ধুলিসাৎ: শ্যামপুর জুনিয়র হাইস্কুল।—নিজস্ব চিত্র
আচমকাই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল স্কুলের দোতলার গোটা বারান্দা! তবে গরমের ছুটি থাকায় কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। মাত্র চার বছর আগেই ওই নতুন স্কুল ভবন তৈরি হয়েছে।
ঘটনাটি হুড়া ব্লকের শ্যামপুর জুনিয়র হাইস্কুলের। সোমবার সকাল সাড়ে নটা নাগাদ নবনির্মিত এই স্কুল বাড়ির দোতলার বারান্দা সশব্দে ভেঙে পড়ে। প্রচন্ড শব্দে গ্রামের লোকজন স্কুলের কাছে ছুটে এসে দেখেন, দোতলার বারান্দা, এক তলার স্তম্ভ সবই ভেঙে পড়েছে। জেলা সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই জুনিয়র হাইস্কুলটি ২০১২-’১৩ শিক্ষাবর্ষে অনুমোদন পায়। অনুমোদনের পরে স্কুল ভবন নির্মাণের জন্য প্রথম দফায় ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার এবং দ্বিতীয় দফায় ৪ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা বরাদ্দ করে জেলা সর্বশিক্ষা মিশন। স্কুলটির বিদায়ী টিচার-ইন-চার্জ গুরুপদ পতি জানিয়েছেন, স্কুল নির্মাণের কাজ দেখভালের জন্য স্থানীয় মানুষজনকে নিয়েই একটি কমিটি তৈরি হয়েছিল। তা ছাড়া, ব্লক প্রশাসনের ইঞ্জিনিয়ারও কাজ ঠিকঠাক হচ্ছে কিনা, তা দেখে যেতেন। ২০১৩ সালের মার্চ নাগাদ কাজ শুরু হয়। নির্মাণ কাজ শেষ হয় ওই বছরেরই নভেম্বরে।
নতুন স্কুলবাড়ি তৈরি হওয়ার মাত্র সাড়ে তিন বছরের ব্যবধানে এ ভাবে বারান্দা ভেঙে পড়ায় নির্মাণের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নির্মাণের কাজে কোনও গাফিলতি ছিল কিনা, তা তদন্ত করে দেখার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। গ্রামবাসীরও অভিযোগ, স্কুল ভবনের নির্মাণকাজ শেষ না করেই পঠন-পাঠন শুরু করে দেওয়া হয়েছিল। এক তলার বারান্দায় ইটের পিলারে পলেস্তরা ছিল না। কোথাও ইটও ক্ষয়েও গিয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দা তপানন্দ বাউরি বলছিলেন, ‘‘যদি স্কুল চলার সময়ে এই ঘটনা ঘটত, তাহলে কী যে হত, ভাবতেও শিউরে উঠছি! আমরাও অবসর সময়ে স্কুলের বারান্দায় বসি। আজই আমার ছেলে বারান্দা ভেঙে পড়ার মিনিট দুয়েক আগেও ওখানে বসেছিল।’’ তাঁর আরও দাবি, পিলারে দু-এক জায়গায় ফাটলও ধরেছিল। কিন্তু তা মেরামতের বন্দোবস্ত করা হয়নি।
স্কুলবাড়ির স্তম্ভে যে ফাটল ছিল, তা গত ডিসেম্বরে তিনিও লক্ষ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন গুরুপদবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘তবে এ ভাবে ভেঙে পড়তে পারে, তা ভাবা যায়নি।’’ বর্তমান টিচার-ইন-চার্জ সুভাষ পাল বলেন, ‘‘আচমকা গোটা বারান্দাটা কী ভাবে ভেঙে পড়ল বুঝতে পারছি না। আমরা নিজেরা অফিসে থাকি। এখন পড়ুয়া নেই বলে রক্ষে। না হলে বড় বিপদ হতে পারত।’’
যদিও বর্তমান শিক্ষাবর্ষে অল্প কয়েক জন পড়ুয়া থাকায় তাঁদের অন্য স্কুলে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল। চলতি শিক্ষাবর্ষে কোনও পড়ুয়াই ছিল না বলে জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রেও জানা গিয়েছে। বিডিও (হুড়া) অমিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘অন্য কর্মসূচি থাকায় ওই স্কুলে এ দিন যেতে পারিনি। মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে গিয়ে খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেব।’’
জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিক বিকাশচন্দ্র মজুমদারও ঘটনার কথা জেনেছেন। তিনি জানান, নির্মাণের কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। কিন্তু, কেন বারান্দা ভেঙে পড়ল, তার তদন্ত হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy