Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

এগোল গেরুয়া শিবির,কংগ্রেস ৩ থেকে শূন্য

কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মির জবাব, ‘‘আমরা এটাকে ভোট হিসেবে দেখছি না। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সমাজবিরোধীরা কে, কেন বুথে কত বেশি ভোট লুঠ করতে পারল তার প্রতিযোগিতা হয়েছে মাত্র। এই ভোটে হেরেছে গণতন্ত্র।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
নলহাটি শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৭ ০২:০৬
Share: Save:

বাম-কংগ্রেস প্রার্থীদের পিছনে ফেলে নলহাটিতেও দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল গেরুয়া শিবির।

নলহাটির ভোটে ১৬টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতেই প্রার্থী দিতে পেরে খুশি হয়েছিল বিজেপি। ভোট প্রচারে এসে নলহাটি থেকেই তৃণমূলকে উৎখাত করার ডাক দিয়েছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু, ১৬টির মধ্যে ১৪টি আসন পেয়ে নলহাটিতে আরও বেশি করে জাঁকিয়ে বসেছে তৃণমূল। তবে সবুজ-ঝড়ে একেবারে উড়ে যায়নি গেরুয়া শিবির। দিনের শেষে ফল বলছে, কংগ্রেস-সিপিএমের প্রার্থীদের পিছনে ফেলে নলহাটির ৫টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি। তবে হাতছাড়া হয়েছে জেতা ওয়ার্ড।

এই উত্থানকে হেলাফেলা করছে না তৃণমূল শিবির। এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও বলেন ‘‘এটা হওয়ার ছিল না। কেন হল ২৭ তারিখের জেলা কমিটির বৈঠকে সেটাও দেখব।’’

পুরভোটের ফল বলছে, এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে কংগ্রেসের। ২০১২ সালেও কংগ্রেসের জেতা তিনটি আসন ছিল নলহাটিতে। ২০০২, ২০০৭ সালে টানা দু’বার পুরবোর্ডও ছিল। সেই কংগ্রেস এ বার একটি আসনও পায়নি। অথচ প্রচারে কোনও খামতি ছিল না। সভা করে গিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। কেন নলহাটিও কংগ্রেসকে ফিরিয়ে দিল?

কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মির জবাব, ‘‘আমরা এটাকে ভোট হিসেবে দেখছি না। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সমাজবিরোধীরা কে, কেন বুথে কত বেশি ভোট লুঠ করতে পারল তার প্রতিযোগিতা হয়েছে মাত্র। এই ভোটে হেরেছে গণতন্ত্র।’’

একনজরে ফলাফল

২০১২ ২০১৭*


তৃণমূল ১০ • তৃণমূল ১৪


কংগ্রেস ৩ • নির্দল ১


বিজেপি ১ • ফব ১


ফব ১

* এ বার ওয়ার্ড বেড়ে হয়েছে ১৬

ধারাবাহিক রক্তক্ষরণ চলছে সিপিএমেও। সবেধন নীলমণি ১ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে জিতেছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী। সেই জয়কে সামনে রেখেই নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে মরিয়া সিপিএম। নলহাটি শহর এলাকায় অবশ্য বহু দিন ধরেই বামফ্রন্ট প্রার্থীরা একটি কিংবা দু’টি ওয়ার্ড ছাড়া জয়ী হতে পারেন না।

তবে, বিজেপির উত্থানে অবাক নন অনেকেই। তাঁদের ব্যাখ্যা, জেলার বেশ কিছু জায়গাতেই শক্ত মাটি রয়েছে বিজেপি-র। সেই সব জায়গায় প্রধান প্রতিপক্ষও বিজেপি। সেই ছবি নলহাটিতে দেখা গেলেও নতুন কি! বাম-কংগ্রেস আসন সমঝোতা করেও যে লাভ করতে পারেনি ভোটের ফলেই তার প্রমাণ। সিপিএম দীর্ঘ দিনের দখলে থাকা ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে হেরেছে। ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তৃণমূল এ বার তাঁকে প্রার্থী করে ওয়ার্ড নিজেদের দখলে নিয়ে এল।

সিপিএম নেতাদের একটা অংশের অবশ্য প্রশ্ন, যে ভোটের ফল প্রকাশ হয়েছে, সেই রবিবার ভোট কি আদৌ হয়েছে? তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, রাখি-বাহিনীর দাপটের কথা। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ভোট দানে বাধা দেওয়ার কথা। হুমকির কথা। সিপিএমের এক নেতার কথায়, ‘‘সে দিন গা-জোয়ারি করে ভোট হয়নি, এটা কোনও তৃণমূল কর্মী বুক ঠুকে বলতে পারবে?’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদার কথায়, ‘‘একটি ওয়ার্ড তো পেয়েছি। তাই নলহাটিবাসীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কারণ, তাঁরা ভোট-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন।’’

বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, ভোটের ফল আরও ভাল হতে পারত। কর্মীর অভাবেই সেটা হয়নি। তাঁরাও ভোটের দিনে তৃণমূলের দখলদারি মনোভাবের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘যে হারে সন্ত্রাস হয়েছে তাতে ছ’টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থান কম কথা নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE