বিস্ফোরণ-স্থল: লাভপুরে বাম প্রতিনিধি দল। নিজস্ব চিত্র
অবৈধ বালিঘাটের টাকা লাভপুর থানার মাধ্যমে কলকাতার হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রিটে পৌঁছয় বলে অভিযোগ তুললেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। এ দিন সকালে সুজনবাবুর নেতৃত্বে লাভপুরের দরবারপুর গ্রামে পৌঁছয় বাম প্রতিনিধি দল। সেখানে যাওয়ার পথে সুজনবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘এখানে কী হচ্ছে সবাই জানে। শুধু মাফিয়ারাই নয়। বালির ঘাটের টাকা এই থানার মাধ্যমে সিউড়িতে যায়। সেখান থেকে
অনুব্রত মণ্ডলের হাত ঘুরে টাকা পৌঁছয় হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রিটে।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এ দিন টুইট করেন, ‘‘কেবল তৃণমূলেই গৃহযুদ্ধ। কেবল ন’জনের লাশ? কেবল নির্দোষরা হাজতে। কেবল মুখ্যমন্ত্রী শান্তিতে।’’
অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘কে কী বলল তাতে কিছু এসে যায় না।’’ তৃণমূলের লাভপুর ব্লক সভাপতি তরুণ চক্রবর্তীর আবার দাবি, ‘‘আমাদের দলের কেউ বালির ঘাটের সঙ্গে যুক্ত নয়। আসলে সুজনবাবুদের আমলেই ওই ভাবে টাকা আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে পৌঁছত। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই উনি এ রকম কথা বলেছেন।’’ লাভপুর থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, অবৈধ বালির কারবারিরা দুষ্কৃতী। তাদের সঙ্গে পুলিশের যোগাযোগের সম্পর্কের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। সুজনবাবুর আরও অভিযোগ, দরবারপুরে বোমা বিস্ফোরণে নয়ের থেকেও বেশি জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই দেহগুলি তৃণমূলের সঙ্গে যোগসাজস করে পুলিশ লোপাট করে দিয়েছে। এই অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন পুলিশ এবং শাসকদলের নেতারা।
গত শুক্রবার বালির ঘাটের দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দরবারপুর এবং মীরবাঁধ গ্রামের তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর বোমাগুলির লড়াই চলে। পুলিশের অনুমান, তারই জেরে বোমা বাঁধতে গিয়ে দরবারপুর গ্রামে বিস্ফোরণে ৯ জনের মৃত্যু হয়। তার প্রেক্ষিতেই বাম প্রতিনিধি দলের লাভপুরে আসা। ওই দলে ছিলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম, জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা, আরএসপি’র রাজ্য কমিটির সদস্য তপন হোড় প্রমুখ। প্রথম তাঁরা এলাকায় একটি শান্তি মিছিল করেন। তারপর প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবিতে লাভপুর থানায় স্মারকলিপি দেন।
তারপর প্রতিনিধি দলটি পৌঁছয় দরবারপুর গ্রামে। তাঁরা প্রথমে যান বাবর আলির বাড়িতে। তাঁর স্ত্রী হাবসিনা বিবির সঙ্গে কথা বলেন। কথা বলেন বিস্ফোরণে মৃত আনোয়ার শেখের স্ত্রী কেবিরা বিবির সঙ্গেও। পরে সুজনবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘পুলিশ আসল অপরাধীদের বদলে যাঁকে পাচ্ছে তাঁকে ধরছে। তাই গ্রাম পুরুষ-শূন্য হয়ে পড়েছে। আতঙ্কে ভুগছেন মহিলারা। আমরা জেলা পুলিশ সুপারের কাছে আসল অপরাধীদের গ্রেফতার করে গ্রামে শান্তি ফেরানোর দাবি জানাব।’’
নাম না করে লাভপুরের বিস্ফোরণ নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। তাঁর কথায়, ‘‘এখানকার জেলা সভাপতি কথায় কথায় বোমা মারতে বলেন। সেই বোমা এখন কোথায় ফাটছে, তা তো আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy