Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ভোটে হারা সোনামুখীতে অভিষেক

তৃণমূলের জয়রথ হোঁচট খেয়েছিল রাঢ়বঙ্গের এই জেলায়। বাঁকুড়ার ১২টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে যে ৫টি শাসক দলের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল বিরোধী জোট শক্তি, তার অন্যতম সোনামুখী।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৭ ০২:৫৮
Share: Save:

গত বিধানসভা ভোটে সোনামুখী কেন্দ্রটি হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। হারের পিছুনে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের যে বিরাট ভূমিকা রয়েছে, তা আড়ালে মানেন তৃণমূলের রাজ্য বা জেলা নেতৃত্ব। হারানো সেই গড়েই আজ, বুধবার আসছেন শাসক দলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মনে করা হচ্ছে, বুধবারের সভা থেকেই বাঁকুড়া জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের দামামা বাজিয়ে দেবেন তিনি।

গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য জুড়ে প্রবল মমতা ঝড়ে বিরোধীপক্ষ কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, তৃণমূলের জয়রথ হোঁচট খেয়েছিল রাঢ়বঙ্গের এই জেলায়। বাঁকুড়ার ১২টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে যে ৫টি শাসক দলের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল বিরোধী জোট শক্তি, তার অন্যতম সোনামুখী। দুর্ঘটনার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিধানসভা ভোটের পরে বাঁকুড়ায় আসতে পারেননি দলের তরফে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার পর্যবেক্ষক অভিষেক। শিয়রে এখন পঞ্চায়েত ভোট। সেই প্রেক্ষিতে অভিষেক সভার জন্য সোনামুখীকেই বেছে নেওয়ায় জল্পনা শুরু হয়েছে।

জেলা নেতারা প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও অনেকেরই মতে, বিরোধীদের কড়া বার্তা দিতেই হারানো জমি থেকে পঞ্চায়েতের দৌড় শুরু করছেন অভিষেক। সম্প্রতি বাঁকুড়া জেলায় বিজেপি-র রাজ্য নেতাদের ঘনঘন আসা যাওয়া লেগেই রয়েছে। সিপিএম থেকে তো বটেই, নিচু তলার বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীদের মধ্যেও বিজেপি-তে যোগদানের চোরা স্রোত বইতে শুরু করেছে। গত কয়েক মাসে জেলার বিভিন্ন ব্লকে বিজেপি-তে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগও দিয়েছেন শাসকদল ও বিরোধীদের কর্মী-সমর্থক।

অভিষেকের সভায় চোখে পড়ার মতো ভিড় টানতে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই মাঠে নেমেছিল জেলা তৃণমূল। জেলার সহ সভাপতি তথা বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী দাবি করছেন, “সভাস্থল ভিড়ে উপচে পড়বে। এত মানুষকে জায়গা দেওয়া নিয়েই আমরা চিন্তায়।’’ জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবার দাবি, অভিষেকের সভায় এ বারের ভিড় অতীতের সব রেকর্ড ভাঙতে চলেছে।

অভিষেকের সভার জন্য প্রচুর সংখ্যায় বাস তুলে নেওয়ায় জেলার পরিবহণ ব্যবস্থাতেও প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলা বাসমালিক সমিতি জানাচ্ছে, জেলার বিভিন্ন রুটে অন্তত একশোটি বাস তুলে নেওয়া হয়েছে সভার জন্য। যদিও সংখ্যাটা আদতে এর অন্তত তিন গুণ বলে জানা যাচ্ছে তৃণমূল সূত্রেই। জেলা বাস মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “পরিবহন ব্যবস্থা কিছুটা ব্যাহত হলেও একেবারে অচল হবে না। সব দিক ভারসাম্য রেখেই বাস দেওয়া হয়েছে।’’ অরূপবাবুর কথায়, “জেলার মানুষের সমস্যা যাতে না হয়, তার জন্য আমরা জেলার বাইরে থেকেও বাস নিয়েছি। এ ছাড়া প্রচুর ট্রাক্টর, ছোট গাড়ি নেওয়া হয়েছে। মোটরবাইকে করেও লোকজন সভায় যাবেন।’’ জেলা শাসক মৌমিতা গোদারা বসুর আশ্বাস, কোথাও সমস্যা হলে বাড়তি এসবিএসটিসি বাস নামানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE