শিক্ষকের গায়ে হাত তোলায় দশম শ্রেণির এক পড়ুয়াকে ২০ দিনের জন্য স্কুল থেকে সাসপেন্ড করল বিদ্যালয় পরিচালন সমিতি। সোমবার এই সিদ্ধান্ত নেয় দুবরাজপুরের পারুলিয়া পঞ্চায়েতের করমকাল এসএন বিদ্যানিকেতন।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার উচ্চমাধ্যমিক ওই স্কুলের দশম শ্রেণিতে ক্লাস নিচ্ছিলেন ভৌতবিজ্ঞানের এক শিক্ষক। কিন্তু, পড়ায় মন না দিয়ে এক ছাত্র নানা ভাবে সমস্যা তৈরি করছিল। তাতে পড়ানোয় সমস্যা হচ্ছিল। শিক্ষক ওই ছাত্রকে সাবধান করলেও ছাত্র সে কথায় কান দেয়নি বলে স্কুল পরিচালন সমিতির দাবি। এরপরই ধৈর্য্য হারিয়ে বেপরোয়া ওই ছাত্রের গালে চড় কষিয়ে দেন শিক্ষক। অভিযোগ, চড় খেয়ে নিজেকে শুধরে নেওয়া দূরে থাক। শিক্ষককেই উল্টে আক্রমণ করে বসে ওই ছাত্র। মারধর করে শিক্ষকের জামা ছিঁড়ে, গালে আঁচড়েও দেয়।
ঘটনার আকষ্মিকতা কাটিয়ে বাকি পড়ুয়ারা শিক্ষককে বাঁচায়। এরপরেই অপমানিত ওই শিক্ষক গোটা বিষয়টি প্রধান শিক্ষক সুকান্ত ভাট্টাচার্যের কাছে লিখিত ভাবে জানান।
প্রধান শিক্ষক সোমবার পরিচালন সমিতির বৈঠক ডাকেন। ডাকা হয় অভিযুক্ত ছাত্রের বাবাকেও। অবাধ্য ছাত্রকে কড়া শিক্ষা দেওয়া উচিত মনে হলেও, সামনের বার মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকায় তার শাস্তি শিথিল করেন শিক্ষকেরা। শেষ পর্যন্ত ২০ দিনের শাস্তি নির্দিষ্ট করে পরিচালন সমিতি। সঙ্গে নিজের কৃতকর্মের জন্য ওই ছাত্রকে শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত ক্ষমা চাইতেও বলা হয়।
পরিচালন সমিতির সভাপতি স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘যে অন্যায় ওই ছাত্র করেছে, এর থেকেও বড় শাস্তি প্রাপ্য ছিল। শুধুমাত্র দশম শ্রেণির পরীক্ষা ও ছাত্রের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কিছুটা মানবিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’’ শাসন করতে গিয়ে ছাত্রের হাতে শিক্ষকের হেনস্থার মতো ঘটনা ঘটলে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলেই মনে করেন জেলা স্কুল পরিদর্শক রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘‘বিদ্যালয়ের স্কুলের তরফে আমি শুনিনি। তবে, এমন ক্ষেত্রে পরিচালন সমিতি এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতেই পারে।’’ শিক্ষকদের দাবি, আগেও ক্লাসে নানা ভাবে উৎপাত করেছে অভিযুক্ত ছাত্র। ছেলের এ হেন আচরণে লজ্জিত বাবা। তিনি বলেছেন, ‘‘কাজটা অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে। ছেলেকে বোঝাব।’’
তবে, অভিভাবকদের একাংশ এমন ঘটনার জন্য স্কুলের শিক্ষক ও পরিচালন সমিতিকেই দায়ী করছেন। তাঁদের বক্তব্য, নিয়ম করে বছরে দু’বার অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক করার কথা। সেখান থেকেই এক জন অভিভাবক জানতে পারেন, তাঁর সন্তান স্কুল কেমন পড়াশোনা করে, কোনও দুষ্টুমি করে কিনা। কিন্তু স্কুলে বহু দিন এমন কোনও বৈঠক হয়নি। অভিভাবকদের অনেকেই বলছেন, ‘‘ওই ছাত্র অতীতে যদি ক্লাসে উৎপাত করে থাকে, তা হলে আগেই অভিভাককে ডেকে তা জানানো উচিত ছিল। তা হলে হয়তো এই ঘটনা এড়ানো যেত।’’ পরিচালন সমিতির সভাপতি বলছেন, ‘‘নানা কারণে অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক হয়ে উঠেনি। এ বার নিশ্চয়ই সেটা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy