—প্রতীকী চিত্র
দু’ দফায় শিবির করে রক্ত সংগ্রহের যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে প্রশাসন তা রাখার জায়গা নেই পুরুলিয়ার একমাত্র ব্লাড ব্যাঙ্কে। ফলে জেলার রক্ত সংকট দূর করতে সংগ্রহ করা রক্তের বেশ কিছুটা যাবে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অন্য জেলার মতো পুরুলিয়াতেও দু’ দফায় রক্তদান শিবির করছে পুলিশ প্রশাসন। শনিবার ২০ মে থেকে ২৬ মে জেলার একুশটি থানায় রক্তদান শিবির হচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যায় শুধু আদ্রা থানার উদ্যোগে জেলা একটিই শিবির হয়েছে। সেই শিবিরের রক্ত পুরুলিয়ার ব্লাড ব্যাঙ্কে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, জেলার একুশটি থানার প্রতিটিতে রক্তদান শিবিরে পঞ্চাশ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাত দিনে সেখানেই সংগ্রহ হতে পারে প্রায় এগারোশো ইউনিট রক্ত। পরের ধাপে ২৭ মে থেকে ৭ জুন পর্যন্ত রক্তদান শিবির হবে ব্লক ও পুরসভাগুলিতে। জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় জানান, দু’ দফার শিবির থেকে আড়াই হাজার ইউনিট রক্ত সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
এ দিকে, পুরুলিয়ার ব্লাড ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে সাতশো ইউনিট রক্ত রাখার মতো পরিকাঠামো রয়েছে। অর্থাৎ, শুধু থানাগুলিতে শিবির করে যতটা রক্ত সংগ্রহ হতে পারে, তার প্রায় চারশো ইউনিট রক্ত বাঁকুড়া মেডিক্যালে পাঠানোর দরকার হবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগেই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের গোচরে এই বিষয়টি আনা হয়েছিল। সেখান থেকে নির্দেশ এসেছে বাড়তি রক্ত বাঁকুড়া মেডিক্যালে পাঠানোর জন্য।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘জেলার ব্লাড ব্যাঙ্কে যতটা রক্ত রাখা সম্ভব সেটা রেখে বাকিটা বাঁকুড়া মেডিক্যালে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।”
দ্বিতীয় দফায় প্রায় পনেরোশো ইউনিট রক্ত সংগৃহ হলে সংরক্ষণের সমস্যা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীদের একাংশ। তাঁরা জানান, পুরুলিয়ায় মাসে গড়ে সাতশো ইউনিট রক্ত দরকার হয়। সংগ্রহ করার পরে পঁয়ত্রিশ দিন রক্ত সংরক্ষণ করে রাখা সম্ভব। সেই হিসেবে পুলিশের শিবির থেকে পাওয়া রক্ত শেষ হওয়ার আগেই ব্লক ও পুরসভাগুলির শিবির থেকে রক্ত ব্লাড ব্যাঙ্কে আসা শুরু হয়ে যাবে। ফলে ওই রক্তেরও বেশির ভাগ পাঠিয়ে দিতে হবে বাঁকুড়ায়।
জেলায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন এমন অনেকের দাবি, বাঁকুড়া মেডিক্যালে রক্ত চলে যাওয়ার পরে সেখান থেকে ফের প্রয়োজনের সময়ে কতটা রক্ত জেলায় নিয়ে আসা যাবে তা নিয়েও সন্দিহান তাঁরা। তাঁদের দাবি, থানায় রক্তদান শিবিরের অন্তত কুড়ি-পঁচিশ দিন পরে ব্লক ও পুরসভায় শিবির করলে এই পরিস্থিতি কিছুটা এড়ানো সম্ভব হতো।
অন্যদিকে, ব্লাড ব্যাঙ্কে টেকনিশিয়ান ও মেডিক্যাল অফিসারের অভাব রক্তদান শিবিরগুলিতে প্রভাব ফেলবে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ব্লাডব্যাঙ্কে টেকনিশিয়ান আছেন মাত্র ছ’জন। মেডিক্যাল অফিসার দু’জন।
পুলিশের রক্তদান শিবিরই এক দিনে তিনটে থানায় হবে। সে ক্ষেত্রে, দু’জন মেডিক্যাল অফিসার কী ভাবে সামাল দেবেন তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
তবে শিবির পরিচালনা করতে কোনও সমস্যা হবে না বলে দাবি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্তের। তিনি বলেন, ‘‘শিবির পরিচালনার জন্য আমাদের টিম তৈরি হয়ে রয়েছে। কোথাও কোনও সমস্যা হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy