Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

মহম্মদবাজারে গোষ্ঠী সংঘর্ষ, বোমাবাজিও

কেন হামলা হল, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নুর আলম দাবি করেছেন, বছর দু’য়েক আগে এক কিশোরকে খুন করা হয় তাঁদের গ্রামে। নুর আলমের কথায়, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম নিহত কিশোরের পরিবার সুবিচার পাক। সেই আক্রোশে অভিযুক্ত এবং তাঁদের পক্ষে থাকা লোক জন বারবার আমাদের উপর আক্রমণ করে আসছে। এ দিনও করছে।’’

জখম: সিউড়ি হাসপাতালে নুর আলম। নিজস্ব চিত্র

জখম: সিউড়ি হাসপাতালে নুর আলম। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:১৪
Share: Save:

বিবাদমান দু’গোষ্ঠীর সংঘর্ষ, বোমাবাজিতে বুধবার উত্তপ্ত হল মহম্মদবাজারে সোঁতশাল গ্রাম। জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দু’পক্ষের বেশ কয়েক জন। তবে গোলমালের প্রকৃত কারণ কী, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশের একাংশ। কারও মতে, বিবাদের মূলে পুরানো খুনের মামলা। আবার কারও মত, বিবাদের নেপথ্যে টাকাপয়সার গোলমাল।

মহম্মদবাজার থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেল পর্যন্ত অভিযোগ জমা না পড়লেও দু’পক্ষই ঘটনাটি মৌখিক ভাবে পুলিশকে জানিয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল পৌনে নটা নাগাদ ঘটনার সূত্রপাত রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের দেউচা পাঞ্জাবি সেতুর কাছে। তারপর সেই ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে সোঁতশাল গ্রামে। মারধরের চোটে হাত-পা ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন খাদান মালিক নুর আলম। তিনি বলছেন, ‘‘সোঁতশালের বাসিন্দা হলেও সিউড়ি শহরে থাকি। সকালে গাড়ি নিয়ে পাঁচামির দিকে যাচ্ছিলাম। সেতুর কাছে বেশ কিছু ট্রাক্টরে বালি বোঝাই করে রাস্তা আটকে দেওয়া হয়েছিল। আমি গাড়ি থেকে নামতেই জনা বিশেক লোক আমাকে বেধ়ড়ক মারধর করে। আমার গাড়ির চালকও রেহাই পায়নি।’’

কেন হামলা হল, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নুর আলম দাবি করেছেন, বছর দু’য়েক আগে এক কিশোরকে খুন করা হয় তাঁদের গ্রামে। নুর আলমের কথায়, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম নিহত কিশোরের পরিবার সুবিচার পাক। সেই আক্রোশে অভিযুক্ত এবং তাঁদের পক্ষে থাকা লোক জন বারবার আমাদের উপর আক্রমণ করে আসছে। এ দিনও করছে।’’ হামলা হয়েছে সোঁতশালে গ্রামেও। মহম্মদবাজার পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্যা আর্জিনা বিবি, যিনি সম্পর্কে নুর আলমের আত্মীয় তাঁরও একই বক্তব্য। তিনি বলেন, ‘‘এমন কোনও অন্যায় নেই যা অভিযুক্তেরা করে না। এ দিন নুর আলমকে মারার পর ওরা আমার বাড়িতে চড়াও হয়। বোমাবাজি করে।’’ গত দু’বছর ধরে বারবার এমন আক্রমণ হচ্ছে বলেও তাঁদের অভিযোগ।

যদিও ভিন্ন সুর শেখ মুর্তজা, আবুল ফায়েজদের গলায়। তাঁদের দাবি, ‘‘এ দিনের ঘটনার সঙ্গে খুনের ঘটনা বা সাক্ষীদের ভয় দেখানোর কোনও যোগ নেই। সবই বানানো। আদতে পাথর খাদানে শ্রমিক ইউনিয়নের সেক্রেটারি পদে রয়েছেন নুর আলম। কিন্তু শ্রমিকদের প্রাপ্য প্রায় তিন কোটি টাকার কোনও হিসাব উনি দিচ্ছেন না। এই নিয়ে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে। প্রতিবাদ হচ্ছে।’’ মুর্তজাদের অভিযোগ, এর মধ্যে শেখ তোতা নামে এক জনকে এ দিন সকালে প্রথমে গাড়ি দাঁড় করিয়ে মারধর করেন নুর আলমই। মেরে পা ভেঙে দেন। পরে গ্রামের লোকজন খবর পেয়ে ছুটে এসে প্রতিবাদ করেছে মাত্র। আর্জিনা বাবির বাড়িতে কোনও বোমাবাজি করা হয়নি বলেও তাঁদের দাবি। ফারেজদের দাবি, ‘‘যা বোমা ফাটানোর সেটা ওরা নিজেরাই ফাটিয়েছেন।’’

সে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নুর আলম, আর্জিনা বিবিরা। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

মহম্মদবাজার Mohammad Bazar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE