দেবজিৎ ও অনুপমের পাশে দাঁড়াতে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন অম্বিকেশ মহাপাত্র, হাইকোর্টের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও কবি মন্দাক্রান্তা সেন। পুলিশের বিরুদ্ধে ফেসবুকে সরব হওয়ায় গ্রেফতার করা হয়েছিল বালুরঘাটের যুবক দেবজিৎ রায় ও অনুপম তরফদারকে। এরই প্রতিবাদে মঙ্গলবার নাগরিক কনভেনশনের ডাক দিয়েছিলেন আইনজীবীদের একাংশ।
কিন্তু অম্বিকেশবাবুরা সেখানে পৌঁছতেই তৃণমূল সমর্থিত টোটো চালকদের একাংশের তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়েন তাঁরা। বালুরঘাট নাট্যমন্দির চত্বর ও সংলগ্ন তিনমাথার মোড়ে পুলিশের সামনেই তিন ঘণ্টা ধরে টোটোরিকশা দিয়ে রাস্তা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। বিক্ষোভকারীদের তুমুল বিক্ষোভের জেরে বিকাশরঞ্জনবাবুরা নির্ধারিত সময় বিকেল ৪টেয় মঞ্চে ঢুকতেই পারেননি। বাধ্য হয়ে বিকাশবাবুরা প্রকাশ্য রাস্তায় মাইক হাতে বক্তব্য রাখতে গেলে শুরু হয় ধুন্ধুমার। টোটো চালকদের সঙ্গে বালুরঘাট আইন কলেজের ছাত্রছাত্রীদের একাংশও অম্বিকেশবাবুদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেন। অভিযোগ, অম্বিকেশবাবুদের লক্ষ্য করে প্লাস্টিকের বোতল, জুতো ছোঁড়া হয়। পুলিশের উপস্থিতিতে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। ভাষণ দিতে গিয়ে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বাক স্বাধীনতা রোধের বিরুদ্ধে আমরা এখানে সভা করতে এসেছি। শাসকদল কিছু টোটো চালককে ভুল বুঝিয়ে সভা বানচাল করার চেষ্টা করতে এসেছে। ভয় দেখিয়ে কোনও লাভ হবে না।’’
তাঁরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ার পরে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি-র সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালান বিরোধী নেতারা। শেষ পর্যন্ত ডি়জি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থের সঙ্গে কথা বলেন বিরোধী নেতা আব্দুল মান্নান। তৃণমূলের লোকজনই যে এমন কাণ্ড ঘটাচ্ছে, ডিজি-কে সেই অভিযোগ জানান তিনি। জেলার পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয় বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর। পুলিশ সুপার আশ্বাস দেন, বিকাশবাবুরা যাতে নিরাপদে থাকেন, তা দেখা হবে। সুজনবাবু আর্জি জানান, শুধু নিরাপত্তা নয়, তাঁদের সভা করতে দেওয়া হোক।
পুজোর সময় বালুরঘাট শহরের রাস্তায় টানা ১২ ঘন্টা ধরে বাইক ও ছোটগাড়ি চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল জেলা পুলিশ। এর বিরুদ্ধে ফেসবুকে সরব হন অনেকেই। তারই জেরে ব্যবসায়ী দেবজিত ও ব্যাঙ্ককর্মী অনুপমকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে তারা জামিন ছাড়া পান। তাদের পাশে দাঁড়াতে আসায় এ দিন সভা করেন অম্বিকেশবাবুরা। ওই মারমুখি অবস্থানের জেরে সাধারণ একটি কনভেনশনকে রাজ্যজুড়ে বড়মাত্রা পাইয়ে দেওয়ায় এখন তৃণমূলের অন্দরেও জোর চর্চা শুরু হয়েছে। সভা শেষে তৃণমূলের টাউন কার্যকরী সভাপতি দেবাশিস মজুমদার, উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে তাঁদের দুই কর্মীর মাথা ফাটানোর পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy