Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

হেতমপুরে ভাঙা পড়ল স্কুলের বিপজ্জনক অংশ

অবশেষে তৎপর হল প্রশাসন। দুবরাজপুরের হেতমপুর রাজ উচ্চ বিদ্যালয় আসার পথে শতাব্দী প্রাচীন জীর্ণ ফাটল ধরা যে সুড়ঙ্গপথকে ঘিরে আতঙ্কে ছিলেন শিক্ষক থেকে পড়ুয়া— ভেঙে ফেলা হল তার ছাদ। ব্লক প্রশাসনের নির্দেশে সম্প্রতি এই সম্পন্ন করল স্থানীয় পঞ্চায়েত।

পঞ্চায়েতের তত্ত্বাবধানে ভাঙা হচ্ছে ছাদ। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

পঞ্চায়েতের তত্ত্বাবধানে ভাঙা হচ্ছে ছাদ। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:১৭
Share: Save:

অবশেষে তৎপর হল প্রশাসন। দুবরাজপুরের হেতমপুর রাজ উচ্চ বিদ্যালয় আসার পথে শতাব্দী প্রাচীন জীর্ণ ফাটল ধরা যে সুড়ঙ্গপথকে ঘিরে আতঙ্কে ছিলেন শিক্ষক থেকে পড়ুয়া— ভেঙে ফেলা হল তার ছাদ। ব্লক প্রশাসনের নির্দেশে সম্প্রতি এই সম্পন্ন করল স্থানীয় পঞ্চায়েত।

প্রসঙ্গত, ১৯৫৯ সালে হেতমপুর কৃষ্ণনগর কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে রাধাবল্লভ মন্দির সংলগ্ন হেতমপুর রাজাদের আদি রাজবাড়িতেই (আনুমানিক ২৫০ বছরের প্রাচীন) উঠে আসে রাজ উচ্চ বিদ্যালয়। কিন্তু স্কুলে আসার পথে স্কুলভবনের মধ্যে থাকা ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সুড়ঙ্গপথই বছরখানেক ধরে আতঙ্ক তৈরি করেছিল। সুড়ঙ্গের ছাদ থেকে প্রায় সময়ই খসে পড়ছিল টালি। নুইয়ে পড়েছিল কড়ি বর্গা। আতঙ্কের কারণ ছিল, যে কোনও মুহূর্তে আস্ত নির্মাণটাই যে কারও মাথার উপরে ভেঙে পড়তে পারে।

যে পথ পেরিয়ে প্রায় চারশো পড়ুয়া, শিক্ষক এবং কয়েক হাজার স্থানীয় মানুষ যাতায়াত করেন, সেই রাস্তাটি কেন বিপদমুক্ত করছে না প্রশাসন— তা নিয়ে বিস্তর ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল সকলের মধ্যে। ক্ষোভের আরও কারণ ছিল গত বছর অগস্টে স্কুলের আবেদন করার পরে প্রশাসন দায় সেরেছিল শুধুমাত্র পথটি বিপজ্জনক ঘোষণা করেই। কিন্তু প্রতি মুহূর্তে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছিল বলে এ বারও বর্ষার আগে থেকেই ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয় স্কুল। এমন একটি ‘হেরিটেজ বিল্ডিং’টিকে সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলবে নাকি অন্য কোনও পথ নেওয়া হবে, সেটাই বুঝে উঠতে পারছিল না জেলা প্রশাসন। শেষমেশ মাঝামাঝি একটি পন্থা বের হয়।

দুবরাজপুরের বিডিও বনমালি রায় বলেন, ‘‘যেহেতু হেরিটেজ বিল্ডিং, তাই সম্পূর্ণ না ভেঙে শুধুমাত্র ভার কমিয়ে দেওয়া হল। আমাদের ইচ্ছে নতুন করে কংক্রিটের পিলার তুলে ফের ঢালাই করে দেওয়া। তাতে পুনরায় সুড়ঙ্গ‌ের উপরের অংশে ক্লাস করা যাবে। পাশাপাশি হেরিটেজ বিল্ডিংয়ের যে গঠন শৈলী, সেটিও অক্ষুণ্ণ থাকবে।’’ হেতমপুর পঞ্চায়েতের প্রধান বুদিবালা জানিয়েছেন, দাসসপ্তাহ দুয়েক আগেই ৫০ হাজার টাকার দরপত্র ডেকে সুরঙ্গপথের উপরের দু’টি ছাদ ভেঙে ফেলার বরাত দেওয়া হয়। সুড়ঙ্গ এখন বিপদমুক্ত।

তবে, সম্পূর্ণ বিপদমুক্ত হয়েছেন বলে মনে করছেন না স্থানীয় বাসিন্দা ও স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা বলছেন, ‘‘ছাদ ভাঙলেও স্কুলে আসার পথে ডান দিকের দেওয়ালটি ক্ষতবিক্ষত হয়ে রযেছে। সেখান থেকে এবং উপরের অংশ থেকে ইট খসে পড়া অসম্ভব কিছু নয়।’’ একই বক্তব্য স্কুলের প্রধান শিক্ষক তপনকুমার সাধু, সহকারি প্রধান শিক্ষক অচিন্ত্যকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়দেরও।

ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত যদিও দাবি করছে, আশঙ্কার কিছু নেই। তা ছাড়া সুড়ঙ্গের ছাদ ভেঙে অনেক কড়ি বর্গা মিলেছে। সেগুলি নিলাম করে বেশ কিছু টাকা পাওয়া সম্ভব। এ ছাড়া জেলা থেকে এ ব্যাপারে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। তা পাওয়া গেলেই দ্রুত কাজ হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE