আশায়: বেলেডির পরিত্যক্ত খনিতে জমা এই জল চাষের কাজে ব্যবহার করা যাবে কবে, তারই অপেক্ষায় এলাকার চাষিরা। নিজস্ব চিত্র
থেকেও নেই! পরিত্যক্ত খনিতে জমা জলের দিকে চাতকের মতো তাকিয়ে থাকেন চাষিরা। সেই জল সেচের কাজে ব্যবহার করার জো নেই। বরাবাজারের বেলডি এলাকার চাষিদের দাবি, ওই জল চাষের কাজে ব্যবহারের অনুমতি মিললে প্রখর গরমে ফসল বাঁচানোর চিন্তা অনেকটাই কমে যেত।
বরাবাজারের বেলডি গ্রামে মাটির নিচে ফসফেট মিলত। গত কয়েক দশক ধরে ফসফেট উত্তোলনের পরে খনিগুলি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। প্রায় সাত-আট বছর ধরে ওই পরিত্যক্ত খনিগুলিতে বৃষ্টির জল জমেছে। এমনিতেই জলের সঙ্কট রয়েছে। পানীয় জল সংগ্রহ করতে হয় দূর থেকে। এলাকার চাষিদের অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে বেলডির পরিত্যক্ত খনির জল চাষের কাজে ব্যবহারের জন্য পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত সমিতি, এমনকী জেলা স্তরে আবেদন জানানো হলেও কোনও কাজ হয়নি।
ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা কুতুবুদ্দিন আনসারি, নুতনডি গ্রামের গোপাল মাহাতো, অনিমেষ মাহাতোরা বলেন, ‘‘পরিত্যক্ত খনি প্রায় তিনশো বিঘা এলাকা জুড়ে রয়েছে। জলের গভীরতা অনেকটাই বেশি বলে এক সময়ে সাবধান করে বোর্ড লাগানো ছিল। ওই জল চাষের কাজে লাগানো গেলে ভবানীপুর, বেলডি, বোধাডি এবং নুতনডি গ্রামের চাষিরা সরাসরি উপকৃত হতেন। পাশাপাশি আরো কয়েকটি গ্রামের চাষিরা আংশিকভাবে উপকৃত হতেন।’’
বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি প্রতুল মাহাতো বলেন, ‘‘বাম আমলে ওই জল কাজে লাগানোর কোন উদ্যোগ হয়নি। আরএলআই প্রকল্পের মাধ্যমে ওই জল সেচের কাজে লাগানোর মতো আর্থিক ক্ষমতা পঞ্চায়েত সমিতির নেই। তাই আমরা জেলা পরিষদে আবেদন জানিয়েছিলাম। জেলা পরিষদ থেকে ওই প্রকল্পে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা মঞ্জুর হয়েছে। শুনেছি মিনারেল ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশনের আপত্তিতে ওই প্রকল্প ঝুলে রয়েছে।’’
পুরুলিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) প্রবালকান্তি মাইতি বলেন, ‘‘বেলডির পরিত্যক্ত খনির জল চাষের কাজে ব্যবহারের আবেদন নিয়ে কয়েকমাস আগে মিনারেল ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশনের সঙ্গে চিঠি চালাচালি হয়েছিল । এখন কী অবস্থায় ব্যাপারটা রয়েছে সেটা ওই কর্পোরেশনের কর্তারাই বলতে পারবেন।’’
ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনারেল ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশনের পুরুলিয়ার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার কালীচরণ বাগদি প্রাথমিক ভাবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি। পরে তিনি বলেন, ‘‘ওই জল চাষের কাজে ব্যবহার হলে আমাদের আপত্তি নেই।’’ মিনারেল ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পাশের জমিতে ফসফেটের খোঁজে আবার খনন হতেই পারে। ওই জল তুলে নিলে আমাদেরই সুবিধা হবে।’’
তাহলে প্রকল্প রূপায়নে বাধাটা কোথায়?
পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো বলেন, ‘‘ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে বেলডির জমা জল চোখে পড়েছিল। চাষের কাজে জল ব্যবহার করতে মিনারেল ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশনের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রকল্প রূপায়নের চেষ্টা চলছে।’’ তবে কাজে বিলম্বের জন্য সরকারি আধিকারিকদের একাংশের গড়িমসিকেই দায়ী করেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy