Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ইদের বাজারেও টেক্কা সেই বাহুবলীর

সিউড়ির বাসিন্দা মিসবাউল হক, রৌউশন জয়শোয়ালরা জানালেন, নতুন দোকান। বহু মানুষই আসছেন। তবে কাপড়ের মান আরও ভাল করা দরকার। সেই তুলনায় বোলপুরের একটি দোকানের শাখা সিউড়িতে নতুন খুলেছে ওদের ভিড় তুলনামূলক ভাবে কম হলেও কাপড়ের মান বেশ ভাল।

বিকিকিনি: রামপুরহাটে বুধবার। ছবি: সব্যাসাচী ইসলাম।

বিকিকিনি: রামপুরহাটে বুধবার। ছবি: সব্যাসাচী ইসলাম।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৭ ১৩:০০
Share: Save:

হাতে মাত্র পাঁচটা দিন। তার মাঝে একটা সাপ্তাহিক ছুটির দিন। ভ্যাপসা গরমের মাঝে আকাশে মেঘের ঘনঘটা। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত। এত সবের মধ্যেই এ বারে রমজান মাস শুরু হতেই শহরের বড় বড় বিপণীতে ইদের বাজার শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই বাজারে এ বার সবাইকে টেক্কা দিচ্ছে বাহুবলী।

বাজারে ঘুরছে বাহুবলি শর্ট ড্রেস অর্থাৎ লং কুর্তি সঙ্গে লেগিংস, শাড়ি, সালোয়ার। সেই কিনতেই ভিড় সিউড়ি থেকে নলহাটি, রামপুরহাট, বোলপুরে। গত বছর ইদের বাজার শুরুর আগেই পশ্চিমবঙ্গের বড় বড় শহরের মতো রামপুরহাটে একটি বড় কাপড়ের দোকান খুলেছিল। এ বারেও রমজান মাস শুরুর দিন কয়েক আগেই সিউড়িতে ওই একই দোকানের শাখা খুলেছে। গতবছর রামপুরহাটের মতো এ বারে সিউড়িতে নতুন দোকানে খরিদ্দারদের কিছুটা হলেও শহরের অন্য দোকানের তুলনায় ভিড় টেনে নিয়েছে।

সিউড়ির বাসিন্দা মিসবাউল হক, রৌউশন জয়শোয়ালরা জানালেন, নতুন দোকান। বহু মানুষই আসছেন। তবে কাপড়ের মান আরও ভাল করা দরকার। সেই তুলনায় বোলপুরের একটি দোকানের শাখা সিউড়িতে নতুন খুলেছে ওদের ভিড় তুলনামূলক ভাবে কম হলেও কাপড়ের মান বেশ ভাল। রামপুরহাটের বস্ত্র ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক মহম্মদ সরিফউদ্দিন বলেন, ‘‘মুরারইয়ের প্রত্যন্ত গ্রামের একটি খরিদ্দার রামপুরহাট শহরে নতুন দোকানগুলিতে জিনসের প্যান্ট কেনার সঙ্গে বাজার থেকে অন্য কাপড় কিনেও যাচ্ছে।’’

রামপুরহাট, সিউড়ি, বোলপুর, সাঁইথিয়া, নলহাটি, দুবরাজপুর— সর্বত্রই ইদের বাজার রমজান মাসের শুরু থেকেই চলছে। তবে গত রবিবার থেকে বাজারে কেনাকাটা বিশেষ করে কাপড়ের দোকানে ভিড় বেশি। বোলপুরের দর্জিপাড়ার এক কিশোরী বলে, ‘‘ছবির মতোই ডিজাইন, রং মিলিয়ে ড্রেস কিনেছি।’’ পাড়ুই থেকে ইদের বাজার করতে এসেছিলেন খাইরুল সেখ। তিনি বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েদের দাবি মেটাতে বাজারে এসেছি। সব দোকানে এখনও বাহুবলী পোশাক আসেনি।’’ বোলপুর চৌরাস্তা লাগোয়া শ্রীনিকেতন রোডের পোশাক বিক্রেতা সুরমান শেখের দোকানে খুব ভিড়। তিনি জানান, এ বার বাহুবলী ড্রেসের চাহিদা রয়েছে। বাহুবলি-মেয়েদের টু পিস পোশাকের খোঁজ করছে বেশি। আবার ছেলেদের বাবু সার্ট, ধুতি পাঞ্জাবির চাহিদা তুঙ্গে। সানিয়া খাতুন, নুরেশা খাতুন, ইমরান শেখের মতো পড়ুয়াদের নিয়ে ঈদের বাজার করতে বেরিয়েছেন রিনা বিবি, চামেলি বিবি, আসমা খাতুনরা। তাঁরা জানান, দিন দুয়েক ধরে মেয়েরা বাহুবলি ড্রেসের জন্য বায়না করছে।

রামপুরহাট, সিউড়ি, বোলপুর সর্বত্রই এ বছরও কিশোরী ও তরুণীদের কারও কারও পছন্দের ড্রেস বাজিরাও মাস্তানি। তবে বাহুবলীই ঢের বিকোচ্ছে বলে জানালেন দোকানদাররা। রামপুরহাট বাজারের এক কাপড়ের দোকানে তারাপীঠ থেকে আসা কিশোরী রুকশানারা খাতুন বলে, ‘‘ইদ মানেই প্রত্যেকেই ব্যতিক্রমী পোশাকে নিজেকে সাজিয়ে তুলতে চেষ্টা করে।’’ অন্য একটি দোকানে মাড়গ্রাম থেকে আসা এক কিশোরকে শহরের আর পাঁচটা দোকান ঘুরে ব্যাঙ্ক রোডের একটি দোকান থেকে জিনসের প্যান্ট কিনতে দেখা গেল। শাহাজাদ হোসেন নামে ওই কিশোর বলে, ‘‘পছন্দের সঙ্গে দাম দুটোর রেঞ্জ মিলিয়ে কিনতে হল।’’

ইদের বাজারে লুঙ্গি কেনার একটা ঢল থাকে। এ বারেও বিভিন্ন এলাকার দোকানদাররা জানাচ্ছেন, ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে লুঙ্গি বিক্রি হচ্ছে। বিকোচ্ছে শেরওয়ানিও। তবে টি-সার্টের সঙ্গে অনেকে এ বার কটন প্যান্ট কিনছে। মহিলাদের ক্ষেত্রে এ বারেও ইদের বাজারে সিনথেটিক শাড়ির দিকে বেশি ঢল। কেউ কেউ বাহুবলী শাড়িও খোঁজ করছেন।

সহপ্রতিবেদন: মহেন্দ্র জেনা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE