থানায়: শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
ঝামেলা এড়াতে দীর্ঘ দিন আগে ছাত্র সংসদই তুলে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার পরেও গিয়ে বিশ্বভারতীর হস্টেল অবধি পৌঁছে গেল দুই ছাত্র সংগঠনের বিবাদ। একপক্ষ আর এক পক্ষের বিরুদ্ধে তুলল মারধরের অভিযোগও।
বৃহস্পতিবার রাতের ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করেছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন পিডিএসএফ। শুক্রবার দুপুরে ওই অভিযোগ দায়ের হতেই ওই সংগঠনের কিছু কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে পাল্টা এফআইআর করেছে টিএমসিপিও। গোটা ঘটনায় নাম জড়িয়েছে বিশ্বভারতী অধ্যাপকসভার সম্পাদক তথা তৃণমূলের শিক্ষক নেতা গৌতম সাহার। পুলিশ জানিয়েছে, দু’টি অভিযোগই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্বভারতী ও পুলিশ সূত্রের খবর, ভগৎ সিংহ-সুখদেব-রাজদীপের স্মরণে বৃহস্পতিবার দুপুরে শান্তিনিকেতনের ফাস্ট গেট লাগোয়া এলাকায় শহিদ দিবস পালনের কর্মসূচি নিয়েছিল পিডিএফএফ। ওই সময়ে সমবায় সমিতি ও ব্যাঙ্কের দেওয়ালে অনুষ্ঠানের পোস্টার দেওয়াকে কেন্দ্র করে পিডিএসএফ কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কিছু তৃণমূল ও টিএমসিপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বচসা হয়। পিডিএসএফ কর্মী তথা বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফারহান হোসেন খান এ দিন দাবি করেন, তখনকার মতো বিষয়টি মিটে গেলেও টিএমসিপি নেতা রাজীব ঝাঁ এবং শিক্ষাসত্রের শিক্ষক গৌতম সাহা বহিরাগতদের জুটিয়ে এনে সন্ধ্যায় বিদ্যাভবন ছাত্রাবাসে ঢুকে সংগঠনের এক ছাত্রকে বেধড়ক মারধর করেন। ফারহানের আরও অভিযোগ, ‘‘এর কিছু পরেই ডাকঘর লাগোয়া এলাকায় দেখতে পেয়ে ওঁরা আমাকেও মারধর করে। মারধর করা হয় লাগোয়া এলাকায় থাকা আমাদের কর্মী অভ্রনীল সাহাকেও।’’
জখম সকলে রাতেই বিশ্বভারতীর পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিজেদের প্রাথমিক চিকিৎসা করান। অভ্রনীলদের দাবি, টিএমসিপি-র লোকজন তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও কর্মসূচি করা যাবে না বলে শাসিয়েছে। এমনকী, কথা না শুনলে প্রাণে মারার হুমকিও দিয়েছে। এ দিনই এসএফআই, ইউএসডিএফ-সহ অন্যান্য বাম ছাত্র সংগঠনগুলির নেতা-কর্মীদের নেতৃত্বে থানায় গিয়ে অভিযোগ করেছেন ফারহান।
বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, সাম্প্রতিক কালে বিশ্বভারতীতে বেশ কিছু বাম ছাত্র সংগঠন নানা কর্মসূচি নিচ্ছে। নানা দাবিদাওয়া জানিয়ে ক্যাম্পাসে সক্রিয় টিএমসিপিও। ফারহানদের দাবি, বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর সক্রিয়তা দেখে শঙ্কিত শাসকদলের সংগঠন। তার জেরেই বৃহস্পতিবারের ঘটনা। পিডিএসএফ-এর তোলা যাবতীয় অভিযোগ যদিও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত টিএমসিপি নেতা রাজীব ঝাঁ। রাজীবের দাবি, ‘‘ওরাই আমাদের কিছু কর্মী-সমর্থককে ওঁরাই মারধর করে জোর করে পোস্টার দিয়েছে। এমনকী, ব্যাঙ্কের সম্পাদক তথা শিক্ষক গৌতম সাহাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।’’ থানায় অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি তাঁরা ঘটনার কথা লিখিত ভাবে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপনকুমার দত্তকেও জানিয়েছেন। পিডিএসএফের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গৌতমবাবু কেবল বলেন, ‘‘হাস্যকর অভিযোগ।’’
স্বপনবাবু বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই ছাত্রাবাসে কোনও বহিরাগতেরা ঢুকেছিল কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ দিন থেকেই ওই হস্টেলে রাত ৯টার পর থেকে পরিচয়পত্র ছাড়াও কাউকে ঢুকতে না দেওয়ার নির্দেশ জারি করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy