রামপুরহাটে মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনিক ভবন কোথায় হবে, ক্লাসের জন্য কোথায় ভবন নির্মাণ হবে, পড়ুয়ারাই বা কোথায় থাকবে— এ সমস্ত কিছুর কাজ সরেজমিন খতিয়ে দেখতে রামপুরহাটে নির্মীয়মান মেডিক্যাল কলেজের জায়গা পরিদর্শন করলেন স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তারা। একই সঙ্গে মেডিক্যাল কলেজের ভবন নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার বাস্তুকারদের নিয়ে আলোচনা করলেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।
মুখ্যমন্ত্রী ঘোষিত রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের জায়গা নিয়ে প্রথম দিকে যে সমস্যা ছিল সেই জায়গার সমস্যা এখন আর নেই বলে জানিয়েছেন রামপুরহাট মহকুমা শাসক সুপ্রিয় দাস। বর্তমানে জাতীয় সড়কের ধারে রামপুরহাট হাসপাতাল যেখানে আছে সেখানেই ১৮ একর জায়গার মধ্যে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমান রামপুরহাট হাসপাতালের জরুরী বিভাগ-সহ প্রসূতি বিভাগ, পুরুষ বিভাগ, মহিলা বিভাগ, শিশু বিভাগ, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট, এক্সরে বিভাগ, সিটি স্ক্যান, ডায়ালিসিস বিভাগ— এ সমস্ত কিছুই মেডিক্যাল কলেজের জায়গার মধ্যে পড়ছে। এর পাশাপাশি রামপুরহাট নব নির্মিত সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালও মেডিক্যাল কলেজের জায়গার মধ্যে পড়ছে। মেডিক্যাল কলেজ চালু হওয়ার সময় ওই সমস্ত ভবন থেকে কিছু কিছু ইউনিট নতুন করে গড়ে তোলা হবে। আবার কিছু অংশ ভেঙে ফেলাও হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এ ছাড়াও রামপুরহাট শহর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে চকমণ্ডলা এলাকায় যেখানে রামপুরহাট ১ ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র অবস্থিত সেখানেও মেডিক্যাল কলেজের জন্য ২ একর জায়গা ব্যবহৃত হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
রামপুরহাট মহকুমা শাসক সুপ্রিয় দাস বলেন, ‘‘চকমণ্ডলা এলাকায় ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ২ একর জায়গায় মেডিক্যাল কলেজের জন্য নিযুক্ত টিচিং এবং নন টিচিং স্টাফদের কোয়ার্টার নির্মাণ করা হবে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্মীয়মান রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের জন্য প্রথম পর্যায়ে ১৬৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ধার্য্য করা হয়েছে। ওই টাকায় পড়ুয়াদের দুটি হোস্টেল-সহ একটি ইনটার্ন হোস্টেল, একটি রেসিডেন্ট হোস্টেল নিয়ে হোস্টেল ব্লক তৈরি করা হবে। এ ছাড়াও নার্সিং স্টাফ, টিচিং স্টাফ এবং নন টিচিং স্টাফদের জন্য স্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়াও মেডিক্যাল কলেজের মূল ভবন-সহ অন্যান্য ভবন গুলি নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
মূলত ওই কাজগুলি কোথায় কোথায় কতটুকু জায়গা নিয়ে হবে, ভবনগুলি নির্মাণে কোথায় কোথায় বাধা আছে, কীভাবে সেগুলি দূর করা যাবে— এই সমস্ত কিছুই বৃহস্পতিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তারা সরেজমিন ঘুরে দেখলেন। এবং দায়িত্ব প্রাপ্ত নির্মাণকারী সংস্থার বাস্তুকারদের সঙ্গে আলোচনা করেন তাঁরা।
এ দিন স্বাস্থ্য দফতরের যুগ্ম স্বাস্থ্য অধিকর্তা অতণু রায়, রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সহ আরও অন্যান্য আধিকারিকরা নির্মীয়মান রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শনে আসেন।
স্বাস্থ্য অধিকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা রামপুরহাট জেলা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। রামপুরহাট মহকুমা শাসক সুপ্রিয় দাস। রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ ব্রজেশ্বর মজুমদার। রামপুরহাট হাসপাতালের সুপার সুবোধ কুমার মণ্ডল প্রমুখ।
মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেকেই রামপুরহাটে মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। আশা করা যায় ২০১৯ সালের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রামপুরহাটে মেডিক্যাল কলেজের স্বপ্ন পূরণ হয়ে ক্লাস শুরু হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy