানেও অসীমবাবু পৌঁছে যান এবং গালিগালাজ করতে থাকেন৷ প্রায় তিন ঘন্টা বসিয়ে রাখলেও কোতোয়ালি থানা তাঁর থেকে অভিযোগ নেয়নি বলেও নালিশ করেন তিনি৷
ইতিমধ্যেই অনুরাধাদেবীর বাবার বাড়ির লোকেরাও থানায় চলে গিয়েছিলেন৷ তারপর বাবার সঙ্গে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি৷ গত মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে ছুটি পান তিনি৷ তারপর বৃহস্পতিবার ফের জলপাইগুড়ি মহিলা থানায় যান স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে৷ তবে এ দিন অবশ্য পুলিশ তার অভিযোগ নিয়েছে৷
অনুরাধাদেবীর বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী অনন্তকুমার মোহন্ত বলেন, ৩০ নভেম্বর ঘটনার দিন রাতের বেলায় তাঁদের বাড়িতে গিয়ে অসীমবাবু হুমকি দিয়ে আসেন৷ যদিও অসীমবাবু তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানতে চাননি৷ তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার দিন দুপুরে কোনও কারণ ছাড়াই স্ত্রী মেজাজ দেখাচ্ছিল৷ তখন আমিও মেজাজ হারিয়ে তাকে একটা চড় মারি৷ এরপর আমার স্ত্রী নিজেই গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে থানায় চলে যায়৷ তাকে বা তার পরিবারকে হুমকি দেওয়ারও কোন প্রশ্ন ওঠে না৷’’
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, অভিযুক্তর বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে৷ এবং তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তাকে গ্রেফতারও করা হবে৷ পুলিশ সুপার জানান, কোতোয়ালি থানায় কেন অভিযোগ নেওয়া হয়নি তাও খতিয়ে দেখা হবে৷
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy