Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পাতে এ বার ঘরেরই আম

ভরা জৈষ্ঠ্যে চাঁদিফাটা রোদ, তাপপ্রবাহ সমস্ত কিছুর পরেও হাতেগোনা ভাল যা কিছু থাকে, তার একটা হল আম। এ বছরে বাঁকুড়াবাসীকে রোদ, তাপ— সবই সইতে হচ্ছে। কিন্তু আমে স্বাদ নেই। বাজার ছেয়ে আছে পানসে চালানি আমে। তার দামও যেন পারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চড়ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ১৪:৩০
Share: Save:

ভরা জৈষ্ঠ্যে চাঁদিফাটা রোদ, তাপপ্রবাহ সমস্ত কিছুর পরেও হাতেগোনা ভাল যা কিছু থাকে, তার একটা হল আম। এ বছরে বাঁকুড়াবাসীকে রোদ, তাপ— সবই সইতে হচ্ছে। কিন্তু আমে স্বাদ নেই। বাজার ছেয়ে আছে পানসে চালানি আমে। তার দামও যেন পারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চড়ছে। কোথাও চল্লিশ টাকা কেজি তো কোথাও পঞ্চাশ টাকা। অবশেষে জেলাবাসীকে কিছুটা স্বস্তি দিতে আসরে হাজির হচ্ছে উদ্যানপালন দফতর।

সোমবার থেকে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনিক ভবন চত্বর ও তালড্যাংরা ফার্ম হাউসের সামনে আম বিক্রির স্টল চালু করতে চলেছে উদ্যানপালন দফতর। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার আম্রপালি, আলফানসো, সফদার পসন্দ, কোহিতুর, গুলাবখাসের মতো বেশ কিছু মিষ্টি জাতের আম মিলবে ওই স্টলগুলিতে। সমস্ত আমই উদ্যানপালন দফতরের তালড্যাংরার ফার্ম হাউসে চাষ করা হয়েছে। জেলার উদ্যানপালন দফতরের ফিল্ড অফিসার সঞ্জয় সেনগুপ্ত জানান, স্টলে আম্রপালি, মল্লিকা, ল্যাংড়া-র মতো বিভিন্ন প্রজাতির আম চল্লিশ টাকা কেজি দরে ও আলফানসো ষাট টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে। স্টল থেকে আমের পাশাপাশি জেলার সবেদা, পেয়ারা ও মুসাম্বিও মিলবে।

২০১৪ সালে রাজ্য আম মেলায় স্বাদের বিচারে মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়ার আমকে টপকে কদর পেয়েছিল বাঁকুড়ার রুক্ষ মাটির আলফানসো। ওই বছর দিল্লির জাতীয় আম মেলাতেও নজর কাড়ে বাঁকুড়ার আম। তখন থেকেই জেলার বাজারেও ব্যপক চাহিদা বাড়ে আমের।

উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মরসুমে তালড্যাংরা ফার্ম হাউসের ৩৫ বিঘা জমিতে কমবেশি ষাট টন আম ফলেছে। অন্য বছর ওই আম নিলামে ডাক করে ব্যবসায়ীদের বিক্রি করত দফতর। তবে এ বার সরাসরি ক্রেতাদের বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা উদ্যালন পালন দফতরের উপ-অধিকর্তা মিলনচন্দ্র বেসরা বলেন, “জেলার ক্রেতারা যাতে ন্যায্য দামে গাছ পাকা সুস্বাদু আম পান সেই কথা ভেবেই এ বার স্টল গড়ে আম বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।” রাজ্য এগ্রো ইন্ডাস্টিজ কর্পোরেশনের ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশিস বটব্যাল জানান, গত বছর জেলার আম দুবাই-এর বাজারে ভাল সাড়া ফেলেছিল। কিন্তু মিলনবাবুর কথায়, ‘‘এত দিন নিলাম করা হতো বলে বাঁকুড়ার বাজারেই তালড্যাংরা ফার্ম হাউসের আম বিশেষ পাওয়া যেত না। এ বার স্টল থেকে বাঁকুড়াবাসী জেলার আম খুচরো দরে কিনতে পারবেন।’’

শুভাশিসবাবু জানান, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে জেলায় এই বছর প্রায় ৫০ হাজার টন আমের ফলন হয়েছে, যা গতবারের তুলনায় অনেকটাই বেশি। আম চাষে লাভ দেখে জেলার অনেকেই ব্যবসায়িক ভাবে আম চাষে উদ্যোগী হয়েছেন। এ বার ইতালির ব্যবসায়ীরাও বাঁকুড়ার আম নিয়ে যেতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। উদ্যানপালন দফতরের মধ্যস্থতায় জেলার আম চাষিদের সঙ্গে ইতালির ব্যবসায়ীদের যোগাযোগ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, “বাঁকুড়ায় সুস্বাদু আম চাষ যে সম্ভব, সেটা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। বিদেশে চড়াদামে আম রফতানি করা হচ্ছে।” তাঁর মতে, আগামী কয়েক বছরে জেলায় আম চাষ আরও কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।

সেই আমের স্বাদ যাতে তাঁরা চাখতে পারেন সেই দাবি বাঁকুড়ার বাসিন্দাদেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mango Horticulture Department Mango Stall
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE