উদ্দাম: এ ভাবেই ডিজে বক্স বাজিয়ে চলে নাচ। নিজস্ব চিত্র
কোথাও বরযাত্রীদের শোভাযাত্রা, আবার কোথাও বৌভাতের আসর। এমনকী, কুমোরটুলি থেকে বাড়ির পুজোর প্রতিমা আনা ও প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রাতেও। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার জেরে গত প্রায় দুমাস ধরে রায়গঞ্জ শহরের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ভবন-সহ নানা এলাকায় বিয়ের অনুষ্ঠান ও পুজোকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যেই নিষিদ্ধ ডিজে বক্সের লাগামহীন ব্যবহার শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ডিজে বক্সের বিকট বুক-কাঁপানো আওয়াজে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা।
তাঁদের অভিযোগ, ডিজে বক্স ছাড়াও বিয়ে ও পুজোকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন শোভাযাত্রায় নিষিদ্ধ শব্দবাজির কারবারও শুরু হয়েছে। প্রতিবছর দুর্গাপুজো ও দীপাবলি উৎসবের সময়ে পুলিশ শহরে ডিজে বক্স ও নিষিদ্ধ শব্দবাজির কারবার ও ব্যবহার রুখতে অভিযান চালানো হয় বলে পুলিশ জানায়। তার জেরে উৎসবের মরসুমে ডিজে বক্স ও নিষিদ্ধ শব্দবাজির কারবার ও ব্যবহার অনেকটাই কমে। কিন্তু উৎসবের মরসুম পেরিয়ে যাওয়ার পর বছরের বাকি সময়গুলিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডিজে বক্সের ব্যবহার চরমে ওঠে। রায়গঞ্জ থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাসের দাবি, ‘‘পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে সেগুলির কারবার ও ব্যবহার চলছে। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যাঁরা ডিজে বক্স ও নিষিদ্ধ শব্দবাজি ব্যবহার করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড়, সুদর্শনপুর, নেতাজি সুভাষ রোড, সুপার মার্কেট, দেহশ্রী মোড়, বিধাননগর, মোহনবাটি, বিবিডি মোড়, মহাত্মা গাঁধী রোড, কলেজপাড়া, দেবীনগর, বন্দর, স্কুলরোড, গোয়ালপাড়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২৫টি অনুষ্ঠান ভবন রয়েছে। তার মধ্যে তিনটি অনুষ্ঠান ভবন রায়গঞ্জ পুরসভার অধীনে। বিয়ের মরসুমে প্রতিটি অনুষ্ঠান ভবনে কোথাও বিয়ের আবার কোথাও বৌভাতের আসর বসে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় দু’মাস ধরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় এইসব অনুষ্ঠান ভবনমুখী শোভাযাত্রায় বরযাত্রীরা প্রকাশ্যেই ডিজে বক্স বাজিয়ে উদ্দাম নাচে মাতছেন।
একই ছবি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ভবনের বৌভাতের আসরগুলিতেও। ভবন ছাড়াও শহরের বিভিন্ন পাড়ায় বাসিন্দাদের বাড়িতেও বিয়ে ও বৌভাতের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ডিজে বক্সের দাপটে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। বিয়ে ছাড়াও বাড়ির পুজোর জন্য কুমোরটুলি থেকে প্রতিমা আনা বা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় শহরের রাস্তার উপরে ও বিভিন্ন পাড়ায় ডিজে বক্সের সঙ্গে সমানতালে পাল্লা দিচ্ছে নিষিদ্ধ শব্দবাজির ব্যবহারও।
রায়গঞ্জ পুরসভার স্বাস্থ্য পরিদর্শক সুদেব দাস বলেন, ‘‘ডিজে বক্সের বিকট ও বুক কাঁপানো শব্দে বহু বাসিন্দা অস্বস্তি ও অসুস্থ বোধ করেন। নিষিদ্ধ শব্দবাজির আগুনে যেকোনও সময়ে শহরে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শব্দদূষণ রুখতে অবিলম্বে ডিজে ও শব্দবাজির কারবার ও ব্যবহার পুলিশের অভিযানে নামা উচিত। প্রয়োজনে পুরসভা পুলিশকে সহযোগিতা করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy