Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
পুরুলিয়ায় সভা ছাড়লেন অনেকেই, জলখাবারও বয়কট করা হল

কর্তার শব্দ-চয়নে বিতর্ক শিক্ষক-বৈঠকে

বন দফতর ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছায় চলতি মাসের শেষের দিকে পুরুলিয়ার প্রতিটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়ে বৃক্ষরোপণের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। পুরুলিয়ার ডিএফও রামপ্রসাদ বাদানা জানান, স্কুলগুলির ফাঁকা জমিতে গাছ লাগানো হবে।

ক্ষোভ: বৈঠক ছেড়ে পুরুলিয়া রবীন্দ্র ভবন থেকে বেরিয়ে শিক্ষকেরা। নিজস্ব চিত্র

ক্ষোভ: বৈঠক ছেড়ে পুরুলিয়া রবীন্দ্র ভবন থেকে বেরিয়ে শিক্ষকেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৭ ০১:৫৭
Share: Save:

শিক্ষকদের নিয়ে এক বৈঠকে শব্দ-চয়নে বিতর্কে জড়ালেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ)। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, ওই কর্তা মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পের প্রচার করতে গিয়ে বৈঠকের জলখাবারের নাম জড়িয়ে কটূশব্দ ব্যবহার করেন। এর জেরে শিক্ষকদের একাংশ বৈঠকে ছেড়ে চলে যান। অনেকে আবার জলখাবারও বয়কট করেন। যদিও বৈঠক শেষে অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম দত্ত তাঁর বক্তব্য থেকে সরে আসেননি। ওই শব্দ প্রয়োগ এই প্রকল্পের প্রচারেরই অঙ্গ বলে দাবি করেছেন তিনি।

বন দফতর ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছায় চলতি মাসের শেষের দিকে পুরুলিয়ার প্রতিটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়ে বৃক্ষরোপণের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। পুরুলিয়ার ডিএফও রামপ্রসাদ বাদানা জানান, স্কুলগুলির ফাঁকা জমিতে গাছ লাগানো হবে। সে জন্য এ দিন প্রস্তুতি বৈঠক ছিল। জেলা সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পের প্রকল্প আধিকারিক বিকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘কোন স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে কত পড়ুয়া রয়েছে, কোন স্কুলে কতটা পরিমাণ জমি রয়েছে, স্কুলগুলিকে সেই তথ্য কত দিনের মধ্যে কোথায় জানাতে হবে সেই বিষয় নিয়েই এ দিনের বৈঠক ছিল। বৈঠকে সব স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষিকা কিংবা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের থাকতে বলা হয়েছিল।’’

বৈঠকে জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকেরাও উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, বৈঠকের একেবারে শেষের দিকে অরিন্দমবাবু হঠাৎ মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পের প্রসঙ্গ টেনে আপত্তিকর কথা বলেন। ওয়েস্ট বেঙ্গল স্কুল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি ভাস্কর মাহাতো, তৃণমূল শিক্ষা সেলের (মাধ্যমিক) জেলা সভাপতি সত্যকিঙ্কর মাহাতো বলেন, ‘‘অতিরিক্ত জেলাশাসক নির্মল বাংলা প্রকল্পের কথা বলতে গিয়ে জলখাবারের প্যাকেটের সঙ্গে জড়িয়ে আপত্তিকর কথা বলেন। তাতে শিক্ষকদের সম্মানে লেগেছে।’’ প্রতিবাদে অনেকেই খাবারের প্যাকেট গ্রহণ করেননি।

বছর খানেক আগে নিতুড়িয়া ব্লকে পঞ্চায়েতের কর্মীদের নিয়ে এক বৈঠকে অরিন্দমবাবু এমনই মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে। প্রতিবাদে কর্মীরা প্রতিবাদে সোচ্চার হন। পরে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। অরিন্দমবাবু জানাচ্ছেন, আগামী বছর মার্চের মধ্যে জেলায় আমাদের এক লক্ষ ৩৫ হাজার শৌচালয় তৈরি করতে হবে। তাই সব স্কুলের শিক্ষকদের সামনে পেয়ে তিনি মিশন নির্মল বাংলার গুরুত্বের কথা বলেন। তাঁর দাবি, ‘‘মোটেই কুকথা বলিনি। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলে ওই কথাই এক দিন ঊর্ধ্বতন কর্তা কিংবা মন্ত্রীর কাছে শুনতে হবে। তাই গুরুত্ব বোঝাতেই ওই কথা বলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE