Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চোখের জলে বৃষ্টি হোমের পথে

প্রায় বছর চারেক আগে, হাসপাতালের ডাস্টবিন থেকে একটি শিশুকন্যাকে উদ্ধার করেছিলেন পঞ্চাশোর্ধ্ব শান্তাদেবী।

 স্নেহ: বৃষ্টির সঙ্গে শান্তাদেবী। মহকুমা হাসপাতালে। বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

স্নেহ: বৃষ্টির সঙ্গে শান্তাদেবী। মহকুমা হাসপাতালে। বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৭ ০১:২৬
Share: Save:

প্রায় বছর চারেক আগে, হাসপাতালের ডাস্টবিন থেকে একটি শিশুকন্যাকে উদ্ধার করেছিলেন পঞ্চাশোর্ধ্ব শান্তাদেবী। হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী হওয়ার সুবাদে, পরিচর্যার অভাব ছিল না দিন দু’য়েকের ওই শিশুকন্যার। অভাব-অনটন এবং আর্থিক দুর্দশার মধ্যেও, সন্তান স্নেহে এত দিন তাকে আগলে রেখেছিলেন। সরকারি নিয়ম নীতির বেড়াজালে আটকে, চোখের জলে সেই শিশুকে বুধবার তুলে দিলেন চাইল্ড লাইনের হাতে। হাসপাতালের আবাসন থেকে বছর চারেকের ‘বৃষ্টি’ পেল সিউড়ির স্পেসালাইজেসন অ্যাডপসন এজেন্সির কাছে নতুন ঠিকানা।

চাইল্ড লাইন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সাফাই কর্মসূচি চলছিল বোলপুরের ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেই সময়ে বছর চারেকের ওই শিশুকন্যাকে শান্তা দেবীর কোলে দেখে সন্দেহ হয় সাফাই কর্মসূচিতে থাকা চাইল্ড লাইন ও হোয়াইট রিবন অ্যালায়েন্স সংস্থার কর্মীদের। খোঁজ খবর নিয়ে ঘটনার কথা জানতে পারেন। জেলা চাইল্ড লাইনের জেলা কাউন্সিলর মাধব রঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘বিষয়টি জানতে পেরে সরকারি নিয়ম নীতির কথা শান্তা দেবীকে বলা হয়। ওই কর্মসূচিতে থাকা চাইল্ড লাইন জেলা কো-অডিনেটর দেবাশিস ঘোষের নজরেও আনা হয়েছে। নিয়ম নীতি মেনে বৃষ্টিকে উদ্ধার করার কথা বোলপুর থানায় জানানো হয়েছে।’’

দেবাশিস বাবু বলেন, ‘‘উদ্ধার হওয়া শিশু কন্যাকে নিয়ম মেনে এজেন্সির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’’ বৃষ্টিকে চোখের জলে বিদায় দিয়ে অস্থায়ী কর্মী শান্তা মির্ধা বলেন, ‘‘মন না মানলেও নিয়ম তো মানতেই হবে।’’

তাঁর স্বামী মন্টুবাবু বলেন, ‘‘আমাদের বয়স হচ্ছে। নিয়ম নীতির কথা জানাও ছিল না। কষ্ট তো হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু মেয়ের ভবিষ্যৎ এবং নিরাপত্তার কথা ভেবে, ওদের হাতে তুলে দিয়েছি। নইলে আমাদের মৃত্যুর পরে মেয়ে যে অনাথ হয়ে যেত!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Girl Dustbin Home
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE