উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপারের পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন মৈত্রেয়ী কর। তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
১৫০ আসনের অনুমোদনের জন্য পরিদর্শনে এসে আরও নানান সমস্যার সঙ্গে সুপারের অভিজ্ঞতা রয়েছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া। অভিযোগ, সেটাকেই তুরুপের তাস করে মৈত্রেয়ী দেবীকে সুপারের পদ থেকে সরানোর জন্য তৎপর হয়েছে একটি বিরুদ্ধ গোষ্ঠী। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একাংশ কলেজের প্রাক্তনীদের একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে তাঁকে নানাভাবে অপদস্থ করতে চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ। সবিস্তারে সে সব স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে জানিয়েছেন মৈত্রেয়ীদেবী।
তবে তাঁর ইস্তফাপত্র এখনও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার দফতরে পৌঁছোয়নি বলে জানানো হয়। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সুপারের কোনও ইস্তফাপত্র এখনও হাতে পাইনি। তা নিয়ে বলারও কিছু নেই।’’ তা ছাড়া এমসিআই-এর তরফেও সুপারের বিষয় নিয়ে তাঁকে কিছু বলা হয়নি বলে জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার দফতর থেকে জানানো হয়, এমসিআই পরিদর্শনের সময় নজরে আসা খামতি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে একটি রিপোর্ট দেয়। পরবর্তীতে ওই প্রতিনিধিরা এমসিআই-এর বৈঠকে তা পেশ করেন। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত তাঁরা কলেজ কর্তৃপক্ষকে ও স্বাস্থ্য শিক্ষা দফতরকে জানান। এখনও তেমন কিছু জানানো হয়নি বলে স্বাস্থ্য শিক্ষা দফতরের দাবি। তাই বিষয়টি নিয়ে তিনি কিছু জানেন না।
মৈত্রেয়ীদেবী বলেন, ‘‘যা জানানোর স্বাস্থ্য শিক্ষা দফতরে জানিয়েছি। এর বাইরে কিছু বলতে চাই না। যতদিন দায়িত্বে রাখা হবে ততদিন এই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উন্নয়নে কাজ করতে চাই।’’ স্বাস্থ্য দফতর চিঠি না পেলেও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ইস্তফার কথা জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন মৈত্রেয়ীদেবী। ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর সরকারি নির্দেশে তিনি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার হন। হাসপাতালের সুপারের পদে অনেকেই বসতে রাজি নন। নানা সমস্যার কারণে পূর্বতন সুপারদের একাংশ ওই পদ থেকে সরে যান বলে একাংশের দাবি। মৈত্রেয়ী দেবী আবেদন না করলেও এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য ভবন থেকে তাঁকে ওই পদে বসানো হয়। কিন্তু প্রশাসনিক কাজে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা বা কোনও বিভাগের প্রধান হিসাবে নির্দিষ্ট সময় কাজ করার অভিজ্ঞতা না থাকা নিয়ে এমসিআই প্রশ্ন রেখেছে। মৈত্রেয়ী দেবীর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, রাজ্যের অনেক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সুপারদেরই সেই অভিজ্ঞতা নেই। তা হলে তো সকলকেই সরানো উচিত।
ঘটনার সূত্রপাত উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের আয়োজন ঘিরে। আয়োজক কমিটির নানা অনিয়ম নজরে আসলে তা মেনে নিতে পারেননি অপর অংশ। তারা নানা ভাবে সে সবের বিরুদ্ধে সরব হন। বর্তমান সুপার তাদের দিকে বলেই তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি ছাত্রদের একাংশকে দিয়ে সুপারের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার কাছে অভিযোগ জানানো পর্যন্ত হয়। তাঁকে বদলি করার হুমকিও দেওয়া হয় একটি প্রভাবশালী অংশ থেকে। তা নিয়ে হেনস্থা হতে হওয়ায় সুপার ইস্তফা দিতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy