প্রতীকী ছবি।
খেলার জন্য ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল পাঁচ বছরের একটি শিশুকন্যাকে। অভিযোগ, তার পরে তাকে ধর্ষণ করা হয়। তাই নিয়ে এখন তোলপাড় নেপাল সীমান্তবর্তী গৌরসিংহ জোত এলাকা।
এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছেলেটিও নাবালক। বয়সে কিশোর সেই ছেলেটি ও তার বাবা-মা এখন এলাকাছাড়া। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, অভিযুক্ত পরিবারটি শিশুর পরিবারের থেকে কিছুটা বিত্তশালী। বড় পাকা বাড়ি রয়েছে। ছেলেটি মোবাইল নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। ঘটনার পরে তারা শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের কাছেও সাহায্যের জন্য যান। গ্রামবাসীরা একজোট থাকায় কোনও নেতাই অবশ্য তাঁদের পাশে দাঁড়াননি।
শিশুটির বাবা রিকশাচালক। স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের বাবা গাড়ি চালান। মা নেপালে সুপারির ব্যবসা করেন। এলাকার মানুষের অভিযোগ, ছেলেমেয়েদের দিকে বাবা-মায়ের কোনও নজর নেই। তাই তারা কেউ পড়াশোনাও করে না। উল্টো দিকে, শিশুটির বাবা বলেন, ‘‘কষ্ট করে হলেও মেয়েকে স্কুলে পাঠাই।’’
ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আগের দিনই মেয়ের প্রাইমারি স্কুলের পরীক্ষা শেষ হয়। সারাদিন খেলছিল। দুপুরে আমি কাজে ছিলাম। স্ত্রীও ঘরে ব্যস্ত। কিশোরের ছোট বোন আমার মেয়ের প্রায় সমবয়সী। সে প্রায়শই রান্নাবাটি খেলার জন্য ডাকে। মেয়ে বাড়ি থেকে বার হয়ে যায়। আমাদের তিনটি বাড়ি পরেই অভিযুক্তদের বাড়ি। এর পরে ছেলেটি কোনও ভাবে মেয়েকে ঘরে ঢুকিয়ে অপকর্মের চেষ্টা করে।’’ তাঁর স্ত্রী বলেন, ‘‘মেয়ে বাড়িতে এসে কান্নাকাটি করে সব বলে। ভগবানের দয়ায় মেয়ে বেঁচে গিয়েছে। ওরা আমাদের টাকা দিতে চেয়েছিল। কিশোরের মা সমস্ত নথিপত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। ছেলেটার শাস্তি চাই।’’
পুলিশ জানিয়েছে, গত ৬ এপ্রিল খড়িবাড়ির থানার সীমান্তের গৌরসিংহ জোতে বিকেলে ঘটনাটি ঘটে। সন্ধ্যায় অসুস্থ অবস্থায় প্রথমে নকশালবাড়ি হাসপাতাল পরে সেখান থেকে শিশুটিকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান হয়। ১২ এপ্রিল শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আপাতত সে বাড়িতে সুস্থ রয়েছে। গত মঙ্গলবার খড়িবাড়ি থানায় শিশুটির বাবা’র অভিযোগের পর নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মেয়ের চিকিৎসার জন্য অভিযোগ জানাতে দেরি হয়েছে বলে পরিবারটি জানিয়েছেন। অভিযুক্তদের পরিবার এলাকা ছাড়া। বাড়িতে তালা ঝুলছে। এ দিন সকালে এলাকায় উত্তেজনা ছড়াতেই পুলিশ এলাকায় যায়। দ্রুত বাসিন্দাদের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে শান্ত করেন অফিসারেরা।
দার্জিলিং জেলা পুলিশের ডিএসপি (গ্রামীণ) প্রবীর মণ্ডল বলেন, ‘‘পকসো ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।’’ স্থানীয় সমাজকর্মী সুফলা বর্মন জানান, ‘‘পুলিশকে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি। কোনও ভাবেই এলাকার পরিবেশ নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy