ভোগান্তি: শিলিগুড়ি হাসপাতালে জ্বরের রোগীদের ভিড়। নিজস্ব চিত্র
ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে এখন কবে ঠান্ডা পড়বে সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ। অক্টোবর মাস গড়াতে চললেও এখনও সেভাবে ঠান্ডা না-পড়া এবং ডেঙ্গির সঙ্গে ভাইরাল ফিভার, চিকুনগুনিয়ার সংক্রমণ চলতে থাকায় তাঁরা উদ্বিগ্ন। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকাতেই ডেঙ্গি, জ্বরের প্রকোপ ছড়িয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ আশা করেছিলেন দুর্গাপুজোর পর ঠান্ডা পড়তে শুরু করলেই ডেঙ্গির প্রকোপ কমে যাবে। কিন্তু কালীপুজো পার হলেও জ্বর, ডেঙ্গি পরিস্থিতি ওই অবস্থাতেই রয়েছে। শিলিগুড়ি শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা দশ হাজারেরও বেশি। কালীপুজোর দিন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শিলিগুড়িতে এক ব্যক্তি মারাও গিয়েছেন। চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন, মাঝেমধ্যে বৃষ্টি, জল জমে থাকা, দিনে রোদ-গরমে লার্ভা ফুটে মশার বংশ বিস্তারের উপযুক্ত পরিবেশ মিলছে বলেই এখনও ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়ার দাপট চলছে। শীত পড়লে মশার বংশবিস্তার কমবে। ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়ার মতো রোগের প্রকোপও কমে আসবে বলে তাঁদের আশা।
দার্জিলিং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘ঠান্ডা পড়লেই ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়ার মতো রোগের প্রকোপ কমবে বলে আশা করছি। রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ২৭-৩২ ডিগ্রি তাপমাত্রা লার্ভা ফুটে মশার বংশবিস্তারের পক্ষে উপযুক্ত। অক্টোবর মাস পার হতে চললেও তাপমাত্রা কখনও ৩২ ডিগ্রি, কখনও ৩৪ ডিগ্রির কাছাকাছি থাকছে। তাতেই রোগ সংক্রমণের উপযুক্ত পরিবেশ মিলছে। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল জানান, জ্বরের রোগী এখনও আসছে। মেডিসিন বিভাগে প্রতিদিনই শতাধিক রোগী ভর্তি হচ্ছেন জ্বর নিয়ে। ডেঙ্গি, জ্বর নিয়ে শতাধিক রোগী উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালেও। অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘ঠান্ডা পড়লে ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া কমে যাবে বলেই মনে হচ্ছে।’’ চিকিৎসকদের একাংশের মত, ২৫ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা কমে এলেই ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়ার মতো রোগ সংক্রমণ কমে আসবে। কেন না ওই তাপমাত্রায় লার্ভা ফুটে মশার বংশ বিস্তার হতে পারবে না।
মেডিক্যালের চিকিৎসকদের একাংশের আশঙ্কা, শিলিগুড়ির মতো শহরে ডেঙ্গি পরিস্থিতির জন্য শুধু আবহাওয়াই দায়ী নয়। ডেঙ্গি প্রতিরোধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে না পারাতেই রোগের দাপট বেড়েছে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, সচেতনতা প্রচার, বিভিন্ন এলাকায় স্প্রে করার কাজ চলছেই। রাজ্যের তরফে টাকা না-মিললেও বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা ও প্রতিরোধের কাজ তারা ডিসেম্বর পর্যন্ত চালাবেন। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রই জানিয়েছে, শনিবার শিলিগুড়ির বাবুপাড়ার একটি বেসরকারি ল্যাবরেটরির থেকে জ্বরে আক্রান্তদের রক্তের নমুনা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছিল। সাতটি নমুনার মধ্যে ৬টিতেই ডেঙ্গির জীবণু মিলেছে। সে কারণে চিকিৎসকদের একাংশের ধারণা, রোগ যেভাবে ছড়িয়েছে তাতে শীতেও ডেঙ্গির সংক্রমণ কতটা কমবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকছেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy