Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ডাইনি অপবাদে মা, বোনকে মার

ডাইনি অপবাদে বৃদ্ধা মা ও প্রাথমিক স্কুলের পার্শ্বশিক্ষিকা বোনকে মারধরের অভিযোগ উঠলো খোদ সরকারি এক আধিকারিক এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৭ ০১:৫০
Share: Save:

ডাইনি অপবাদে বৃদ্ধা মা ও প্রাথমিক স্কুলের পার্শ্বশিক্ষিকা বোনকে মারধরের অভিযোগ উঠলো খোদ সরকারি এক আধিকারিক এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে।

মালদহের হবিবপুর থানার আকতৈল গ্রাম পঞ্চায়েতের খড়িবাড়ি গ্রামের এই ঘটনার পরে থানাতে জানিয়েও কাজ না হওয়ায় সোমবার আক্রান্ত মহিলারা দ্বারস্থ হন জেলা পুলিশের। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত গ্যাব্রিয়েল সরেন মালদহ জেলা উদ্যান পালন দফতরের প্রযুক্তি সম্প্রসারণ আধিকারিক। এ ছাড়া আরও তিন জন অভিযুক্ত রয়েছেন। সরকারি দফতরের আধিকারিকের বিরুদ্ধে ডাইনি অপবাদ দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় সচেতনতা নিয়েই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।

সেই সব এলাকায় প্রশাসন, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে প্রচার চালানো হচ্ছে। তারপরেও খোদ সরকারি আধিকারিক এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ডাইনি অপবাদ দিয়ে শিক্ষিকা বোন ও মাকে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে পড়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা। এই বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা শাসক আর ভিমলা। তিনি জানান, সেই সঙ্গে প্রচারে আরও জোর দেওয়া হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচ-ভাই বোনদের মধ্যে গ্যাব্রিয়েলই বড়। তিন বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছোট বোন স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্বশিক্ষিকা। বছর দশেক আগে বাবা মারা যাওয়ার পর ওই শিক্ষিকা বৃদ্ধা মাকে নিয়ে থাকতেন। গ্রামে ওই পরিবারই অত্যন্ত শিক্ষিত। অভিযোগ, গত ১৭ মার্চ গ্যাব্রিয়াল ও তাঁর স্ত্রী সহ চার জন মিলে বৃদ্ধা মা ও বোনকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে মারধর করেন। প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। প্রাণ ভয়ে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন বলে দাবি আক্রান্ত মহিলাদের। পার্শ্বশিক্ষিকা বলেন, ‘‘বাড়িতে জানগুরু নিয়ে এসে ওই দিন পূজা অর্চনা করে আমাদের ডাইনি অপবাদ দিয়ে মারধর করে। আমরা পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি।’’ দাদা সরকারি কর্মী হওয়ায় পুলিশ পদক্ষেপ করছে না বলে দাবি ওই মহিলার।

গ্যাব্রিয়েলের বোন দাবি করেন, তাঁদের চার কাঠা জমি হাতিয়ে নেওয়ার জন্য এমন অপবাদ দেওয়া হয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গাব্রিয়াল। তিনি বলেন, ‘‘মিথ্যে অভিযোগ। বাড়িতে পূজা অর্চনার জন্য জানগুরুকে ডাকা হয়েছিল। আর আমরা ডাইনি বিশ্বাস করি না।’’ মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

women Lynched
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE