Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মাছ, কচ্ছপ পর্যটক টানে পুখরিতে

বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জয়ন্তী রেঞ্জের অধীনে এই পাহাড়ি এলাকা। নানা বন্যপ্রাণীর দেখা মেলে এখানে। পাহাড়ি পাকদন্ডী বেয়ে প্রাকৃতিক শোভা তো রয়েছেই। তার সঙ্গে পুখরির জলাশয়ে বড় বড় মাগুর মাছ ও কচ্ছপ দেখতেও দূর দূরান্ত থেকে আসেন পর্যটকরা।

কিলবিল: পুখরি জলাশয়ে পর্যটক। নিজস্ব চিত্র

কিলবিল: পুখরি জলাশয়ে পর্যটক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:০০
Share: Save:

জয়ন্তী এলে পুখরি যাবেনই পর্যটকরা। প্রায় এগারোশো ফুট উচ্চতায় হয়েছে প্রাকৃতিক পুখরি জলাশয়। যা জয়ন্তীর অন্যতম আকর্ষণ। ধর্মীয় স্থল হিসবে পরিচিতি পেয়েছে পুখরি পাহাড়। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জয়ন্তী রেঞ্জের অধীনে এই পাহাড়ি এলাকা। নানা বন্যপ্রাণীর দেখা মেলে এখানে। পাহাড়ি পাকদন্ডী বেয়ে প্রাকৃতিক শোভা তো রয়েছেই। তার সঙ্গে পুখরির জলাশয়ে বড় বড় মাগুর মাছ ও কচ্ছপ দেখতেও দূর দূরান্ত থেকে আসেন পর্যটকরা।

পুখরি পাহাড় জঙ্গলের ভিতরে অবস্থিত। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডিএফডি প্রদীপ বাউরি জানান, তাসিগাঁও টাওয়ার পর্যন্ত গাড়ি যাওয়ার অনুমতি রয়েছে। সেখান থেকে হেঁটে পর্যটকদের পাহাড়ে উঠতে হয়। পুখরির কচ্ছপ ও মাছ দেখতে ভিড় জমান পর্যটকরা। পর্যটকরা জঙ্গলে নিয়ম মেনেই পুখরি ঘুরতে যান, এমনই জানান তিনি।

স্থানীয়দের দাবি, পাহাড়ের উপর প্রাকৃতিক জলাশয়ের খোঁজ পেয়েছিলেন ইংরেজ শাসকরা। ১৮৬৫ সালের আগে পুখরি পাহাড় ভুটানের অধীনে ছিল। পরে ইংরেজ শাসকদের অধীনে আসে। প্রায় একশো মিটার লম্বা ও তিরিশ মিটার চওড়া আয়তনের পাহাড়ের কোলে অবস্থিত এই প্রাকৃতিক জলাশয়টি কত গভীর তা কেউ জানে না। এখানে শিব ও বুদ্ধের আরাধনা করেন ভক্তরা। জলে নামা তো দূরের কথা জলে পা ছোঁয়ান না কেউ।

রাজাভাতখাওয়ার বাসিন্দা রামকুমার লামা জানান, বৌদ্ধ ধর্মের বিশ্বাসীরা জলে মাগুর মাছ ছাড়েন দীর্ঘ আয়ুর কামনায়। তাই ওই জলে কেউ নামেন না। জলাশয়েরক মাছও কেউ ধরেন না। পর্যটকরা এলাকায় গেলে মাছেদের জন্য খাবার নিয়ে যান। দীর্ঘ সময় ধরে মাছগুলো থাকতে থাকতে সংখ্যায় অনেক বেড়ে গিয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে মানুষের সংস্পর্শে থাকতে থাকতে ভয়ও চলে গিয়েছে। পর্যটকরা ওই জলাশয়ের কাছে গেলেই হাজার হাজার মাছ কাছে চলে আসে।

স্থানীয় টুরিস্ট গাইড শেখর ভট্টাচার্য জানান, পুখরিতে নানা ধরনের গাছ দেখতে পাওয়া যায়। সঙ্গে দেখা যায় বহু বন্যপ্রাণী আছে। প্রাকৃতিক ওই জলাশয়ে হাতি, হরিণ, বাইসন, চিতাবাঘ সন্ধের পর জল খেতে আসে। তাছাড়া পাহাড়ে ওঠার সময় প্রায় চারফুট লম্বা কালো রঙের দৈত্য কাঠবেড়ালিও দেখতে পান পর্যটকরা। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, দিন দিন পুখরির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বুদ্ধ পূর্ণিমাতে বহু মানুষ আসেন পুজো দিতে। শাল, সেগুন, চিকরাশি, লালী সহ নানা গাছের সারি রয়েছে এখানে। পর্যটকদের টানে সেগুলোও।

কলকাতা থেকে আসা পর্যটক অনল চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘‘শান্ত পরিবেশে প্রাকৃতিক শোভা আর বন্যাপ্রাণী দেখতে পাওয়া এই দুটোই পুখরির অন্যতম আকর্ষণ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Travel and Tourism Tourists Turtles Fishes
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE