সরব: কেন্দা থানার বিজয়ডি হাইস্কুলে। নিজস্ব চিত্র
দরজার সামনে বসে পড়ে শিক্ষকদের স্কুলে ঢোকা আটকে দিল পড়ুয়ারা। সোমবার সকালে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগে কেন্দা থানার রাজনওয়াগড় দেবীপ্রসাদ মেমোরিয়াল হাইস্কুলের দরজার সামনে কয়েকশো পড়ুয়া বসে পড়ে অবরোধ শুরু করে। পরে ব্লক প্রশাসন ও পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের হস্তক্ষেপে বেলা ৩টে নাগাদ অবরোধ ওঠে।
কয়েকদিন আগে কেন্দা থানারই বিজয়ডি হাইস্কুলে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের একাংশকে দরজায় তালা দিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত আটকে দেওয়া হয়েছিল। এ দিন রাজনওয়াগড় স্কুলে দরজা আটকানো হতে পারে বলে আগাম খবর পেয়ে তাই পুলিশ কোনও ঝুঁকি না নিয়ে সকালেই সেখানে পৌঁছে যায়। যদিও তার আগেই পড়ুয়ারা স্কুলের দরজার সামনে বসে পড়েছিল।
পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, ১৫ অগস্ট স্কুলে প্রধান-শিক্ষক ও এক জন সহকারী শিক্ষক মাত্র স্কুলে এসেছিলেন। কোনও রকমে দায়সারা ভাবে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন করা হয়। এ ছাড়া স্কুলে অনিয়মিত ক্লাস, মিড-ডে মিলের রান্না ইত্যাদি নিয়েও তাদের অভিযোগ রয়েছে।
বেলা ১০টা নাগাদ বিডিও (পুঞ্চা) অজয় সেনগুপ্ত সেখানে হাজির হন। কিন্তু তাঁর অনুরোধেও পড়ুয়ারা সরেনি। এসডিপিও (মানবাজার) আফজল আবরার, সিআই সুবীর কর্মকার ছাত্রদের বোঝান, স্কুলে বসে আলোচনা না করলে সমস্যা মিটবে কী করে? শেষে বেলা ১১টা নাগাদ পড়ুয়ারা স্কুলের ভিতরে ঢোকে। তারা শুধু পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে নেয়। স্কুলের কাউকে আলোচনায় ডাকেনি।
পড়ুয়ারা অভিযোগ করে, স্কুলে প্রায় ১৮০০ ছাত্রছাত্রী রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় শৌচাগার নেই। মিড-ডে মিলের রান্না মুখে দেওয়া যায় না। শিক্ষকেরা স্টাফ রুমে গল্প করে সময় কাটান। দেরিতে ক্লাসে ঢুকে, ঘণ্টা পরার আগেই বেরিয়ে যান। বিজ্ঞান বিভাগের প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস হয় না বলেও তাদের অভিযোগ। প্রধান শিক্ষককে বহুবার জানিয়েও লাভ হয়নি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্বতীচরণ মাহাতো বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের অভিযোগ পেয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করব ভেবেছিলাম। কিন্তু এত শীঘ্রই স্কুলে আন্দোলন করে বিষয়টিকে তারা এমন পর্যায়ে নিয়ে যাবে বলে ভাবিনি। সম্ভবত এতে বাইরের কারও মদত রয়েছে।’’ তাঁর দাবি, পড়ুয়াদের সব অভিযোগও ঠিক নয়। স্কুলে শৌচালয় রয়েছে। কখনও সখনও বিদ্যুৎ না থাকলে পাম্পে জল ওঠে না, পাখা ঘোরে না। মিড-ডে মিলের রান্নার মানও ভালই। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলে ৩৬ জন শিক্ষকের মধ্যে কয়েকজন প্রশিক্ষণ এবং অসুস্থতার কারণে ছুটিতে রয়েছেন। নিয়মিত ক্লাস নেওয়ার জন্যে শিক্ষকদের অনুরোধ জানাব। যদি কেউ অপারগ হন, তাহলে বিকল্প শিক্ষক দিয়ে ক্লাস করানো হবে।’’
তাঁর আক্ষেপ, পড়ুয়ারা আগে ক্ষোভের কথা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু এ দিন যা ঘটল, তাতে স্কুলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।
যদিও পড়ুয়াদের দাবি, ইতিপূর্বে একাধিক অনিয়ম নিয়ে প্রধান শিক্ষককে জানানো হলেও তিনি গুরুত্ব দেননি। তাই বাধ্য হয়েই তারা স্কুলের দরজা আটকে দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy