Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রাথমিকে ঘুষ, ধৃতদের জেলহাজত

প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে, প্রতারণার অভিযোগে চার ধৃতের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতের নির্দেশ দিলেন বোলপুরের এসিজেএম রাজেশ গুহরায়। বুধবারের ঘটনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৭ ০১:১৪
Share: Save:

প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে, প্রতারণার অভিযোগে চার ধৃতের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতের নির্দেশ দিলেন বোলপুরের এসিজেএম রাজেশ গুহরায়। বুধবারের ঘটনা।

সরকারি আইনজীবী শান্তনু মল্লিক বলেন, “সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের পরে এই মামলায় এ দিন চার জনকে আদালতে তোলে পুলিশ। তাদের জামিনের বিরোধিতা করেছি। বোলপুরের এসিজেএম রাজেশ গুহরায়, ধৃতদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।”

তিনি জানান, পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করে, ধৃতদের কথায় বহু নথি, নকল নথিপত্র, নকল শীলমোহর-সহ একাধিক জিনিষ সিজ হয়েছে। এই মামলার কেস ডায়েরি আদালতে জমা দেওয়া নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

চার অভিযুক্তকে ফের চলতি মাসের ২৯ তারিখ আদালতে তোলা হবে। প্রাথমিক শিক্ষকতার চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে পাঁচ জনের নাম-সহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। এই মর্মে লাভপুর থানার মামুদপুরের বাসিন্দা কমল কুমার পাল চলতি মাসের ১৪ তারিখ বোলপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

এলাকার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় কর্মরত কমলবাবু এ দিন বলেন, ‘‘ওই সংস্থায় কর্মরত অমল এরোল নামে বোলপুরর বাসিন্দা, এক সহকর্মী টাকার বিনিময়ে প্রাথমিক চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। ওই প্রস্তাবের জেরে, ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসের মধ্যে কাঞ্চন মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির আকাউন্টে ৭০ হাজার টাকা জমা দিয়েছি।

২০১৫ সালের ২৭ মে তালিকায় নাম উঠেছে দাবি জানিয়ে, সাত লক্ষ টাকা দাবি করে। ২০১৫ সালের জুন থেকে জুলাই মাসের মধ্যে, জমি, মা এবং স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে সাত লক্ষ টাকা তাদের দিয়েছি।’’

তাঁর দাবি, ‘‘শান্তিনিকেতনের প্রান্তিক এলাকায় তাঁদের এক দফতর রয়েছে দাবি করে ওখানে নিয়ে যায়। ওখানে তাদের বাকি টাকা দিয়েছি। ইতিমধ্যেই তারা কলকাতা বিকাশ ভবন নিয়ে গিয়ে জাল ইন্টারভিউ চিঠি এবং কাজে জয়েনিং চিঠি ধরায়। দুর্গাপুরে কাজে যোগ দিতে গিয়ে জানতে পারি প্রতারণার শিকার হয়েছি।’’

স্থানীয় লাভপুর কলেজের বাণিজ্যে স্নাতক চল্লিশোর্ধ কমলবাবুর আরও দাবি, শুধু তিনি নন, স্থানীয় পার্থ সাহা, তীর্থেন্দু মণ্ডল, চিরঞ্জিত কোনার-সহ এমন আরও অনেকের সঙ্গেও একই ভাবে প্রতারণা করেছে ওই চক্র। অবিলম্বে ওই চক্রের হদিস করে, টাকা ফেরতের আর্জিতে শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ জানান কমলবাবু। এরপরেই পুলিশ নড়েচড়ে বসে। বোলপুর ও গুসকরা এলাকায় খোঁজ মেলে কারও কারও।

এ দিকে প্রতারণা, জাল নথি বানানো, জাল নথিকে আসল বলে চালানো-সহ একাধিক অভিযোগে স্থানীয় চার অভিযুক্তদের ওই রাতেই গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার গুরুত্ব বুঝে বোলপুরের সি আই কল্যাণ প্রসাদ মিত্রকে তদন্তকারী অফিসার করে জেলা পুলিশ।

চলতি মাসের পনেরো তারিখ তাদের আদালতে তোলে পুলিশ। ধৃত চার জনের মধ্যে তিন জন কে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ৭ দিন নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন বিচারকের কাছে জানান মামলার তদন্তকারী অফিসার।

ধৃতদের অন্যতম বোলপুরের মুলুকের বাসিন্দা শ্যামসুন্দর বেজের পক্ষে আইনজীবী সৈকত হাটি এ দিন জামিনের আবেদন জানান। সৈকত বাবু বলেন, “আমার মক্কেল নির্দোষ। আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলাম। বিচারক জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Prison custody Bribe
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE