মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
উত্তরবঙ্গের পরিকাঠামো এবং পরিষেবার উন্নয়নে সমন্বয় বজায় রাখতে বছর দেড়েক আগে কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কমিটির মধ্যেই মধ্যেই সমন্বয়ের অভাব প্রকাশ্যে এল বুধবার।
মাস চারেক পরে এ দিন সেই কমিটির বৈঠক ছিল উত্তরকন্যায়। সেই বৈঠকে গরহাজির থাকলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি ব্যস্ত থাকলেন কোচবিহার জেলায় বেশ কিছু প্রকল্পের শিলান্যাস এবং উদ্বোধন অনুষ্ঠানে। কমিটির বৈঠক হল অথচ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী সরকারি অন্য কাজে ব্যস্ত থাকলেন, তা হলে আর কমিটিতে সমন্বয় থাকল কোথায় প্রশ্ন তুলেছেন সদস্যদের কয়েকজনই। তা ছাড়া, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর ছাড়া উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন নিয়ে সমন্বয় বৈঠকে আলোচনায় আদৌ কতটা লাভ হল সে প্রশ্নও উঠল। যদিও সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান তথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অন্য কাজে আটকে পড়ায় আসতে পারেননি। আমরা তাঁর সঙ্গে পরে আলোচনা করে নেব।’’
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবিবাবুর যুক্তি, ‘‘আমার দফতরের বেশ কিছু প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠান ছিল। তা ছাড়া কিছুদিন আগে আমার এক আত্মীয় বিয়োগ হয়েছে, তা নিয়েও ব্যস্ত আছি। যেতে না পারার কথা সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক গৌতমবাবুকে (দেব) গতকাল জানিয়ে দিয়েছিলাম।’’ সূত্রের খবর এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত থাকতে গত ৮ ডিসেম্বর চিঠি পাঠিয়ে সব সদস্যদের জানানো হয়েছিল। তারপর হাতে থাকা পাঁচ দিনে অনায়াসে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের অনুষ্ঠান অথবা কমিটির বৈঠক দুইয়ের সময়ই রদবদল করা যেত। তা না হওয়াতেই কমিটির সমন্বয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রবিবাবুর অনুগামীদের অভিযোগ, বৈঠকের দিন স্থির করার আগে কোনও আলোচনা হয়নি। মন্ত্রী-বিধায়ক মিলিয়ে সমন্বয় কমিটিতে রয়েছেন দশ জন। গৌতমবাবু ছাড়াও বনমন্ত্রী বিনয় বর্মন, আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী জেমস কুজুর, এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী, এনবিএসটিসির চেয়ারম্যান মিহির গোস্বামী, আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোহন শর্মা-রা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের শেষে সৌরভবাবু এবং মোহন শর্মাকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন গৌতমবাবু। তিনি বলেন, ‘‘এ দিন সপ্তম বৈঠক হয়েছে। এতগুলি বৈঠকে কি আলোচনা হল, কে কী প্রস্তাব দিলেন, বললেন সব বিস্তারিত রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীকে দেব।’’ কমিটির অন্দরের খবর, এ দিনের বৈঠকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ’কে জানানো হবে বলেও স্থির হয়েছে। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গ সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান পর্যটন মন্ত্রী। অতীতে বৈঠকে এমন বেশ কিছু প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছিল যাতে রবিবাবুর সায় ছিল না। কিন্তু কমিটিতে পাশ হওয়ায় তা মেনে নিয়ে হয়েছিল। তেমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতেই রবিবাবু সরে থাকলেন বলে মনে করছেন অনেকে। যদিও রবিবাবুর মন্তব্য, ‘‘এ সব জল্পনা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy