Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মিষ্টি দোকানের ফ্রিজে লুঠের বিয়ার

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়েছিল বিয়ারের বোতল ভর্তি লরি। ছড়িয়ে থাকা বিয়ার ভর্তি বোতল দেদার লুঠও হয়েছিল। তার জেরে আবগারি দফতরের হঠাৎ হানায় অনেকগুলি বিয়ারের বোতল মিলল এক তৃণমূল কর্মীর মিষ্টির দোকান থেকে! অন্তত এমনটাই দাবি আবগারি দফতরের।

অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি উদ্ধার করা হয় কয়েকশো বোতল বিয়ার। ছবি তুলেছেন সুজিত মাহাতো।

অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি উদ্ধার করা হয় কয়েকশো বোতল বিয়ার। ছবি তুলেছেন সুজিত মাহাতো।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হুড়া শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৩৬
Share: Save:

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়েছিল বিয়ারের বোতল ভর্তি লরি। ছড়িয়ে থাকা বিয়ার ভর্তি বোতল দেদার লুঠও হয়েছিল। তার জেরে আবগারি দফতরের হঠাৎ হানায় অনেকগুলি বিয়ারের বোতল মিলল এক তৃণমূল কর্মীর মিষ্টির দোকান থেকে! অন্তত এমনটাই দাবি আবগারি দফতরের।

হুড়া থানার লালপুর মোড়ে বুধবার রাতের ওই ঘটনায় এলাকায় বেশ শোরগোল পড়েছে। মঙ্গলবার সকালে একটি বিয়ারের বোতল বোঝাই গাড়ি পুরুলিয়া-বাঁকুড়া (৬০-এ) জাতীয় সড়কের উপরে, হুড়ার মধুবন গ্রামের কাছে উল্টে যায়। জেলা আবগারি দফতর সূত্রের খবর, নদিয়ার কল্যাণী থেকে রাঁচিগামী ওই গাড়িটিতে মোট ১৪,৪০০ বোতল বিয়ার ছিল। সবগুলিই ঝাড়খণ্ডে বিক্রির জন্য। জেলা আবগারি দফতরের আধিকারিক বিকাশ বিশ্বাস বলেন, “বোতলগুলির গায়ে লেখাও রয়েছে, এই বিয়ার পশ্চিমবঙ্গে বিক্রির জন্য নয়। সেদিন গাড়ি উল্টে যাওয়ার পর বেশ কিছু বোতল ভেঙে যায়। বাকি বেশির ভাগ বোতল লুঠ হয়ে যায়।”

লুঠ হওয়া সেই সব বোতল উদ্ধারের জন্য বুধবার বিকেল থেকে এলাকা জুড়ে তল্লাশিতে নামে আবগারি দফতর। মধুবন গ্রামে বিভিন্ন বাড়ির অদূরে মাঠের মধ্যে বিয়ারের বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায়। এই গ্রাম থেকে বেশ কিছু বোতল উদ্ধারের পর আধিকারিকেরা বিভিন্ন লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেন, কিছু বিয়ারের বোতল লালপুর মোড়ের একটি মিষ্টির দোকানে মজুত রয়েছে। বিকাশবাবু বলেন, “দোকানের ভিতরে ফ্রিজের মধ্যে আর অন্য জায়গায় মোট ৮২ বোতল বিয়ার পাওয়া গিয়েছে। এই বোতলগুলিও সেই লরি থেকে লুঠ হওয়া বোতল বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ ওই সব বোতলের গায়েও লেখা রয়েছে, ঝাড়খণ্ডে বিক্রির জন্য। এ রাজ্যে বিক্রির জন্য নয়।” তিনি জানান, দোকানের মালিককে পাওয়া যায়নি। তবে, দোকানের এক কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বেঙ্গল এক্সাইজ আইনে বেআইনি ভাবে বিয়ার মজুত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। ধৃতকে বৃহস্পতিবার আদালতেও হাজির করানো হয়। ওই এলাকা থেকে বুধবার মোট ২৩৪ বোতল বিয়ার উদ্ধার করা হয়েছে বলে আবগারি দফতর সূত্রের খবর।

যে মিষ্টির দোকান থেকে বিয়ারের বোতল মিলেছে, সেটি স্থানীয় তৃণমূল কর্মীর দোকান বলেই পরিচিত। এলাকার তৃণমূল নেতাদের অনেককেই এই দোকানে সকাল সন্ধ্যায় চায়ের ঠেকে দেখা যায়। ফলে ওই দোকান থেকে আবগারি দফতরের বিয়ার বাজেয়াপ্ত করা এবং এক কর্মীকে গ্রেফতার করার ঘটনাটি নিয়ে এখন এলাকায় জোর আলোচনা। হুড়া ব্লকের তৃণমূল নেতা (প্রাক্তন ব্লক সভাপতি) শ্যামনারায়ণ মাহাতো অবশ্য বলেন, “বিয়ারের বোতল আটকের বিষয়ে আমার কাছে কোনও খবর নেই। তবে যাঁর দোকান নিয়ে আলোচনা, তিনি আমাদের দলের কোনও নেতা নন। সমর্থক বা বড়জোর কর্মী বলা যেতে পারে।”

ওই মিষ্টির দোকানের মালিকের দাবি, “এক জন আমাকে ওই বিয়ারের বোতলগুলি বিক্রি করেছিলেন। আমরা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ওই বিয়ার রেখেছিলাম। সেগুলো আমি বিক্রি তো করিনি।”

জেলা আবগারি আধিকারিকরা অবশ্য জানান, ওই এলাকায় ফের অভিযান চালানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

beer hura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE