Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কন্যাকে হারাতে চান না ধর্ষণে নির্যাতিতা

পরিজনেরা কেউ না দেখায় নিজেই কোনও মতে শিশুকন্যাকে নিয়ে সংসার চালান ওই মহিলা৷

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৫
Share: Save:

ধর্ষণের পরে শিশুকন্যার জন্ম দিয়েছিলেন তরুণী। চার বছর সেই সন্তান ছিল তাঁর কাছেই। অভিযোগ, সেই শিশুকন্যাকেই অন্যের কাছে দিয়ে জোর করে তাঁকে বিয়ে দিতে চাইছেন গ্রামের কিছু বাসিন্দা৷ বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থও হয়েছেন রাজগঞ্জের শিকারপুরের ওই তরুণী৷ প্রশাসনের কর্তাদের নির্দেশে ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷

সোমবার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্তাদের সঙ্গে ওই তরুণী রাজগঞ্জ বিডিও অফিসে অভিযোগ জানাতে যান৷ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কাছেও তিনি অভিযোগ জানান৷ ওই সংগঠনের সম্পাদক অমিত সরকার বলেন, ‘‘পরিজনেরা কেউ না দেখায় নিজেই কোনও মতে শিশুকন্যাকে নিয়ে সংসার চালান ওই মহিলা৷ রবিবার রাতে শুনতে পাই, বিয়ের প্রলোভন দিয়ে কিছু লোক তাঁর শিশুকন্যাকে অন্যের কাছে দিয়ে দিতে চাইছে৷ তাই এ দিন ওঁনাকে নিয়ে প্রশাসনের কর্তাদের কাছে যাই৷’’

বিডিও অফিসে ওই মহিলা অভিযোগ করেছেন, ‘‘আমি শিশুকন্যাকে লালন-পালন করার অক্ষমতার কথা জানিয়েছিলাম৷ তখন সামাজিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আমার সন্তানকে অন্যের কাছে দিয়ে দেওয়া হবে৷’’ তাঁকে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হতে বাধ্য করার চেষ্টাও করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই তরুণী৷ স্বেচ্ছ্বাসেবী সংগঠনের দাবি, এলাকার কিছু বাসিন্দাই ওই তরুণীর উপরে চাপ সৃষ্টি করছেন। এ দিন বিডিও দফতরে ছিলেন না৷ জয়েন্ট বিডিও রাজমণি রায় বলেন, ‘‘অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর৷ আমরা রাজগঞ্জ থানাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি৷’’

আরও পড়ুন: ঘুরতে হল হাসপাতালে হাসপাতালে

প্রশাসনের কাছ থেকে লিখিত নির্দেশ পেয়ে গোটা ঘটনার খোঁজখবর শুরু করেছে রাজগঞ্জ থানার অধীনে থাকা বেলাকোবা ফাঁড়ি৷ সেখানকার এক পুলিশকর্তা জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালে ওই তরুণী ধর্ষণের শিকার হন৷ সেই মামলা এখনও বিচারাধীন৷

তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, মহিলাকে দেখাশোনার কেউ না থাকাতেই তাঁরা তাঁর বিয়ে দিতে চাইছিলেন৷ সন্তান-সহ কেউ বিয়ে করতে রাজি না হওয়াতেই কেউ কেউ সন্তানকে অন্য কারও কাছে দিতে প্রস্তাব দিয়েছিলেন৷ কোনওরকম চাপ দেওয়া হয়নি৷ রাজগঞ্জ থানার এক পুলিশকর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘এটা প্রাথমিক অনুসন্ধান৷ মহিলার অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত হচ্ছে৷’’

তবে রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ওহিদুর রহমানের আশ্বাস, ‘‘আমরা কোনও অবস্থাতেই ওই শিশুকে মায়ের কোল ছাড়া হতে দেব না৷ মহিলা যাতে নিজের বাড়িতে তাঁর সন্তানকে নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন সে জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তার চেষ্টা করছি৷ ধর্ষণে অভিযুক্তেরও শাস্তি দাবি করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE