বিয়ে হয়েছে বছর ছয়েক আগে। কিন্তু এখনও মা হতে পারেননি। দু-দু’বার মৃত সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। সেই শূন্যতাই জ্যোত্স্নারা বিবিকে শিশু চুরির ষড়যন্ত্রে সামিল হতে বাধ্য করেছিল কী না সেটাই এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ। জ্যোত্স্নারার হেফাজত থেকেই বৃহস্পতিবার রাতে উদ্ধার করা হয়েছে চাঁচলের মালতীপুর হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে উধাও হওয়া সদ্যোজাত শিশুকন্যাটিকে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মালতীপুর হাসপাতাল থেকে ওই সদ্যোজাত শিশু চুরির ঘটনা ঘটে। অপরিচিতা এক মহিলা আদর করার নাম করে শিশুটিকে তার মা মঞ্জুরা বিবির পাশ থেকে নিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছিল। তদন্তে নেমে রতুয়ার চড়কি এলাকায় শিশুটির হদিশ পায় পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, জ্যোত্স্নারা বিবি প্রথমে দাবি করেছিলেন, ওই কন্যাসন্তান তারই। প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার সময় পথেই ওই কন্যাসন্তানের জন্ম হয়েছিল। কিন্তু টানা জেরার পর শিশুটি যে তার নয় তা স্বীকার করেন তিনি। সন্তানের আকাঙ্খাতেই শিশুটিকে চুরি করেছিলেন বলেও জানান। এরপরেই শুক্রবার সকালে জ্যোত্স্নারা বিবিকে গ্রেফতার করা হয়।
তবে হাসপাতাল থেকে যে মহিলা শিশুটিকে নিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন, তিনি জ্যোত্স্নারা বিবি নন। ফলে দ্বিতীয় এক মহিলা ওই ঘটনায় জড়িত বলে নিশ্চিত পুলিশ। সন্তান না থাকায় জ্যোত্স্নারা শিশুটিকে চুরি করেছেন বলে দাবি করলেও দ্বিতীয় মহিলা কে বা ঘটনার পিছনে শিশু চুরির কোনও চক্র রয়েছে কি না তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। খোঁজ চলছে অভিযুক্ত ওই মহিলার।
চাঁচলের এসডিপিও অভিষেক মজুমদার বলেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে শিশু চুরির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কারা জড়িত দেখা হচ্ছে।
এ দিকে শিশুটিকে ফেরত পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে বাবা-মার। হামেদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মঞ্জুরা বিবি দুজনেই বলেন, ‘‘মেয়েকে ফিরে পেয়েছি। আমরা আর কিছু ভাবতে চাই না। তবে এমন আর যাতে কোনও বাবা-মায়ের সঙ্গে না হয় তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেখুক।’’ তবে সন্তানকে এখনও কাছে পাননি তারা।
রাতে চাঁচল মহকুমা হাসপাতালে রাখার পর এ দিন ওই শিশুটিকে শিশু কল্যাণ সমিতির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে সারা দিন ধরেই ওই শিশুর সঙ্গে রয়েছেন তার মা মঞ্জুরা বিবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy