Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দুই প্রসূতির মৃত্যু, নালিশ গাফিলতির

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট দুই চিকিৎসকের একজনের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির প্রমাণ মেলায় তাঁকে বদলির জন্য স্বাস্থ্য দফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০২:৩২
Share: Save:

১০ ঘণ্টার মধ্যে পর পর দুই অন্ত:সত্ত্বার মৃত্যুর ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে যে দু’জন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের অধীনে ওই দুই প্রসূতি ভর্তি হয়েছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এর আগেও রোগী মৃত্যুর ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। বিভাগীয় তদন্তে তাঁদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার প্রমাণ মেলে বলেও জানা গিয়েছে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে তাদের একজনকে বদলির জন্য জেলা থেকে রাজ্যের স্বাস্থ্যভবনে রিপোর্টও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ না হওয়ায় তারা ওই মহকুমা হাসপাতালেই রয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা দুই বধূর মৃত্যুতে ওই দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অবহেলা ও গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান পরিজনরা।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট দুই চিকিৎসকের একজনের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির প্রমাণ মেলায় তাঁকে বদলির জন্য স্বাস্থ্য দফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। অন্যজনের মানসিক স্থিতি স্বাভাবিক না খাকায় তাকে সাময়িক ভাবে হাসপাতালের ইনডোর বিভাগের বদলে আউটডোরে রাখা হয়েছিল। সম্প্রতি তিনি সুস্থ বলে মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দাখিল করার পরে আবার তাঁকে ইনডোরে ডিউটি দেওয়া হচ্ছে।’’ কেন ওই দুই প্রসূতির মৃত্যু হলো তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত হবে বলে সুকুমারবাবু জানিয়েছেন।

বুধবার রাত ১২টা ২০ মিনিট নাগাদ প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে গঙ্গারামপুর থানার হামজাপুর এলাকার অন্ত:সত্ত্বা বধূ সইনুর খাতুন (২০) ওই হাসপাতালে ভর্তি হন। এ দিন সকাল ৭টা ১০ মিনিট নাগাদ তিনি মারা যান। মৃতার স্বামী রেজ্জাক হোসেনের অভিযোগ, রাতে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ পিনাকী সরকারের অধীনে তাঁর স্ত্রীকে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু সারা রাত কোনও ডাক্তার তাঁকে দেখেননি। সকালে স্ত্রীর মৃত্যু হয়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে অন্ত:সত্ত্বা সইনুরের। মৃত্যুর শংসাপত্রেও তা লেখা হয়েছে।

এ দিন দুপুরে হরিরামপুর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে শামিম আকতার (১৯) নামে অন্তঃসত্ত্বা বধূকে গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। বিকেল ৫টা নাগাদ সিজার করে সন্তান জন্মের পর তাঁর মৃত্যু হয়। শিশুটি অবশ্য ভাল আছে। উচ্চ রক্তচাপ ও খিঁচুনির কারণে শামিমের মৃত্যু হয় বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন। আত্মীয়রা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক সুনীল চৌধুরীর বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন।

অভিযুক্ত দুই চিকিৎসক পিনাকী সরকার ও সুনীল চৌধুরী অবশ্য গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের তরফে কোনও অবহেলা ছিল না বলেই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানিয়েছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE