মেধাবী: পপি দত্ত। নিজস্ব চিত্র
‘‘বাবার তিন হাজার টাকার চাকরি। ওই আয়ে সংসারই চলে না। এখন পড়ব কী করে জানি না। আপনারা কিছু করতে পারেন?’’
— শনিবার সন্ধ্যায় রামপুরহাট মহকুমা পুলিশের উদ্যোগে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হয়। সেখানে মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে নলহাটি থানার বুজুং গ্রামের পপি দত্ত। এ বছরই বুজুং বিএনএ শিক্ষাপীঠ থেকে ৯৩ শতাংশেরও বেশি পেয়ে পপি উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছে। প্রাপ্ত নম্বর ৪৬৬। মেধাবী মেয়ের এমন আর্জি শুনে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ, প্রশাসনের কর্তারা।
সাহস জুটিয়ে মনের কথাগুলো বলে ফেলার আগে ‘ওপেন ফোরামে’ নিজের পরিচিতি, শখের কথা, ভবিষ্যতে কী হতে চায় সে সব অনুষ্ঠানে আসা অতিথিদের সামনে জানায়। পপির কথায়, ‘‘ঠিক করে রেখেছিলাম এই মঞ্চেই নিজের সমস্যার কথা বলব। না বলতে পারলে তো পড়াশোনাটাই বন্ধ হয়ে যাবে। তাই একরকম মরিয়া ছিলাম।’’ মনের কথা সে প্রথমে জানায় রামপুরহাটের মহকুমাশাসক সুপ্রিয় দাসকে। এরপরই মঞ্চ থেকে নেমে মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও একই আর্জি রাখে। ততক্ষণে চোখের কোণ চিকচিক করছে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে আসা এই মেধাবীর।
এসডিও এবং মন্ত্রী দু’জনেই পপিকে সাহায্যের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন। তাঁরা বলেন, ‘‘নিজেকে অত দুর্বল ভেব না। আমরা তো আছি।’’ ভূগোল অথবা বাংলা নিয়ে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে শিক্ষিকা হতে চায় পপি।
দূরে দাঁড়িয়ে সে সব দেখছিলেন পপির বাবা নির্মল দত্ত। নলহাটিতে একটি হোটেলের ম্যানেজার তিনি। জানালেন, অভাবের মধ্যেও বহু কষ্টে মেয়েকে পড়িয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এ বার তো বাইরে পড়তে যেতে হবে। যাতায়াত খরচ, বাইরে পড়ার খরচ জোগাব কী করে?’’ রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ধৃতিমান সরকার পপির হাতে তুলে দিয়েছেন কিছু আর্থিক সাহায্য। কিন্তু এখনও তো অনেক পথ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy