Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বোনের খোঁজ নিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ দুই

বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত পণের দাবিতে নাগিনা খাতুনের অত্যাচার চালাত তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। রবিবার সকালে তারা নাগিনার বাপের বাড়িতে জানায়, তিন দিন ধরে নিখোঁজ তিনি।

আহত: গুলিবিদ্ধ এক ভাই। নিজস্ব চিত্র

আহত: গুলিবিদ্ধ এক ভাই। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ইসলামপুর শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২৩
Share: Save:

হারানো বোনের খোঁজ করতে গিয়ে বোনের শ্বশুরবাড়ির লোকেদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হলেন দুই ভাই। রবিবার রাতে চোপড়া থানার আসারুবস্তির হাজারবিঘা গ্রামের ঘটনা। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত পণের দাবিতে নাগিনা খাতুনের অত্যাচার চালাত তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। রবিবার সকালে তারা নাগিনার বাপের বাড়িতে জানায়, তিন দিন ধরে নিখোঁজ তিনি। থানায় লিখিত অভিযোগ করে নাগিনার শ্বশুরবাড়িতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে গুলিতে আক্রান্ত হন তাঁর দুই খুড়তুতো ভাই মুস্তাফা কামাল ও চান আলি। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে, নাগিনার শ্বশুর মসারুল হক, শ্বাশুড়ি হানুফা বেগম ও খুড়শ্বশুর ইলিয়াস আলি।

চোপড়ার বাসিন্দা পঞ্চায়েত দফতরের অস্থায়ী কর্মী ফারুক আজম এক সময় সিভিক পুলিশ হিসেবে চোপড়ায় কর্মরত ছিল। দু’বছর আগে চোপড়ারই মুন্সিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা নাগিনার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। নাগিনার বাবা মহম্মদ করিমুদ্দিন বলেন, ‘‘জামাই চাকরি করে বলেই বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু বিয়ের পর থেকে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকেরা পণের দাবিতে অত্যাচার শুরু করে। এ নিয়ে সালিশিও হয়। গত কাল জানায় মেয়েকে পাচ্ছে না। খুঁজে বের করে দেওয়ার জন্য তাদের বলেছিলাম। সন্ধেয় ওদের বাড়িতে গেলে আমাদের উপর গুলি করে ওরা।’’ তিনি জানান, ছ’রাউন্ড গুলি করা হয়েছে। করিমুদ্দিনের এক ভাইপোর দু’টি ও এক ভাইপোর একটি গুলি লেগেছে।

গুরুতর আহত অবস্থায় মুস্তাফা ও চানকে প্রথমে চোপড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ও সেখান থেকে শিলিগুড়ির কদমতলার একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার পরই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘বাপের বাড়ি ও শ্বশুর বাড়ির লোকেদের মধ্যে একটা গণ্ডগোলে গুলি চালনার ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ করিমুদ্দিন বলেন, ‘‘মেয়েকে এখনও খুঁজে পেলাম না। কি জানি, প্রাণে মেরে ফেলেছে কিনা ওকে!’’

পুলিশ ফারুক আজমের বাবা হক, মা বেগম ও কাকা আলিকে গ্রেফতার করে. সরকারি আইনজীবী দেবজ্যোতি পাল জানান, সোমবার মসারুল, হানুফা ও ইলিয়াসকে ইসলামপুর আদালতে তোলা হয়েছে। মসারুলকে ৬ দিনের পুলিশি হেফাজত ও বাকিদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে বিচারক সঞ্জয়কুমার শর্মা। ধৃতদের বিরুদ্ধে পণের দাবিতে বধূ নির্যাতন, অস্ত্র ধারা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dowry Death Islampur ইসলামপুর
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE