Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বৃষ্টি-বরফে জাঁকিয়ে শীত উত্তরবঙ্গে

সিকিমের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘শীতের শুরুতেই পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঢুকেছে উত্তরের পাহাড়-সমতলে।

আমেজ: হেলমেটের খেয়াল না থাকলেও রাতভর বৃষ্টির পরে মাথা বাঁচাতে শীতপোশাক জড়াল শিলিগুড়ি। বুধবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

আমেজ: হেলমেটের খেয়াল না থাকলেও রাতভর বৃষ্টির পরে মাথা বাঁচাতে শীতপোশাক জড়াল শিলিগুড়ি। বুধবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪১
Share: Save:

পশ্চিমী ঝঞ্ঝা হাজির হওয়ায় জাঁকিয়ে শীত পড়ল উত্তরের পাহাড় ও সমতলে। সোমবার রাতে ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়েছে পাহাড়-সমতলের বিস্তীর্ণ এলাকায়। বরফের চাদর মুড়ি দিয়েছে সিকিমের ছাঙ্গু, নাথুলার রাস্তাঘাট, পাহাড়ও। দার্জিলিঙের তাপমাত্রাও নেমে গিয়েছে। মঙ্গলবার দার্জিলিং পাহাড়ের সর্বনিম্ন চাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশেই ঘোরাফেরা করেছে। শিলিগুড়িতেও তাপমাত্রার পারদ ভোরের দিকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যায়। কোচবিহার, মালদহ, রায়গঞ্জ, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারেও বেশ ঠান্ডা পড়েছে। অথচ, সোমবার অবধি উত্তরের সমতলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৩ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই ছিল।

আচমকা তাপমাত্রা কমায় জ্বর, সর্দি-কাশির প্রকোপ দেখা দিয়েছে সমতলে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাইরাল জ্বরের প্রকোপও শুরু হয়েছে। বৃষ্টির জল জমে থাকলে বাড়তে পারে ডেঙ্গির প্রকোপও। ঠান্ডা পড়ে গেলে ডেঙ্গির সংক্রমণ কমবে ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু হাসপাতাল সূত্রের খবর অনুযায়ী মঙ্গলবারও শিলিগুড়িতে ডেঙ্গির আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে এক জনের।

শীতকালীন আনাজের ফলনের উপরেও এই তাপমাত্রার প্রভাবের আশঙ্কা করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। সে জন্য জমিতে থাকা একাধিক ফলন নিয়ে কৃষকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ কৃষি মৌসম সেবা কেন্দ্রের কর্তারা। কোচবিহারের মুখ্য কৃষি আধিকারিক বুদ্ধদেব ধর বলেন, “সর্ব্বোচ্চ তাপমাত্রার তুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অনেকটাই কমেছে। তার উপরে আপেক্ষিক আর্দ্রতা বাড়লে রোগ পোকা সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যায়।’’ কৃষকদের সচেতনতা বাড়াতে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

সিকিমের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘শীতের শুরুতেই পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঢুকেছে উত্তরের পাহাড়-সমতলে। তার প্রভাবেই আকাশে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা তৈরি হয়েছে। তাই বৃষ্টি হচ্ছে। ছাঙ্গু সহ উঁচু এলাকাগুলিতে তুষারপাতও হচ্ছে।’’ তিনি জানিয়েছেন, উপগ্রহ চিত্র দেখে মনে হচ্ছে অন্তত শুক্রবার অবধি পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাব থাকবে।

বস্তুত, নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকেই ক্রমশ শীতের ইনিংস খাতা খুলতে শুরু করেছে। ঝঞ্ঝার প্রভাবে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার গড় ফারাক দাঁড়িয়েছে ১০ ডিগ্রি। ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবহাওয়ার যা পূর্বাভাস রয়েছে তাতেও ওই ফারাক বাড়তে পারে। জলপাইগুড়ি জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ২৭-২৮ ডিগ্রি। সর্বনিম্ন ১২-১৩ ডিগ্রি। আপেক্ষিক আর্দ্রতা যথাক্রমে ৫৬-৭৪ ও ২৮-৪৯ শতাংশ। বাতাসের বেগ থাকবে ঘণ্টায় ৩-৬ কিমি। উত্তর দিনাজপুরে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হতে পারে ২৬-২৭ ডিগ্রি ও ১৩-১৪ ডিগ্রি। বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা থাকবে ৬৫-৮৪ শতাংশ ও ২৭-৪০ শতাংশ। বাতাসের বেগ থাকবে ঘণ্টায় ৪-৭ কিমি। পূর্বাভাসে এই জেলাগুলিতে রবিবার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rainfall Snow Winter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE