Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ইদের সকালে খুন লাভপুরে, ধৃত ব্যবসায়ী

ইদের সকালে এক ব্যবসায়ীকে খুনের অভিযোগ উঠল আর এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম আনোয়ার শেখ ওরফে রিপন শেখ (২৪)। তাঁর বাড়ি লাভপুরের বুনিয়াডাঙা গ্রামে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
লাভপুর শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৭ ০২:২৮
Share: Save:

কিছুক্ষণ আগেই মসজিদে ইদের বিশেষ নমাজ শেষ হয়েছে। চলছে আলিঙ্গন, মিষ্টিমুখ। সেজেগুজে বেরোতে শুরু করেছে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা। তারই মাঝে হঠাৎ ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ চিৎকারে উৎসবের মুহূর্তের ছন্দপতন! একটু ধাতস্থ হতেই সিউড়ি-কাটোয়া সড়ক লাগোয়া লাভপুর বিডিও পাড়ার লোকজন দেখলেন পড়ে রয়েছে এক যুবকের দেহ।

ইদের সকালে এক ব্যবসায়ীকে খুনের অভিযোগ উঠল আর এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম আনোয়ার শেখ ওরফে রিপন শেখ (২৪)। তাঁর বাড়ি লাভপুরের বুনিয়াডাঙা গ্রামে। লাভপুর বিডিও অফিস সংলগ্ন এলাকায় আমোদপুর লাগোয়া কল্যাণপুরের বাসিন্দা শেখ মুস্তাকের স্টিলের আসবাবপত্র তৈরির ব্যবসা রয়েছে। পাশেই ওই গ্রামেরই মিহিরলাল শেখের রয়েছে ভাঙাচোরা লোহা কেনাবেচার ব্যবসা। মিহিরলাল নিহতের ভগ্নিপতি। ভগ্নিপতির ব্যবসা অংশীদার ছিল রিপনেরও।

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মালপত্র রাখা, বেশি জায়গা ব্যবহার-সহ নানা বিষয়ে মুস্তাকের সঙ্গে মিহিরলালের বিরোধ লেগেই ছিল। দু’পক্ষের বিরুদ্ধেই দোকানে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে একাধিকবার। রবিবারও একই কারণে দু’পক্ষের বিরোধ বাঁধে। এ দিন ফের তা মাথাচাড়া দেয়। ফোনে ভগ্নিপতির থেকে ঝামেলার খবর পেয়ে মোটরবাইকে লাভপুর পৌঁছোন রিপন। অভিযোগ, তাঁকে দেখেই খেপে যান মুস্তাক। তিনি দোকান থেকে ভোজালি নিয়ে সটান রিপনের পেটে ঢুকিয়ে দেন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে ভোজালির কোপে আহত হন মিহিরলালও। তাঁকে প্রথমে লাভপুর গ্রামীণ হাসপাতাল, পরে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আর রিপনকে লাভপুর হাসপাতালে মৃত বলে জানানো হয়।

লাভপুর বিডিও অফিস সংলগ্ন এলাকা এমনিতেই জনবহুল। সোমবার, ইদের দিন বলে ভিড়টা তুলনায় বেশিই ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, ইদের নামাজ শেষ হতেই এক যুবককে তাঁরা প্রচণ্ড বেগে সিউড়ি-কাটোয়া বাইক চালিয়ে সড়ক লাগোয়া ওই লোহার ভাঙাচোরা কেনাবেচার দোকানের সামনে দাঁড়াতে দেখেন। ওই যুবক পৌঁছতেই সপ্তমে ওঠে চিৎকার-চেঁচামেচি। তারপরই ওই ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ চিৎকার। প্রত্যক্ষদর্শীদের এক জন বলেন, ‘‘হঠাৎ দেখি মিহিরলাল ছুটে পালানোর চেষ্টা করছে। আর থানার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছে শেখ মুস্তাক। আর একটু আগে যে দুদ্দার গতিতে ছুটে এল, সেই রিপনের দেহ পড়ে রয়েছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে সাদা জামা।’’ তা জেনে তখনই উপস্থিত সিভিক ভলান্টিয়াররা মুস্তাককে ধরে ফেলেন। উপস্থিত কারও দাবি, খুনের কথা কবুল করতেই মুস্তাক থানার দিকে যাচ্ছিলেন।

রিপনের মামাতো ভাই বকিয়াতুল্লা জানান, ব্যবসায়িক কারণে দু’পক্ষের বিবাদ লেগেই ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘তখন রিপন সবে ইদের নামাজ সেরে উঠেছে। আর তখনই ফোনটা আসে। ঘুরে আসছি বলে মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়ে যায়। কিন্তু ঘুরে আর ওর আসা হল না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arrest Murder Businessman ইদ খুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE