Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ডুবল নতুন কজওয়ে, জল ছুঁল সেতুর গলা

বীরভূম জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৪ হাজার কিউসেক জল ছাড়তে হয়েছে খয়রাশোলের হিংলো জলাধার থেকে। তিলপাড়া ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া হয়েছে ৮ হাজার কিউসেক জল।

বানভাসি : ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে শাল নদীর কজওয়ে ছাপিয়ে বইছে জল। জলের তোড় প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে সেতুর ঢালাই অংশও। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

বানভাসি : ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে শাল নদীর কজওয়ে ছাপিয়ে বইছে জল। জলের তোড় প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে সেতুর ঢালাই অংশও। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৭ ০৩:১০
Share: Save:

আগের নীচু, সঙ্কীর্ণ কজওয়ে ভেঙে নতুন ভাবে তৈরি করে এখন স্থায়ী সেতু তৈরিতে হাত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, টানা বৃষ্টি আর বাঁধের ছাড়া জলে নতুন কজওয়ে তো বটেই, নতুন সেতুর প্রায় গলা পর্যন্ত জল উঠে গেল! তাতে শুক্রবার দিনভর ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে আসানসোল–সিউড়ি, আসানসোল-রাজনগর ও খয়রাশোল রুটের বাস চলাচল ব্যহত হল। জলে ভেসেছে শালনদীর উপর থাকা দুবরাজপুরের কুখুটিয়া কজওয়েটিও। তার জেরে আবার বিচ্ছিন্ন হয়েছে দুবরাজপুরের সঙ্গে খয়রাশোলের যোগাযোগ। শুধু খয়রাশোল, দুবরাজপুর নয়। ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় জল জমে, রাস্তা ভেসে বিপর্যস্ত হয়েছে জনজীবন। অবহাওয়া দফতরের হিসাবে, শান্তিনিকেতনে ৮৩ মিলিমিটার, সিউড়ি সংলগ্ন এলাকায় ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

বীরভূম জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৪ হাজার কিউসেক জল ছাড়তে হয়েছে খয়রাশোলের হিংলো জলাধার থেকে। তিলপাড়া ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া হয়েছে ৮ হাজার কিউসেক জল। ভারী বৃষ্টিতে কাঁদর উপচে সিউড়ি ২ ব্লকের কোমা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ল-ডাঙাল আদিবাসী পাড়ার জল ঢুকে পড়ে। সমস্যা এড়াতে ১২০ জন বাসিন্দাকে গ্রামের স্কুলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ভারী বৃষ্টি হতে থাকলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে দেখে শুক্রবার সিউড়িতে বৈঠক করে জেলা প্রাশাসন। ছিলেন জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী, পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার, জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দফতর, সেচ দফতরের আধিকারিকরা।

জেলাশাসক বলেন, ‘‘ভারী বৃষ্টি হয়েছে। শাল ও বক্রেশ্বর নদী দু’টিতে জল বেড়েছে। তাই কজওয়ে উপচেছে। আমরা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি। লাভপুরের লা’ঘাটার সঙ্গে সাময়িক সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবে ধরে নিয়ে ওখানে নৌকা পাঠানো হয়েছে। সিউড়ি ২ এর কোমাতেও বিডিওকে বলে আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দাদের স্কুলে সরানো হয়েছে।’’

শাল নদীতে জল যে বেড়েছে, তা টের পেয়েছেন স্থানীয়রাও। বেশি বৃষ্টি হলেও দুবরাজপুর থেকে কুখুটিয়া যাওয়ার পথে কজওয়ে সাধারণত ডোবে না। কিন্তু, এ দিন সেটাও ভেসেছে। আরও অবাক করার মতো ঘটনা হল, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তৈরি করা ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর নতুন কজওয়ে দুটি। ঘটনা হল, বহু কাল থেকে চলা এই দুর্ভোগ মেটাতেই দুটি নদীতে স্থায়ী সেতু তৈরি করছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। কাজে হাত দেওয়ার আগেই সঙ্কীর্ণ কজওয়ে দুটির পাশে নতুন করে দুটি উঁচু ভাসাপুল তৈরি করে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার। ওই রাস্তা ব্যবহারকারীরা ভেবেছিলেন, এই বর্ষায় অন্তত দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।

ঝুঁকি নিয়ে পার হতে গিয়ে বিপদ এড়াতে এ দিন দুটি কজওয়েতেই পুলিশ মোতায়েন করতে হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Flood দুবরাজপুর Dam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE