Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

প্রেমে সাহায্য করায় মার মহিলাকে, অভিযুক্ত তৃণমূল ঘনিষ্ঠ

প্রেমিক-প্রেমিকার পালিয়ে যাওয়ায় মদত ছিল এক মহিলার। শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার পুরসভার ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে এমনই অভিযোগ উঠল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৭ ০২:৪৮
Share: Save:

প্রেমিক-প্রেমিকার পালিয়ে যাওয়ায় মদত ছিল এক মহিলার। শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার পুরসভার ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে এমনই অভিযোগ উঠল। তার জেরেই তাঁকে মারধর করা হয়েছে। শনিবার বিকেলের এই ঘটনায় অভিযুক্তেরা এক তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ। সে কারণেই তাঁদের ধরা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে রবিবার বিকালে একদল বাসিন্দা থানায় গিয়ে ক্ষোভ দেখান। তবে রাতে এক অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে।

পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে তাঁরা নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও তুলেছেন। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিলিগুড়ির ডিসি (ইস্ট) গৌরব লাল। তিনি জানান, মারধর, কাপড় টানাটানির অভিযোগ রয়েছে। সেই হিসাবে শ্লীলতাহানি, মারধরের মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্তের খোঁজ করা হচ্ছে। ওই তরুণী-তরুণীর খোঁজও মিলেছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগকারী মহিলার বাড়ি প্রকাশনগরেই। তাঁর বাড়ির সামনে একটি টেলারিং-এর দোকান রয়েছে। তাঁর স্বামী শহরের একটি চানাচুর কারখানায় কাজ করেন। ওই পাড়াতেই তরুণীর বাড়ি। তিনি মহিলার কাছে মাঝে মাঝে কাজ শিখতেও যেতেন। গত ১৭ মার্চ থেকে তরুণীকে পরিবারের লোকজন খুঁজে পাননি। পরে তাঁরা জানতে পারেন, পরিচিত এক তরুণের সঙ্গে তরুণী পালিয়ে গিয়েছেন।

কিন্তু মহিলা তাঁদের পালাতে সাহায্য করেছেন বলে অভিযোগ তুলে দুই পরিবারের বাড়ির লোকজন দোকানে হামলা করেন বলে অভিযোগ।

নির্যাতিত মহিলা জানান, ‘‘ওই তরুণ-তরুণী আমার দোকানে আসতেন। তাঁরা পালিয়ে যাওয়ায় অযথা আমাকে দায়ী করে মাটিতে ফেলে মারধর শুরু করা হয়। কাপড় খুলে দিয়ে দুই পরিবারের লোকজন মারধর করে। মাথায় কাঁচি দিয়ে আঘাত করা হয়। সোনার আংটি হারিয়ে যায়।’’ তাঁর স্বামী বাঁচাতে এলে তাঁকেও মারধর করে হুমকি দেওয়া হয়। দুপুরে তড়িঘড়ি পুলিশে গিয়ে অভিযোগ করেন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে বরখা বিশ্বকর্মা জানান, পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়নি বলেই তাঁরাও থানায় যান। পরে অবশ্য পুলিশ তৎপর হয়েছে।

এলাকার একাংশ বাসিন্দা জানান, তরুণ-তরুণী বিয়ে করতে চান বলে উদ্ধারের পর জানিয়েছেন। পরিবারের লোকজন তা মেনেই নিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা পালানোর পরে মহিলার উপর হামলা হয়। অভিযুক্তরা এলাকার তৃণমূল নেতা মুন্না প্রসাদের পরিচিত হওয়ায় পুলিশ প্রথমে সক্রিয় হয়নি বলে অভিযোগ।

এই অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন মুন্না প্রসাদ। তিনি ওয়ার্ডের সভাপতি ছাড়াও তৃণমূলের শিলিগুড়ির টাউন (৩) কমিটির কার্যকরী সভাপতি। মুন্না বলেন, ‘‘এখানে দল বা প্রভাবের কোনও বিষয় নেই। সবাই আমাদের পাড়ার লোক। মারপিট হয়েছে শুনেছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আমরাও ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’

অভিযুক্তরা বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ মিথ্যা বলে জানিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ওই মহিলা ওই তরুণ-তরুণীকে টাকা পয়সাও দিয়েছিলেন বলে শোনা যায়। তা জানতে গেলে কথা কাটাকাটি, ধাক্কাধাক্কি হয়। মারধর হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Woman Lynched
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE