Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
দুবরাজপুর

পুলিশ কেন ধরছে না শয়তানগুলোকে

প্রথমে বুঝতে পারিনি। পরে যখনই বাড়িতে ঢুকত, দেখতাম ছেলের চোখ লাল, ঝিমিয়ে থাকত। আস্তে আস্তে শরীরের জোর চলে যাচ্ছিল। পরে জেনেছিলাম আমার সমর্থ ছেলেটা নেশার সিগারেট খায়। পোস্তোর অঁঠার সঙ্গে কী সব মিশিয়ে তৈরি করা সিগারেট।

খাঁ খাঁ করছে কিসান মান্ডি। ক্ষুব্ধ শহরবাসী।

খাঁ খাঁ করছে কিসান মান্ডি। ক্ষুব্ধ শহরবাসী।

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৪৯
Share: Save:

প্রথমে বুঝতে পারিনি। পরে যখনই বাড়িতে ঢুকত, দেখতাম ছেলের চোখ লাল, ঝিমিয়ে থাকত। আস্তে আস্তে শরীরের জোর চলে যাচ্ছিল। পরে জেনেছিলাম আমার সমর্থ ছেলেটা নেশার সিগারেট খায়। পোস্তোর অঁঠার সঙ্গে কী সব মিশিয়ে তৈরি করা সিগারেট। এর পরেই টের পেলাম ঘর থেকে টাকাপয়সা, গয়না, ঘরের যা কিছু— হাতের কাছে যা পেত, তাই বিক্রি করে নেশা করছে। বছরখানেক আগে থেকে ছেলেকে নিয়ে কী বিপদে পড়েছি, বোঝাতে পারব না। একে বিধবা। ঠিকায় একটা কাজ করে হাজার চারেক টাকা দিয়ে কোনও রকমে সংসার চলে। ২০-২১ বছরের ছেলেটা কোথায় একটু সংসারের হাল ধরবে, উল্টে ওকে নিয়েই এমন বিপদে পড়লাম যে কথায় প্রকাশ করতে পারব না। চেয়ে চিনতে ওকে নেশা ছাড়ানোর জন্য আসানসোলে একটা ক্যাম্পে পাঠিয়েছিলাম। মাসখানেক ছিল। কিন্তু, ওখানে ওর উপর অত্যাচার হচ্ছিল। তাই ফিরিয়ে নিয়ে এসেছি। এখন নেশা করছে না। কিন্তু, আবার যে করবে না, সেটা বলা যাচ্ছে না। এটা শুধু আমার পরিবারের সমস্যা নয়, ঘরে ঘরে একই অবস্থা। যারা এই নেশার সিগারেট বিক্রি করে, পুলিশ কেন সেই শয়তানগুলোকে ধরছে না? তা হলেই তো ছেলেগুলোর এই হাল হয় না!

তমান্না বিবি, ঠিকাকর্মী

নামেই মান্ডি

পুজোর ঠিক মুখেই দুবরাজপুরে কৃষক বাজারের উদ্বোধন হল। ভাবলাম, যাক দেড় কিলোমিটার ঠেঙিয়ে আর বাজার যেতে হবে না। হাতের কাছেই সব কিছু মিলবে। কিন্তু, মাত্র দু’দিনেই ভুল ভাঙল। কেথায় বাজার! এক জন সব্জি বিক্রেতাও স্টেশন রোডে সরকারি উদ্যোগে তৈরি কৃষক বাজারে আসছেন না। অগত্যা পুরনো বাজারই ভরসা। কিন্তু, সমস্যা হল সকালে হাঁটতে বেরিয়ে যে কাজটা করা যেত, সেই কাজ করতে আলাদা করে সময় বের করতে হবে। আমাদের মতো চাকুরিজীবীদের পক্ষে এটাই সব চেয়ে সমস্যার। শুধু আমি নই, রঞ্জনবাজার, স্টেশন, ব্লক লালবাজার অংশে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই চাকুরে। সে ক্ষেত্রে দুবরাজপুর বাজারের নোংরা, জল কাদা না ভেঙে এখানে দিব্যি বাজার করতে পারতেন। কেউ কেউ বলছেন, এখানে নাকি বিক্রেতাদের সব্জি বিক্রি হচ্ছে না। এক দু’দিনেই কী কাঙ্খিত ফল মেলে? বিক্রেতাদের ধৈর্য্য, সঙ্গে চাই প্রশাসিনক উদ্যোগ, বহুল প্রচার প্রয়োজন। সেটা অবশ্য এখনও চোখে পড়েনি।

সুশীলকুমার মণ্ডল, স্টেশন ম্যানেজার (দুবরাজপুর)

থামবে কবে? প্রশ্ন দুবরাজপুর শহরে।

লাইব্রেরি চাই

মেঠো পথে একতারায় সুর তুলে বাউল যেমন বাঁচার রসদ খোঁজে, তেমন অনেক মানুষ রয়েছেন যাঁরা তাঁদের প্রাণের রসদ খুঁজে পান লেখায়, সাহিত্য চর্চায়। দুবরাজপুর শহরেও এমন অনেক সাহিত্য অনুরাগী রয়েছেন, যাঁরা শত প্রতিকুলতার মধ্যেও লেখালেখি করেন। সাহিত্য পত্রিকা বের করেন। কিন্তু, তাঁদের জ্ঞানভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করতে পারে, এমন বইয়ের সম্ভার, সমসাময়িক লেখক-কবিদের প্রকাশিত গ্রন্থ বা বিভিন্ন পত্রপত্রিকা সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার এ শহরে নেই। সকলেই বলবেন, কেন? দুবরাজপুরে সরকারি টাউন লাইব্রেরি তো রয়েছে! গ্রন্থাগারটি প্রাচীন সন্দেহ নেই। কিন্তু, আমার মতে এই গ্রন্থাগারটি আবছা অলোর মতো। বইয়ের সম্ভার মোটেই আশানুরূপ নয়। নেই সমসাময়িক লেখকদের বই। থাকে না রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রকাশিত পত্রপত্রিকাও। যে সকল পুরানো বই আছে, সেগুলির অবস্থাও করুণ। ধরলেই পাতা যেন হাতে খসে আসে। নেই স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের উপযোগী বইয়ের সম্ভারও। এক জন সাহিত্য অনুরাগী ও শহরবাসী হিসাবে এটাই চাইব, এই গ্রন্থাগারে আরও বই সংযোজিত হোক। বর্তমান লেখকদের লেখার সঙ্গে পরিচয় ঘটুক শহরের পাঠকদের, সাহিত্য অনুরাগীদের। উপকৃত হোক পড়ুয়ারাও। চাই গ্রন্থাগারে বসে পঠনপাঠনের উপযুক্ত পরিকাঠামোও। সেটা হবে কী?

মধুমিতা সরকার, স্বাস্থ্যকর্মী

থামুক ট্রেন

পরিকাঠামোয় কোনও ঘাটতি নেই। শাখায় বৈদ্যুতিকরণ হয়েছে। ঝকঝকে স্টেশন। রিজার্ভেশন কাউন্টার-সহ সবই রয়েছে। এলাকার লোকসংখ্যাও যথেষ্ট। কিন্তু, পূর্ব রেলের অন্ডাল-সাঁইথিয়া শাখায় থাকা দুবরাজপুর স্টেশনে কোনও দূরপাল্লার ট্রেনই দাঁড়ায় না। অথচ ব্রিটিশ আমলের তৈরি স্মৃতি বিজড়িত এই রেলপথ ও স্টেশনের গুরুত্ব অপরিসীম। দুবরাজপুর শহরের ৪০ হাজার নাগরিক ছাড়াও খয়রাশোল, রাজনগর, এমনকী লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ দুবরাজপুর স্টেশনের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু, রেলের কাছে বরাবরই যেন তা উপেক্ষিত থেকে গিয়েছে। আমার মতো অনেকের চাওয়া দূরপাল্লার কমপক্ষে দু’টি ট্রেনে (বনাঞ্চল এবং মালদা-দিঘা) স্টপ হোক দুবরাজপুরে। এ জন্য দীর্ঘ দিন থেকে রেলের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছেন মানুষ। নাগরিক সমিতির পক্ষ থেকেও বহু বার এ নিয়ে রেলের কাছে দরবার করা হয়েছে। কোনও কাজ হয়নি। তবে, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবও এ জন্য দায়ী। রেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভেবে দেখলে বহু মানুষ উপকৃত হন।

কিশোর অগ্রবাল, ব্যবসায়ী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE