Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্লাস্টিক মুক্তির পথে হাঁটছে বাঁকুড়া পুরসভা

শহরের বাসিন্দাদের ‌ঝাড়া হাতে বাজার গিয়ে এটা সেটা কিনে পলিথিনে ঝুলিয়ে বাড়ি ফেরার অভ্যাসে ছেদ পড়তে শুরু করেছে। সৌজন্যে বাঁকুড়া পুরসভা। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে শহরকে প্লাস্টিক মুক্ত করতে গত ডিসেম্বরে লাগাতার প্রচার চালিয়েছিল পুরসভা।

দোকানে সচেতনতা প্রচার পুরসভার।—নিজস্ব চিত্র।

দোকানে সচেতনতা প্রচার পুরসভার।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৫২
Share: Save:

শহরের বাসিন্দাদের ‌ঝাড়া হাতে বাজার গিয়ে এটা সেটা কিনে পলিথিনে ঝুলিয়ে বাড়ি ফেরার অভ্যাসে ছেদ পড়তে শুরু করেছে। সৌজন্যে বাঁকুড়া পুরসভা। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে শহরকে প্লাস্টিক মুক্ত করতে গত ডিসেম্বরে লাগাতার প্রচার চালিয়েছিল পুরসভা। সেই আহ্বানে এ বারে সাড়া দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। শহরের কোনও ব্যবসায়ীই প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করছেন না। অন্তত প্রকাশ্যে। ক্রেতারাও হাতে থলে নিয়ে বাজারে যাওয়া অভ্যাস করেছেন।

বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেন, “পুরসভার আহ্বানে ব্যবসায়ীরা সাড়া দিয়েছেন বলে তাঁদের ধন্যবাদ। প্লাস্টিক ব্যবহার করা যেমন অস্বাস্থ্যকর, তেমনই এর থেকে শহর নোংরাও হয়। স্বছ্ব বাঁকুড়া গড়ার ক্ষেত্রে প্লাস্টিক বর্জন করা একটা বড় পদক্ষেপ।” ঘটনা হল, প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে গত কয়েক বছর ধরেই পুরসভাকে প্রচারে নামতে দেখা গিয়েছে। তবে ব্যাবসায়ীদের দিক থেকে বিশেষ সাড়া মেলেনি এর আগে। এ বারে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের আশঙ্কা থেকেই ছবিটা বদলাতে শুরু করেছে। বাঁকুড়ার রানিগঞ্জ মোড় সংলগ্ন এক মুদি দোকানির কথায়, “জরিমানা হলে মহা ঝকমারি। আমি ঝামেলায় জড়াতে চাই না।” শহরের বড়কালীতলা এলাকার মুদি দোকানি জনার্দন দত্ত, রানিগঞ্জ মোড়ের মিষ্টি ব্যবসায়ী জয়ন্ত বরাট, বৃন্দাবন বরাটদের কথায়, “প্লাসটিক ব্যবহার করলে পুরসভা কড়া ব্যবস্থা নেবে জানিয়েছে। তাই কাগজের ঠোঙা ব্যবহার করছি।” পুরপ্রধানও জানিয়েছেন, প্রয়োজনে কড়া হবেন তাঁরা। তবে আপাতত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে প্লাস্টিক ব্যবহারের ক্ষতি নিয়ে তাঁদের বোঝানোর পন্থা নিয়েছে পুরসভা।

প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ হয়ে পড়ায় প্রাথমিক ভাবে কিছুটা সমস্যার মধ্যে পড়লেও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন নাগরিকেরা। বাঁকুড়া শহরের নুনগোলা রোডের বাসিন্দা প্রবীর ঘোষ, পাঠকপাড়ার বাসিন্দা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়দের কথায়, “জিনিসপত্র কিনতে গিয়ে একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে সত্যিই যদি প্লাসটিক মুক্ত শহর গড়া যায় তাহলে সব দিক দিয়েই ভাল।”

এ দিকে শহরে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ হয়ে পড়ায় ঠোঙা ব্যবসার বাজারে জোয়ার এসেছে। শহরের রামপুর এলাকার ঠোঙা ব্যবসায়ী বিভাস ভট্টাচার্যের কথায়, “মাসে যেখানে ২০ কিলোগ্রাম ঠোঙা বেচতাম সেখানে এই মাসে সেখানে ৫০ কিলোগ্রাম বিক্রি করে ফেলেছি।” রানিগঞ্জ মোড়ের বাসিন্দা গীতা প্রামানিক গত পাঁচ বছর ধরে বাড়িতে ঠোঙা বানিয়ে বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করছেন। তাঁর কথায়, “এক ঝটকায় ঠোঙার চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। দোকানদারদের চাহিদা মেটাতে হিমসিম খাচ্ছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Municipality Plastics Plastic free Society
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE