Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ছেত্রী ধৃত, সমস্যা মোর্চায়

ইংরেজিতে কথাবার্তায় চোস্ত এই নেতাকে বরাবর বিশেষ পছন্দ করেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। বরাবর মোর্চায় থাকলেও বছর তিনেক আগে তরাইয়ের দলীয় নেতাদের একাংশের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৭ ০১:৪৮
Share: Save:

সুকনা ও লাগোয়া এলাকায় তিনিই শেষ কথা। পেশায় জিটিএ-র ঠিকাদার বিশাল ছেত্রীর প্রভাব সম্প্রতি এলাকা ছাড়িয়ে নকশালবাড়ি থেকে ডুয়ার্সেও ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলাও। সেই মোর্চা নেতা গ্রেফতার হওয়ায় সুকনা থেকে বাগরাকোট, সর্বত্রই মোর্চার মধ্যে আলোড়ন পড়েছে। আজ, বুধবার ওই নেতাকে ছাড়া কী ভাবে আন্দোলন হবে, তা নিয়ে দলের মধ্যে চলছে আলোচনাও। মোর্চার সুকনা এলাকার নেত্রী ছিরিং দাহালকেও দেখা যাচ্ছে না। তাই মোর্চা নিচুতলার কয়েকজন সমর্থক বলেন, ‘‘খানিকটা চিন্তায় পড়েছি, কীভাবে আন্দোলন হবে তা নিয়ে নেতাদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।’’

কে এই বিশাল ছেত্রী?

বয়স ৪০-এর কোঠায়। শালবাড়ি বাজার লাগোয়া এলাকায় বিরাট বাড়ি। তার নীচে বিলিয়ার্ড এবং স্নুকার খেলার ব্যবসা। একটু এগিয়েই এলাকার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ লাগোয়া বড় রেস্তোরাঁর মালিক। এক সময় পার্বত্য পরিষদ, এখন জিটিএ-র ঠিকাদারি তার মূল ব্যবসা। ইংরেজিতে কথাবার্তায় চোস্ত এই নেতাকে বরাবর বিশেষ পছন্দ করেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। বরাবর মোর্চায় থাকলেও বছর তিনেক আগে তরাইয়ের দলীয় নেতাদের একাংশের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। শাসক দলে নাম লিখিয়ে স্থানীয় নেতাদের বদলে একেবারে দলের রাজ্য নেতাদের সঙ্গে ওঠাবসা শুরু করেন। কিন্তু পাহাড়ে ঠিকাদারি ব্যবসায় টান পড়ায় তিনি ফের দুই বছর আগে শিলিগুড়ি পুরসভা নির্বাচনে মুখে মোর্চায় ঢুকে পড়েন।

খোদ গুরুঙ্গ মেথিবাড়িতে সভা করে তাঁকে মোর্চায় যোগ দেওয়ান। দলের অর্গানাইজিং সেক্রেটারির পদ দেওয়া হয়। নতুন করে তরাইয়ে ডুয়ার্সে বিশালের প্রভাব বাড়তেই দলেও উত্থান শুরু হয়। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করে গুরুঙ্গ তাকে মোর্চার সহ সভাপতির পদ দেন। গোটা তরাই ডুয়ার্সের আন্দোলন, আদিবাসী-গোর্খাদের সঙ্গে যোগাযোগের কাজ করছিলেন বিশাল। মাঝে মে মাসে গাড়ি দুর্ঘটনায় জখম হয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। জুনে আন্দোলন শুরু হতেই পুরোদস্তুর ময়দানে নামেন এই মোর্চা নেতা।

পুলিশ জানিয়েছে, তরাইয়ের পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোক আনা, বিভিন্ন মিছিল এবং প্রয়োজনে হামলার পরিকল্পনায় বিশাল জড়িত। নিয়মিত পাহাড়ের বৈঠকে যোগও দিচ্ছিলেন। কিছু দিন আগে একটি নেপালি স্থানীয় চ্যানেলের দফতরে পুলিশি অভিযানের পর তিনি তার প্রতিবাদ শুরু করেন। বিভিন্ন দফতরে চিঠি পাঠানো, আইনি লড়াইয়ের প্রস্ততির কথাও বলেন। আজ, বুধবার থেকে সভাপতি নির্দেশে কোথায় কী আন্দোলন হবে, তা ঠিক করতে দফতরে আসার সময়ই গ্রেফতার হয়ে যান বিশাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE