বিষ্ণুপুরের মাধবগঞ্জে রাধা মদনগোপাল মন্দির প্রাঙ্গণে রথের রশি টানা।
আবহওয়া ছিল ভালই। রবিবার রথযাত্রায় মেতে উঠলেন দুই জেলার মানুষজন।
এ দিন পুরুলিয়া, হুড়া, কাশীপুর, ঝালদা, বলরামপুর— সর্বত্র মানুষের ঢল নামে। হুড়া সর্বজনীন রথযাত্রা কমিটির উদ্যোগে গত বছর থেকে শুরু হয়ে রথযাত্রা মহোৎসব। এ বছর সেখানে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো ও অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া প্রমুখ রথের দড়িতে টান দেন। রথযাত্রা কমিটির মুখপাত্র গৌতম কুণ্ডু জানান, ইসকনের শিল্পীদের দিয়ে গত বছর ৫০ ফুট উচ্চতার এই রথ নির্মাণ করা হয়েছিল।
পুরুলিয়া শহরের শতবর্ষ প্রাচীন মনোমোহিনী বৈষ্ণবীর রথ দেখতেও মানুষের ঢল নামে। পঞ্চকোট রাজপরিবারের সন্তান রামনারায়ণ সিংহ দেও নিজে সঙ্গীতচর্চা করতেন। সেই সূত্রেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে ওঠে মণি বাইজির। বেনারস থেকে থেকে পুরুলিয়ার চকবাজার এলাকায় বসবাস শুরু করেন তিনি। পরে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত হয়ে মনোমোহিনী বৈষ্ণবী নাম নিয়ে চকবাজার এলাকাতেই রাধা গোবিন্দের মন্দির গড়ে তোলেন। তিনিই পুরুলিয়া শহরে রথযাত্রার প্রচলন করেছিলেন। প্রথা মেনে এ দিন সেই রথ শহরের পথে নেমেছে।
পঞ্চাকোট রাজবংশের শেষ রাজধানী কাশীপুর এবং প্রথম রাজধানী ঝালদাতেও এ দিন রথের রশিতে টান দিয়েছেন ভক্তরা। ঝালদা রাজপরিবার থেকে প্রথা মেনে নাড়ুগোপালের বিগ্রহ সর্বজনীন রথে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। রথ উপলক্ষে ভিড় হয়েছিল বলরামপুরেও।
আদ্রার উত্তর প্রান্তের অগ্রদূতের জগন্নাথ মন্দির থেকে একটি রথ বেরোয়। দক্ষিণ প্রান্তের জগন্নাথ মন্দির থেকে আর একটি রথ বেরিয়ে রেল শহর পরিক্রমা করেছে। রঘুনাথপুরে বড় রথযাত্রা হযেছে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের উদ্যোগে। এ দিন বিকেলে সঙ্ঘের কার্যালয় থেকে রথ বেরিয়ে রঘুনাথপুরের বিভিন্ন এলাকা পরিক্রমা করেছে।
রবিবার সকালে বিষ্ণুপুরে মাধবগঞ্জে রথের রশি টানতে রাধামদনগোপাল মন্দির প্রাঙ্গণে বহু মানুষের সমাগম হয়। মন্দির থেকে নারায়ণ শীলা শোভাযাত্রা করে নিয়ে এসে রথে বসিয়ে আরতি ও বিশেষ পুজো করা হয়।
মাধবগঞ্জ এগারো পাড়া ষোলো আনা কমিটির সম্পাদক মিলন রক্ষিত বলেন, ‘‘আসানসোল, দুর্গাপুর, রানিগঞ্জ থেকে বাজনার দল আসছে। থাকছে চন্দননগরের আলো।’’ রবিবার থেকে মন্দির চত্বরে মেলা বসেছে। চলবে উল্টো রথের পরের দিন পর্যন্ত। আটপাড়া ষোলো আনা কমিটি কৃষ্ণগঞ্জে রথের রশি টানেন বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায়।
কৃষ্ণগঞ্জ ষোলো আনা কমিটির সভাপতি রবিলোচন দে বলেন, ‘‘উল্টো রথ পর্যন্ত রাধালালজিউ মন্দির প্রাঙ্গণে সাস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy